নিউজ ডেস্ক: প্রিয় পাঠক দিনের শেষে বঙ্গ-ভারতী নিউজের তরফ থেকে আপনাদের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে দিনের গুরুত্বপূর্ণ সব খবর। রাজ্যে কি ঘটলো? কি হলো ‘আজ সারাদিন’? দেখে নিন একনজরে এবং জেনে নিন বিস্তারিতভাবে।
লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে বাংলার আবহাওয়া
◆ দিলীপ ঘোষের পর এবার প্রাক্তন বিচারপতি, তথা তমলুকের বিজেপি প্রার্থী, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলো বাংলার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস।
একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে ঘাসফুল শিবিরের তরফ থেকে তুলে ধরা হয় অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সাক্ষাৎকারের একটি অংশ, যেখানে প্রাক্তন বিচারপতি বলেন “মনে হচ্ছে মৃত্যু ঘন্টা বেজে গিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।”
এই বক্তব্যের নিন্দা করে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ট্যাগ করে, তৃণমূল বলে, “বিজেপির লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ঘৃনা ভাষণ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এবং মৃত্যু কামনা করেছেন, যা গণতন্ত্রের উপর একটা দাগ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে আবেদন করবো যে একবার উনি যেন ভেবে দেখেন যে এমন একজন ব্যক্তিকে তিনি প্রার্থী বানিয়েছেন। জাতীয় নির্বাচন কমিশনের কাছে এই বিষয়ে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। আমাদের দেশের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।”
◆ আরো বিপাকে বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের এবারের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। এমনিতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কুরুচিকর মন্তব্য করার জন্য মঙ্গলবার তাঁকে শো-কজ নোটিশ ধরায় দল ও নির্বাচন কমিশন। এবার দুর্গাপুর থানায় তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর করলেন দুর্গাপুরের এক মহিলা। তিনি বলেন, “এতগুলো সংবাদমাধ্যমের সামনে উনি যেই মন্তব্যটি করেছেন, তাতে শুধু মুখ্যমন্ত্রীর সম্মানহানি হয়নি। রাজ্যের বাসিন্দা হিসেবে আমাদের সকলের সম্মানহানিও হয়েছে। তাই শুধু ক্ষমা চাইলেই শেষ হয়ে যায়না। সেই কারণেই আমি আইনের পথে হেঁটেছি।”
তবে তিনি একা নন, দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে দুর্গাপুর মহকুমা আদালতের তৃণমূলের আইনজীবী সেলের সদস্যদের তরফ থেকেও। তিনি বলেন “উনি সর্বদাই বাড়তি কথা বলেন। এর আগেও মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে উনি বহুবার কুরুচিকর মন্তব্য করেছেন। এবার তো মুখ্যমন্ত্রীর পিতৃপরিচয় নিয়ে নোংরা মন্তব্য করেছেন। তাই আমরা অভিযোগ দায়ের করেছি এবং আমরা আশাবাদী যে পুলিশ যা ব্যবস্থা নেওয়ার, ঠিকই নেবে।” যদিও এই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ জানিয়েছিলেন যে প্রক্রিয়া মেনেই তিনি জবাব দেবেন এবং মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কোনো ঝগড়া নেই।
কিন্তু দিলীপ ঘোষের বেলাগাম মন্তব্য এখনো অব্যাহত। তিনি বলেন, “আমার এটা ভেবে অবাক লাগছে যে কি এমন হলো যে একটা চিঠি দেওয়ার জন্য ১০জনকে যেতে হলো। সকালে উঠেই মেসোর বাড়িতে দৌড়েছে ওরা। তোমরা যখন রাস্তাঘাটে দাঁড়িয়ে যা খুশি তাই বলো, আমরা তো মেসোর কাছে গিয়ে বলি না যে ওদের কানটা ধরে মূলে দিতে। আর রাজনীতিতে পেরে উঠছে না তাই নির্বাচন কমিশনের কাছে দৌড়াতে হচ্ছে। যাও ঠিক আছে, কোন অসুবিধা নেই। আমরাও আইন মেনে কাজ করি এবং আমিও দলের কাছে নিজের বক্তব্য তুলে ধরবো। যারা রাজ্যপালের কাছে যেতোইনা এবং গালিগালাজ করতো, তারা এখন দিব্যি যাচ্ছে চা খেতে। কেন রাজনীতিতে কি তোমরা পেরে উঠছোনা?”
◆ বিদেশি মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘন মামলায় ইডির তলবে সাড়া দিলেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্র। একটি টিভি চ্যানেলকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন যে বৃহস্পতিবার, অর্থাৎ ২৮শে মার্চ, তিনি দিল্লির ইডি দপ্তরে হাজিরা দেবেন না কারণ তিনি ব্যস্ত থাকবেন প্রচারে। এখানেই শেষ নয়, তিনি আরো জানিয়ে দিলেন যে কৃষ্ণনগরের কোন স্থানে আজ তাঁর প্রোগ্রাম রয়েছে।
এই প্রসঙ্গে আজ সকালে প্রশ্ন করা হলে মহুয়া মৈত্র বলেন, “দেখুন এখন ৯টা ৪০ বাজে। আমি বাড়ি থেকে বেরোচ্ছি। আমার আজকের প্রোগ্রাম কালীগঞ্জ বিধানসভার গোবরা পঞ্চায়েতে এবং সেখানে নয়াচর গ্রামে আমার প্রচারের প্রোগ্রাম রয়েছে।”
এদিন গোবিন্দপুর, নয়াচর, বাদালেপাড়া, চৌধুরীপাড়া এলাকায় ঘুরে প্রচার করেন দাপুটে নেত্রী। পাশাপাশি, এলাকার সাধারণ মানুষের অভিযোগও শোনেন এবং শেষে নৌকা করে ভাগীরথী নদী পেরিয়ে নদিয়া ফিরে যান। তবে কালীগঞ্জ বিধানসভা এলাকায় একটি চায়ের দোকানে নিজের হাতে চা তৈরি করেন এবং সকলের হাতে ভাঁড় এগিয়ে দেন।
যদিও প্রচারের মাঝেও বিজেপিকে কটাক্ষ করতে বাদ যাননি মহুয়া মৈত্র। তিনি বলেন, “বিজেপি আমার প্রতি এতটাই আকৃষ্ট যে ওরা বারবার আমার কাছে আসবে। সিবিআই এসে খালি হাতে ঘুরে গেছে। এতে সত্যিই আমার খুব ভালো লাগছে।”
‘আজ সারাদিন’ আজ এই পর্যন্তই। আগামীকাল আমরা ফের আপনাদের কাছে ফিরে আসবো দিনের সব নজরকাড়া খবর নিয়ে। ধন্যবাদ। শুভরাত্রি।