নিউজ ডেস্ক: প্রিয় পাঠক দিনের শেষে বঙ্গ-ভারতী নিউজের তরফ থেকে আপনাদের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে দিনের গুরুত্বপূর্ণ সব খবর। রাজ্য থেকে দেশ, কি ঘটলো ‘আজ সারাদিন’? দেখে নিন একনজরে এবং জেনে নিন বিস্তারিতভাবে।
কলকাতা হাই কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ এসএসসি
যেমন কথা তেমন কাজ! সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল এসএসসি। বুধবার কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে স্পেশাল লিভ পিটিশন দায়ের হলো সেখানে। দ্রুত শুনানির আবেদন জানানো হয়েছে এসএসসির তরফ থেকে। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে যে বৃহস্পতিবার দ্রুত শুনানি হতে পারে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় অথবা অন্য কোনও বিচারপতির এজলাসে।
গত সোমবার, অর্থাৎ ২২শে এপ্রিল, এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বড় রায় দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। আদালতের তরফ থেকে জানানো হয়েছিল গোটা প্যানেল খারিজের কথা এবং এর সঙ্গে চাকরি হারায় প্রায় ২৬ হাজার। এরপরই এসএসসির তরফ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তারা শীর্ষ আদালতে যাবে। অবশেষে বুধবার, অর্থাৎ ২৪শে এপ্রিল, সেটাই করে দেখায় তারা এবং আবেদন করে যেন এই মামলার দ্রুত শুনানি হয়।
এই প্রসঙ্গে এদিন এসএসসির চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার বলেন, “সিবিআই তদন্ত করার পর জানা গিয়েছে যে পাঁচ হাজার চাকরির ক্ষেত্রে দুর্নীতি হয়েছে। কিন্তু এটা ছাড়াও তো চাকরিহারা হয়েছে ১৯ হাজারের বেশি শিক্ষক এবং অশিক্ষক কর্মী। রাজ্য সরকারের সঙ্গে আমরা আলোচনা করেই হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছি এবং সুপ্রিম কোর্টে এসেছি।” এবার দেখার বিষয় যে শেষ পর্যন্ত চাকরিহারাদের মুখে হাসি ফোটে কিনা। শেষ অবধি কে জিতবে এই বাজি? সব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে আর কিছুদিনের মধ্যে।
“আদালত আটকে দিচ্ছে চাকরি” আউসগ্রাম থেকে বিস্ফোরক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্যানেল খারিজ কান্ডে উত্তপ্ত গোটা বাংলা। একদিকে যখন বুধবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলো এসএসসি, ঠিক তেমনি অন্যদিকে, পূর্ব বর্ধমানের আউসগ্রামের সভা থেকে এই সিদ্ধান্তর ফের তীব্র নিন্দা করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানালেন যে তাঁর খারাপ লাগছে এটা ভেবে যে ২৬ হাজার শিক্ষক চাকরিহারা হলো। এখানেই শেষ নয়, তিনি আরো জানালেন যে তিনি চিন্তায় রয়েছেন যে এই ২৬ হাজার শিক্ষক এখন কোথায় যাবেন।
তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, “আমার এটা ভেবে খারাপ লাগছে যে ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি চলে গেল। আবার বলে কিনা আগামী একমাসের মধ্যে সমস্ত বেতন ফেরত দিতে হবে সুদ সমেত। যেই বিজেপি নেতারা চাকরি খাচ্ছেন, তাদের আমি জিজ্ঞেস করছি যে সারাজীবন সরকারি চাকরি করার পর যদি বেতন ফেরত দিতে বলা হয়, তাহলে আপনারা পারবেন তো? আমার চিন্তা হচ্ছে যে এইসব ছেলেমেয়েরা এখন কোথায় যাবে। তাহলে কি এবার বাংলায় সমস্ত স্কুল বন্ধ হয়ে যাবে? এখানে কি আর শিক্ষকের চাকরি হবেনা?”
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “এখনো ১০ লক্ষ চাকরি রয়েছে আমার হাতে কিন্তু আমি তা দিতে পারছিনা। সব আটকে যাচ্ছে আদালতে গিয়ে। বিজেপি টাকা দিয়ে হাই কোর্টকে কিনে নিয়েছে। ওখানে শুধু বিজেপি চাইলেই বিচার হয়। ওরা যখন যা চায়, সেখানে পেয়ে যায়। কিন্তু ওরা ছাড়া কেউ গিয়ে ওখানে বিচার চাক, তখন তারা পাবেনা।”
“শেষ পর্যন্ত আমাকে আটকাতে পারলোনা” অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে একহাত অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের
একদিকে যখন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রাক্তন বিচারপতি, তথা তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপির নির্বাচিত প্রার্থী, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে দোষারোপ করছেন ২৬ হাজার ছেলেমেয়ের চাকরি চলে যাওয়ার জন্য, ঠিক তখন অন্যদিকে নাম না করে প্রাক্তন বিচারপতিকে কটাক্ষ করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরের জনসভা থেকে তিনি বলেন যে তাঁর বিরুদ্ধে এজেন্সি লাগানোর পর তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। এখানেই শেষ নয়, তিনি আরো বলেন যে এতো কিছু করা সত্ত্বেও তিনি তাঁকে আটকাতে পারেননি।
এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “যিনি আমার বিরুদ্ধে ইডি ও সিবিআই লাগিয়েছেন, তিনি এখন বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। আমাকে তো ছাড়েনি। এমনকি আমার স্ত্রী থেকে শুরু করে আমার বৃদ্ধ মা-বাবাকে অবধিও ছাড়েননি উনি। উনি চান যাতে আমি সভা না করতে পারি এবং সেই কারণে উনি হেলিকপ্টার রাইড করিয়েছেন। কিন্তু আপনারা তো দেখলেন। কতো কি করলো ওরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওরা আমাকে আটকাতে পারলোনা।”
এরপরই বাম-কংগ্রেস জোটকে একহাত নেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সিপিএম আর কংগ্রেস বিজেপির বি-টিম। একদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাশে বসিয়ে রাহুল গান্ধী ও সোনিয়া গান্ধী বলছে যে বিজেপিকে পরাজিত করার জন্য তৃণমূল কংগ্রেসকে দরকার আর এখানে বসে অধীর চৌধুরী ও মহাম্মদ সেলিম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লাগাতার আক্রমণ করে চলেছে।”
‘আজ সারাদিন’ আজ এই পর্যন্তই। আগামীকাল আমরা ফের আপনাদের কাছে ফিরে আসবো দিনের সব নজরকাড়া খবর নিয়ে। ধন্যবাদ। শুভরাত্রি।