তৃণমূলের ব্রিগেড নাকি বিজেপির সভা? কি ঘটলো আজ সারাদিন?
নিউজ ডেস্ক: প্রিয় পাঠক দিনের শেষে বঙ্গ-ভারতী নিউজের তরফ থেকে আপনাদের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে দিনের গুরুত্বপূর্ণ সব খবর। রাজ্য থেকে দেশ, কি ঘটলো ‘আজ সারাদিন’? দেখে নিন একনজরে এবং জেনে নিন বিস্তারিতভাবে।
বিশ্বের তাবড় তাবড় দলকে ছাপিয়ে সবার আগে রোহিত শর্মা ব্রিগেড
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এখন একটি বড় নাম টিম ইন্ডিয়া। গতবছর ওডিআই বিশ্বকাপ না জিতলেও, তারপর একের পর এক সিরিজে নিজেদের দাপট অব্যাহত রেখেছে রোহিত ব্রিগেড। এখানেই শেষ নয়, যেখানেই পা ফেলছে সেখানেই বেরোচ্ছে সোনা। অর্থাৎ দেশের মাটি হোক কি বিদেশের মাটি, সবেতেই জিতে চলেছে তারা। তার উপর, ইংল্যান্ডের মতো এক বড় মাপের দলকে টেস্ট সিরিজে পরাজিত করে গোটা দলেরই এখন মনোবল তুঙ্গে পৌঁছে গেছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এটাই যে এই সিরিজে খেলেনি একাধিক তারকা তবুও এক যুব দল নিয়ে সিরিজ নিজেদের ঝুলিতে তুলে নিতে সফল হয় তারা। সবমিলিয়ে, গোটা দলের মধ্যে লক্ষ্য করা যাচ্ছে একটা আলাদা রকমের আত্মবিশ্বাস।
তবে এই সবকিছুর মাঝে টিম ইন্ডিয়ার জন্য এলো একটি বড় সুসংবাদ। কি সেই সুসংবাদ? লাগাতার জয় ও ভালো পারফরম্যান্সের ফল পেল গোটা দল। ক্রিকেটের তিন ফর্ম্যাটে, অর্থাৎ টেস্ট, একদিনের ও টি টোয়েন্টি ক্রিকেটে, এই মুহূর্তে শীর্ষস্থানে ‘মেন ইন ব্লু’।
এতদিন টেস্টে ১১৭ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে ছিল প্যাট কামিন্স বাহিনী। তবে এবার তাদের টপকে ১২২ পয়েন্ট নিয়ে উপরে চলে এলো রোহিত শর্মারা। একদিনের ক্রিকেটের চিত্রটাও প্রায় একই। প্রথমদিকে টেস্টের মতো একদিনের ক্রিকেটেও এক নম্বরে ছিল অজিরা। তাদের মোট সংগ্রহ ১১৮ পয়েন্ট। এখানেও তাদের টপকে গেল টিম ইন্ডিয়া। এই মুহূর্তে ভারতের মোট পয়েন্ট দাঁড়িয়েছে ১২১। অর্থাৎ অস্ট্রেলিয়ার থেকে তিন পয়েন্ট এগিয়ে তারা। টি২০ ক্রিকেটেও ভারত নিজেদের সেরা প্রমাণ করতে সফল হয়। ২৬৬ পয়েন্ট নিয়ে তারা চলে আসে প্রথম স্থানে। তবে এখানে তারা টপকায় ইংল্যান্ডকে এবং অস্ট্রেলিয়া ছিল তৃতীয় স্থানে। সবমিলিয়ে দেখতে গেলে বিশ্ব ক্রিকেটে অজিদের দাপটে বেগ দিয়েছে ভারত।
তবে এই সবকিছুকে ছাপিয়ে গেছে ভারতের বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষে আসা। গত ডিসেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে পরাজয় এবং স্লো ওভার রেটের জন্য ষষ্ঠ স্থানে চলে যায় টিম ইন্ডিয়া। যদিও দ্বিতীয় টেস্ট জিতে উঠে আসে দ্বিতীয় স্থানে। কিন্তু ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে হায়দ্রাবাদে পরাজিত হওয়ার পর এক ধাক্কায় দল নেমে যায় পঞ্চম স্থানে। তবে তারপর লাগাতার চারটি টেস্ট জেতে তারা এবং এর সুবাদে নিউজিল্যান্ডকে টপকে তারা উঠে আসে এক নম্বরে। এই মুহূর্তে তাদের সংগ্রহ ৬৮.৫১ এবং কিউই বাহিনীর সংগ্রহ ৬০। যদিও ড্যারিল মিচেল, রচিন রবিন্দ্রদের কাছাকাছি চলে এসেছে অস্ট্রেলিয়া।
স্বাভাবিকভাবেই এমন একটি সুন্দর মুহূর্ত সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মগুলিতে ভাইরাল হতে বেশি সময় লাগেনা। মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে চারিদিকে এবং সকলেই অভিনন্দন জানায় ভারতীয় ক্রিকেট দলকে। অধিকাংশেরই মত যে আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এবার ভারতের ঝুলিতেই উঠবে। আবার অনেকে এটাও দাবি করেন যে তরুণ ক্রিকেটারদের দলে জায়গা দেওয়ার জন্যই এতটা উন্নতি হয়েছে ভারতের। অন্যদিকে, ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে বড় টুর্নামেন্টে নামার আগে সবদিক দিয়ে দলকে প্রস্তুতি নিতে হবে এবং কোন বিভাগে যাতে কোনরকমের কোন খামতি না থাকে, তার দিকে নজর রাখতে হবে। অর্থাৎ দলকে ভেবেচিন্তেই পা ফেলতে হবে বলে মনে করছেন তারা।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে হিসেব দেখানোর চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, ঘোষণা করলেন প্রার্থীদের নামও
