নিউজ ডেস্ক: প্রিয় পাঠক দিনের শেষে বঙ্গ-ভারতী নিউজের তরফ থেকে আপনাদের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে দিনের গুরুত্বপূর্ণ সব খবর। রাজ্য থেকে দেশ, কি ঘটলো ‘আজ সারাদিন’? দেখে নিন একনজরে এবং জেনে নিন বিস্তারিতভাবে।
মোহনবাগান গ্যালারির টিকিটের দাম বাড়ালো ইস্টবেঙ্গল, কেন এমন বৈষম্য প্রশ্ন বাগান সমর্থকদের
চলতি আইএসএলে ‘প্লে অফ’ খেলার স্বপ্ন শেষ ইস্টবেঙ্গলের। ছন্দে না থাকা গোয়ার কাছেও পরাজিত হতে হয় কার্লেস কুয়াদ্রাতের ছেলেদের। ১-০ গোলে ম্যাচ নিজেদের ঝুলিতে তোলে গোয়া। তবুও আসন্ন ডার্বি ম্যাচের প্রতি আগ্রহ বিন্দুমাত্র কমেনি লাল-হলুদ ও সবুজ-মেরুন সমর্থকদের। সকলেরই উন্মাদনা এখনো তুঙ্গে রয়েছে।
যদিও ম্যাচ আয়োজিত হওয়া নিয়ে প্রথম দিকে সমস্যা দেখা দেয় বাংলার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের ব্রিগেডের জন্য। তবে শেষ পর্যন্ত ম্যাচ ১০ তারিখে হবে বলেই ঠিক করা হয়েছে তবে নির্ধারিত সময় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার জায়গায় সাড়ে আটটা নাগাদ হবে।
তবে তারিখ ও সময়ের পর, এবার ম্যাচের টিকিট নিয়ে দেখা গেল সমস্যা। মোহনবাগান গ্যালারির টিকিটের দাম বাড়ানো হলো আয়োজক ইস্টবেঙ্গলের তরফ থেকে এবং এরপরই প্রশ্ন ওঠে যে কেন এমন বৈষম্য। এক্ষেত্রে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছেন যে সেদিন যাতে বাগানের তুলনায় ইস্টের সমর্থকদের ভিড় বেশি হয় সে কারণেই এমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আবার অনেকে এমনও মনে করছেন যে যাতে কম সংখ্যক মোহনবাগান সমর্থক ম্যাচ দেখতে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে উপস্থিত হয় সেই কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে লাল-হলুদের তরফ থেকে।
উল্লেখ্য, যেহেতু ম্যাচ শেষ হতে অনেক রাত হবে এবং দুই দলের সমর্থকদের বাড়ি ফেরার কথা মাথায় রেখে আয়োজক ইস্টবেঙ্গলের তরফ থেকে রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তী এবং কলকাতা মেট্রো কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে যাতে সেদিন অতিরিক্ত বাস এবং ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো ট্রেন চলে।
বিজেপিতে যোগ দিয়েই তৃণমূলকে সরানোর চ্যালেঞ্জ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের
যেমন কথা তেমন কাজ! বিচারপতি পদ থেকে ইস্তফা দিয়েই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার, অর্থাৎ ৭ই মার্চ, তিনি সরকারিভাবে যোগ দিলেন গেরুয়া শিবিরে। তবে নেমেই প্রাক্তন বিচারপতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসকে। সাংবাদিকদের সরাসরি জানিয়ে দিলেন যে তাঁর এবং গোটা দলের প্রধান লক্ষ্য বাংলা থেকে তৃণমূলকে বিদায় দেওয়া।
এদিন বেলা ১২টার কিছু পরে বাড়ি থেকে বেরোন অভিজিৎ। সেই মুহূর্তে তিনি উপস্থিত সকল সাংবাদিকদের জানান, “আমার আজ খুব ভালো লাগছে কারণ আজ আমি বিজেপিতে যোগ দেবো। একটা সর্বভারতীয় দলে আমি যোগ দিতে যাচ্ছি এবং আমাকে যা দায়িত্ব দেওয়া হবে, আমি সব পালন করবো। বিজেপি নেতারা আমার বাড়িতে এসেছেন।” দলের সল্টলেকের অফিসে পৌঁছতেই, সেখানে উপস্থিত সকল কর্মী-সমর্থকরা শঙ্খধ্বনি এবং পুষ্প বৃষ্টির মাধ্যমে তাঁকে স্বাগত করেন। পাশাপাশি ওঠে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগানও।
