মোঃ নাওয়াজ শরীফ, মুর্শিদাবাদ: সিএএর কোপ কি পড়তে শুরু করেছে বাংলা ও বাঙ্গালীদের উপর? এমনটারই ইঙ্গিত মিলল ওড়িশায়। কিন্তু এই বাংলাই ছিল একসময় বিহার ও ওড়িশার রাজধানী। তাহলে কেন বাংলায় কথা বলার জন্য বাঙালি শ্রমিকদের উপর তকমা দেওয়া হলো বাংলাদেশির? এখানেই শেষ নয়, করা হয় মারধরও। অভিযোগের তির বিজেপি নেতাদের দিকে। যদিও, আক্রান্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের বক্তব্য তাদের কাছে বৈধ আধার কার্ড থাকা সত্ত্বেও তাদের উপর নির্যাতন করা হয়েছে এবং দাবি করেছে যে দ্রুত যেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিষয়ে পদক্ষেপ নেন।
যদিও পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ বোর্ড বিন্দুমাত্র দেরি করেনি আক্রান্ত শ্রমিকদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়াতে। এক সাংবাদিক সম্মেলনে বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সামিরুল ইসলাম বলেন, “পুরো ঘটনাটা শুনলাম ওদের থেকে। ওরা বাংলায় কথা বলছে বলে ওদের বাংলাদেশী তকমা দেওয়া হচ্ছে কিন্তু ওদের বৈধ আধার কার্ড রয়েছে। এই সংক্রান্ত একটা ভিডিও আমার কাছে রয়েছে। যদি চান আমরা সেটা আপনাদের কাছে দেখাতেও পারি। আমরা মুখ্যমন্ত্রী কাছে নালিশ করেছি এই বিষয়ে এবং উনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে দ্রুত পদক্ষেপ নেবেন। আমরা ওড়িশা প্রশাসনের কাছে প্রতিনিধি দল পাঠাবো এবং অবিলম্বে এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত সকলকে গ্রেফতারের দাবি জানাই।”
কিন্তু গোটা ঘটনা প্রসঙ্গে ভিন্ন মত প্রকাশ করেছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, “দেখুন সিএএর সঙ্গে এই ঘটনার বা বাংলাদেশির কোন মিল নেই। বরং এটা দেখা উচিত যে কেন বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকরা রাজ্য ছেড়ে ভিনরাজ্যে যাচ্ছে কাজের জন্য। ওসব না দেখে, আসল সমস্যাটা দেখুক।”
অন্যদিকে, তৃণমূল নেতা ডাক্তার শান্তনু সেন একহাত নেন বিজেপিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে। তিনি বলেন, “প্রথমত সুকান্ত মজুমদারের কোন ধারণা নেই যে বাংলায় যত নামি খাবারের দোকান রয়েছে সেখানে কাজ করে ওড়িশা, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, বিভিন্ন রাজ্যের লোকেরা। আর সিএএ জারি করার পরই এসব হচ্ছে। কেউ পাগড়ী পড়লে তাকে খালিস্তানি, কেউ বাংলা বললে তাকে বাংলাদেশী বা কেউ মুসলমান বললে তাকে পাকিস্তানি এমনটাই বিজেপি বলে। সুতরাং ওরা বিভেদের রাজনীতিতেই বিশ্বাসী।”