জনগর্জন সভা থেকে কেন্দ্রীয় সরকার ভারতীয় জনতা পার্টিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে এবং বাংলার আমজনতাকে প্রতিশ্রুতি দিলেন ডায়মন্ড হারবার সংসদ, তথা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন দলের অজস্র কর্মী ও সমর্থকদের উপস্থিতিতে বড় চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বসলেন যুবদের আইকন।
প্রথমেই তিনি বলেন, “প্রথমেই আমি সকলকে ধন্যবাদ জানাতে চাই যারা ব্রিগেডে এসেছেন। অনেকে আবার বলছিল যে তৃণমূল দলটাই আর থাকবেনা। শীঘ্রই সাফ হয়ে যাবে। লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূলের তরফ থেকে নতুন কর্মসূচি ‘জনগণের গর্জন বাংলা বিরোধীদের বিসর্জন’। দিল্লিকে আমাদের কাঁপিয়ে দিতেই হবে। আগে চুরি করলে বিচারপতিরা জেলে পাঠাতেন। কিন্তু এখন আবার গলায় উত্তরীয় পরিয়ে বরণ করে নেন বিচারপতিদের।
এরপরই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বড় চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “দুদিন আগে বাংলা এসে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বোলে গেছেন যে গত তিন বছরে তিনি ৪২ হাজার কোটি টাকা দিয়েছেন। আমি আপনাদের আসল সত্যিটা বলছি যে ১৪ই ডিসেম্বর ২০২২ রাজ্যের তরফ থেকে পাঠানো হয়েছিল কেন্দ্রকে। এরপর দেড় বছর কেটে গেল। কেন্দ্র যদি প্রমাণ করে দেখাতে পারে যে ওরা আবাসের একটা টাকাও দিয়েছে, তাহলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেবো। এখানে দাঁড়িয়ে আজ এত বড় কথা বলে গেলাম।”
এরপর শাসকদলের তরফ থেকে একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয় যেখানে দেখা যাচ্ছে যে কিভাবে বাংলাকে বঞ্চনা করছে বিজেপি। পাশাপাশি ১৬ মিনিটের এই ভিডিওটিতে দেখানো হয় যে কিভাবে তৃণমূলের জনদরদী প্রকল্প সাহায্য করছে আমজনতাকে। তারপর বক্তৃতা দেন তৃণমূল সুপ্রিমো, তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তৃতার শেষে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ফের ডায়মন্ড হারবার থেকে লড়বেন এবছর।
“আপনাদেরকেই আমাদের গর্জন করার শক্তি দিতে হবে” ব্রিগেড থেকে বঙ্গবাসীর উদ্দেশ্যে বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
ব্রিগেড থেকে রণহুংকার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। একের পর এক ইস্যুকে কেন্দ্র করে তোপ দাগলেন বিজেপির উপর। এখানেই শেষ নয়, উপস্থিত সকল তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের প্রতিশ্রুতি দিলেন অধিকার পাওয়ানোর। এদিন সভায় মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। ভিড়ে ভিড় ছিল চারিদিকে। এছাড়াও এই দিন ঘোষণা করা হয় আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের জন্য দলের প্রার্থী তালিকা, যাতে নাম রয়েছে বেশ কয়েকজন নতুন মুখেরও।
এদিন তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, “আমরা আজ একটি বিশেষ কিছুর ব্যবস্থা করেছি, যা আগে আপনারা কোনদিন দেখেননি। আজ দলের তরফ থেকে লোকসভা নির্বাচনের জন্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হবে এবং তাদের নিয়ে আমরা র্যাম্পে হাঁটবো। প্রথমে আমি স্যালুট জানাতে চাই প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনার অরুণ গোয়েলকে কারণ উনি বাংলার সাথে যে ভোট নিয়ে অবিচার হয়েছে তা মেনে নিতে পারেননি। ওরা আমাদের টাকা নিয়ে তো যাচ্ছে, কিন্তু ফেরত দিচ্ছেনা। কিন্তু আজ আমি আপনাদের এখানে দাঁড়িয়ে কথা দিলাম যে যতগুলি কেন্দ্রীয় প্রজেক্ট বন্ধ হয়ে রয়েছে সব আমরাই শেষ করব।”