দলের পতাকা তোলার পর তিনি বলেন, “আমি এক সর্বভারতীয় দলে যোগ দিলাম যার মাথায় রয়েছে নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহের মতো ব্যক্তিরা। আজ বিশেষ কিছু বলার নেই তবে এটাই বলবো যে আমি দলের একজন একনিষ্ঠ সৈনিক হয়ে থাকতে চাই এবং আমাদের প্রধান লক্ষ্য বাংলার এই দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারকে বিদায় দেওয়া এবং দেখা যাতে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এরা ক্ষমতায় না আসে। আমার বিজেপিতে যোগ দেওয়ার মূল উদ্দেশ্য হলো তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইতে নামা। আমাকে যা দায়িত্ব দেওয়া হবে আমি তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করবো।”
সন্দেশখালি যাওয়ার পথে বিজেপি মহিলা মোর্চার সঙ্গে ধস্তাধস্তি পুলিশের
আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রাক্কালে বিজেপি মহিলা মোর্চার সঙ্গে ধস্তাধস্তি পুলিশের। সন্দেশখালি যাওয়ার পথে বাধার মুখোমুখি হতে হয় প্রতিনিধিধের। নিউটাউনে তাদের আটকে দেয় পুলিশ। বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে দুই পক্ষ এবং শেষে রাস্তায় বসে প্রতিবাদ দেখাতে শুরু করেন অগ্নিমিত্রা পল, ভারতী ঘোষ, লকেট চট্টোপাধ্যায়রা। তাদের রীতিমতো টেনেহিঁচড়ে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয় বলে অভিযোগ। যদিও এটি প্রথম বার নয় এর আগেও বহুবার ভারতীয় জনতা পার্টির মহিলা মোর্চা ও বাকি কর্মী-সমর্থকদের পুলিশি বাধার মুখোমুখি হতে হয়েছে।
পুলিশি বাধা নিয়ে সাংবাদিকদের সামনে মুখ খোলেন সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “সিঙ্গুর থেকে শুরু হয়েছিল তৃণমূল। এবার সন্দেশখালিতেই শেষ হবে ওরা। কি অবস্থা যে মহিলা পুলিশ বলছে নাটক করছেন? ওরা আমাদের মারছে, ঠেলছে। আপনারা দেখে নেবেন এদের উর্দি খুলে নেবে মহিলারা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহিলাদের সম্মান দিতে জানেন না। পুলিশ তো ১৪৪ ধারা জারি করার অর্ডারও দেখাতে পারেনি।”
অন্যদিকে, এমন ধস্তাধস্তি ও উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খোলেন অগ্নিমিত্রা পলও। তাঁকে বলতে শোনা যায়, “আমি জানতে চাই যে ঠিক কি কারণে আমাদের বাধা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের অর্ডার কপি দেখান। যদি সেটা আপনারা না দেখাতে পারেন তাহলে আমাদের বাধা দেওয়ার কোন অধিকার আপনাদের নেই। তাঁকে আটক করা হলে তিনি বলেন, “আপনাদের সঙ্গে তো কোন কথাই বলা যায়না দেখছি। কিছু বলতে গেলেই তো আপনারা আমাদের মহিলা মোর্চার প্রতিনিধিদের গাড়িতে তুলে নেন।”
অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে চ্যালেঞ্জ থেকে শুরু করে সন্দেশখালি কান্ড, বিরোধী দলগুলিকে কি জবাব দিলেন মমতা?
আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রাক্কালে বিজেপিতে সরকারিভাবে যোগ দেন প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং নেমেই সরাসরি তৃণমূলকে বাংলায় ক্ষমতা থেকে সরানোর চ্যালেঞ্জ দিয়ে বসেন তিনি। কিন্তু বৃহস্পতিবার, অর্থাৎ ৭ই মার্চ, নারী দিবস উপলক্ষে তৃণমূলের র্যালি ও সমাবেশে প্রাক্তন বিচারপতিকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী, তথা তৃণমূল সুপ্রিমো, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও তিনি সরাসরি নাম নেননি তাঁর, তবে মুখ্যমন্ত্রীর আক্রমণ শুনেই বোঝা যাচ্ছিল যে এই বার্তা অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যেই বলা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিচারপতির চেয়ারে বসে বিজেপি বাবু বিজেপিতে যোগদান করার কথা বলছেন। আপনাদের মনে হয় এদের থেকে আপনি বিচার পাবেন? আমরা অনেক আগে থেকেই বুঝতে পারতাম যে উনি বিজেপির ইশারায় চলছেন। তা না হলে কেউ এরম রায় দেয়? উনি রোজই অভিষেকের নাম করে গালি দিতেন। তবে একদিকে আমরা খুশি যে ওনার আসল মুখোশটা সকলের সামনে খুলে গিয়েছে। সুতরাং আপনি তৈরি থাকুন আপনি যেখানেই দাঁড়াবেন আমি ছাত্র নিয়ে যাবো। আপনি ওদের চাকরি খেয়েছেন। এবার ওরাই আপনার মোকাবিলা করবে। কাল থেকে জনগণ আপনার রায় দেবে।”