এরপর একাধিক ইস্যু নিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করা শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “ওরা বলছে আপনাদের ক্যা দেবে। কিন্তু মিলিয়ে নিন ওরা ক্যায়ের জায়গায় ব্যা দেবে। ব্যাক আউট করবে ওরা। আপনাদের ওপারে পাঠিয়ে দেবে। কিন্তু আমরা তা হতে দেবোনা। এনআরসি করতে দেবোনা আমরা। আপনারা যদি চান কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলা হোক, তাহলে সেই শক্তিটাও আপনাদেরকেই আমাদের দিতে হবে। আপনারা তো ওদের ১৮টা আসন দিয়েছেন এবং দেখতেই পাচ্ছেন কিভাবে অত্যাচার বেড়েছে। তাই এবার আপনারা আমাদের সেই শক্তি দেবেন তো? ওরা মানুষ পিটিয়ে বলে ছবি তুলবেন না। পাঞ্জাবীদের খালিস্তানি বলে। আমি বিচার বিভাগকে প্রচন্ড সম্মান করি কিন্তু কেউকেউ চেয়ারে বসেছিল এবং কেউটে হয়ে উঠছিল। তবে তাদের আসল রূপ এবার প্রকাশ্যে চলে আসছে।” শেষে খেলা হবে স্লোগান তোলেন এবং জাতীয় সংগীত গেয়ে সভা শেষ হয়।
“নির্বাচনে উচিত শিক্ষা দেবে তৃণমূলকে” শাসকদলের ব্রিগেডের দিনও আক্রমণ অব্যাহত বঙ্গ বিজেপির
একদিকে যখন শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস জনগর্জন সভা থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলো, ঠিক তখন অন্যদিকে শাসকদলকে পাল্টা আক্রমণ অব্যাহত রাখল বিজেপি। রবিবার, অর্থাৎ ১০ই মার্চ, দীর্ঘদিন ধরে উত্তপ্ত সন্দেশখালিতেই একটি সবার আয়োজন করে গেরুয়া শিবির। সেখানে বক্তব্য রাখেন বঙ্গ বিজেপির দুই বড় মাথা, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। ধৃত তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান গড়ে দাঁড়িয়ে সেখানকার নৃশংসতাকে হাতিয়ার করে তোপ দাগে তৃণমূলের উপর। এখানেই শেষ নয়, তাদের তরফ থেকে এটাও দাবি করা হয় যে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বাংলার মানুষ উচিত শিক্ষা দেবে তৃণমূল কংগ্রেসকে।
এদিন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “আমরা আপনাদের কথা দিয়েছিলাম যে শাহজাহানকে ঠিক জেলে ঢোকাবোই এবং আমরা সেটা করে দেখিয়েছি। তবে শুধু শাহাজাহানকেই নয়, জিয়াউদ্দিন, আলমগীরদেরও জেলে ঢোকাতে হবে। অন্তত ২৫ থেকে ৩০টা সন্দেশখালি রয়েছে গোটা বাংলায়। কিন্তু আমরা শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে এদের বিরুদ্ধে লড়বো।”
এরপর সিপিএমকেও একহাত নেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, “গত দশ বছরে যা অত্যাচার হয়েছে, তার সব হিসেব নেওয়া হবে। এই শাহজাহান তো সিপিএমের হাতেই তৈরি, তাই ওদেরও এই প্রসঙ্গে মুখ খোলার কোন অধিকার নেই। যখন সন্দেশখালি জ্বলছিল, তখন চোর মমতা হাসছিল। আমি প্রণাম জানাতে চাই সেই মা-বোনেদের যারা সেখানকার জেহাদিদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। মাছ দুয়েক হয়ে গেল, কিন্তু এখনো এখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশার নাম নেই। এখানকার মা-বোনেদের উপর উনি পুলিশ দিয়ে অত্যাচার করিয়েছেন। লোকসভা নির্বাচনে এর ঠিক জবাব পাবেন উনি।”
অন্যদিকে সুকান্ত মজুমদার বলেন, “অলিম্পিকে যদি কোন চুরি রাহাজানির খেলা থাকে, তাহলে আমি বাজি ধরে বলতে পারি যে সোনার পদক তৃণমূলের ঝুলিতেই আসবে। পুলিশ যখন ক্রিমিনালটাকে ধরলো তখন আপনারা দেখেছেন কেমন বুক ফুলিয়ে হাঁটছিল। কিন্তু সিবিআইয়ের হেফাজতে যেতেই বাঘ কুকুরে পরিণত হলো।”