অন্যদিকে সন্দেশখালি নিয়েও এদিন মুখ খোলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সন্দেশখালি নিয়ে অনেকে অনেক ভুয়ো সংবাদ ছড়িয়েছে চারিদিকে। যদি কোথাও কোন অন্যায় হয়ে থাকে, আমাদের সঙ্গে সঙ্গে জানালেই আমরা পদক্ষেপ নি। নিজের দলের নেতা-কর্মীদেরও গ্রেপ্তার করাতে আমরা ভাবিনা। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি যে নারীরা সবচেয়ে বেশি সুরক্ষিত বাংলাতেই। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে কোনো বিচারই হয়না। যখন মনিপুর জ্বলছিল, হাত্রাস জ্বলছিল, তখন বিজেপি নেতারা কোথায় ছিলেন?” এদিন সন্দেশখালি থেকেও বেশ কয়েকজন মহিলা এই র্যালিতে অংশগ্রহণ করেছেন।
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে ইভিএম নিয়েও জালিয়াতি হতে পারে, সেই কথাও জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আপনাদের সকলকে বলবো যে ইভিএম মেশিনটা ভালো করে দেখে নেবেন। ওদের পরিকল্পনা অনুযায়ী নাকি ২০টা জায়গায় চিপ লাগাচ্ছে। হয়তো যারা এজেন্ট হবে তাদের কাউকে কাউকে টাকা দিয়ে কিনেও নেবে। তাই আপনাদের এটাই বলবো যে আপনারা সবকিছু ভালো করে নজরে রাখবেন।”
কুলদীপ ম্যাজিকে ঘায়েল স্টোকস বাহিনী! কি বললেন তিনি প্রথমদিনের খেলার শেষে
ভারত বনাম ইংল্যান্ড পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজের পঞ্চম টেস্টের প্রথমদিনেই ব্যাকফুটে ইংল্যান্ড। একেবারেই সফল হয়নি তাদের বড় রানের পরিকল্পনা। ২১৮ রানে প্যাভিলিয়ন এ ফিরে যায় গোটা দল। যদিও শুরুতে পার্টনারশিপ ভালই হয়, কিন্তু মাঝে কুলদীপ ম্যাজিক সবকিছু তছনছ করে দেয় বেন স্টোকসদের। তিনি একাই নেন পাঁচটি উইকেট। যদিও এদিন পুরো দিনটাই ছিল স্পিনারদের জন্য। অশ্বিনও নেন ৪টি উইকেট এবং একটি উইকেট নিজের ঝুলিতে তোলেন রবীন্দ্র জাদেজা। ব্যাট হাতেও দাপট দেখান ভারতীয় ব্যাটাররা। নিজের দুর্দান্ত ফর্ম অব্যাহত রেখেছেন যসস্বী জয়সওয়াল। ফের অর্ধশতরান হাকান তিনি। অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও করেছেন অর্ধশতরান। দিনের শেষে ভারতের স্কোর এক উইকেটে ১৩৫।
এদিন খেলা শেষে এক সাক্ষাৎকারে মুখোমুখি হয়ে কুলদীপ জানালেন ম্যাচ নিয়ে কিছু কথা। তিনি বলেন, “আমি শুধু খেলাটা আনন্দ করে খেলছি। সত্যি কথা বলতে গেলে ২০২১ সালের সার্জারির পর আমি কঠোর পরিশ্রম করেছি এবং সেটার ফলই আজ আমি হাতেনাতে পাচ্ছি। আজ আমার জ্যাক ক্রলির উইকেটটা খুব পছন্দ হয়েছে। ও গোটা সিরিজ জুড়ে ভালো ব্যাটিং করেছে। এছাড়া ও স্পিন ভালই খেলে।”
এরপরই ওলি পোপের উইকেট প্রসঙ্গে নিজের বক্তব্য রাখেন কুলদীপ। তিনি বলেন, “ও অনেক আগে থেকেই এগিয়ে এসে খেলছিল। আমাকে ধ্রুব আর সারফারাজ দুজনেই একই কথা বলেছিল যে ও আগে এগিয়ে খেলতে আসবে। এছাড়া অশ্বিন ভাইও আমাকে অনেক বুদ্ধি দিচ্ছিল।”
উল্লেখ্য, এদিন নিজের শততম টেস্ট ম্যাচ খেলতে নামেন রবিচ্ন্দ্রন অশ্বিন। তাঁর পরিবারের উপস্থিতিতেই তাঁকে বিশেষ সম্মান দেওয়া হয় দলের তরফ থেকে। এছাড়াও ৩৭ বছর আগে অর্থাৎ ১৯৮৭ সালের, এই তারিখে টেস্ট ক্রিকেটে নিজের দশ হাজার রানের গন্ডি ছোঁয়ার জন্য বিসিসিআইয়ের তরফ থেকে সুনীল গাভাস্কারকে দিয়ে কাটানো হয় কেক। সবমিলিয়ে, আজকের দিনটি ভারতীয় ক্রিকেটের কাছে ছিল সত্যিই স্মরণীয়।
‘আজ সারাদিন’ আজ এই পর্যন্তই। আগামীকাল আমরা ফের আপনাদের কাছে ফিরে আসবো দিনের সব নজরকাড়া খবর নিয়ে। ধন্যবাদ। শুভরাত্রি।