নিউজ ডেস্ক: প্রিয় পাঠক দিনের শেষে বঙ্গ-ভারতী নিউজের তরফ থেকে আপনাদের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে দিনের গুরুত্বপূর্ণ সব খবর। রাজ্য থেকে দেশ, কি ঘটলো ‘আজ সারাদিন’? দেখে নিন একনজরে এবং জেনে নিন বিস্তারিতভাবে।
দেড় মাসে একটিও আবেদন নয়, সিএএ নিয়ে বড় চাপে কেন্দ্র
বিরোধীদের স্ট্র্যাটেজি কি এল কাজে? সিএএ তাস কি কাজ করছেনা ভারতীয় জনতা পার্টির? এমনটারই ইঙ্গিত মিলল। কেন? ঠিক কি হয়েছে? সিএএ কার্যকর করার কথা ঘোষণা করা হয়েছে দেড় মাস আগে, কিন্তু এখনো পর্যন্ত জমা পড়েনি একটিও আবেদন, যা লোকসভা নির্বাচনী আবহাওয়ায় একটা বড় চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে গেরুয়া শিবিরের কাছে।
চলতি বছরের মার্চ মাসের প্রথমদিকে সিএএ কার্যকর করার কথা ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় সরকার। এরপরই হাসিমুখ লক্ষ্য করা যায় একাংশের। তেমনি অন্যদিকে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা করে। এমনকি বিজেপির বিরুদ্ধে বিভেদ সৃষ্টি ও নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ারও অভিযোগ তোলা হয় তাদের তরফ থেকে। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করে তারা।
এমন পরিস্থিতিতে এক আরটিআই কর্মী জানতে চান যে এখনো পর্যন্ত কতজন নাগরিকত্বের আবেদন করেছেন। তথ্য জানার আইনেই সেই আবেদন করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু সেই প্রশ্নের উত্তরে যা জবাব মেলে, তা রীতিমত চাপ বাড়িয়ে দেয় কেন্দ্র সরকারের। উত্তরে জানানো হয়েছে যে এখনো পর্যন্ত দেড় মাসের মধ্যে একটিও আবেদন জমা পড়েনি।
রাজনৈতিক মহল মনে করছেন যে লোকসভা নির্বাচনের আগে যা ভেবে এই ঘোষণা করা হয়েছিল, তা একেবারেই কাজে আসেনি। বরং ব্যাকফায়ার করে দিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টিকে। এছাড়াও তাদের মত যে গোটা দেশজুড়ে এই মুহূর্তে লোকসভা নির্বাচন চলছে এবং তা চলাকালীন এমন তথ্য উঠে আসা একেবারেই ভালো চিহ্ন নয় কেন্দ্রের শাসকদলের জন্য। তার উপর প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ লাগাতার প্রচার করা সত্ত্বেও কোন সাড়া মেলেনি, এটাও একটা মারাত্মক চিন্তার বিষয়। এবার দেখার বিষয় যে শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রের প্রতিক্রিয়া কি হয় এই প্রসঙ্গে।
উল্লেখ্য, সিএএ নিয়ে প্রথম থেকেই বিরোধিতায় নেমেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রতিটি জনসভায় তিনি দাবি করেছেন যে আবেদন করা মানেই নাগরিকত্ব হারানো। পাশাপাশি, তিনি এটাও স্পষ্ট করে দেন যে বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেস থাকাকালীন নাগরিকত্ব নিয়ে কাউকে কোন চিন্তা করতে হবেনা। যদিও বিজেপি লাগাতার দাবি করে চলেছে যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সকলকে ভুল বোঝাচ্ছেন এবং এই আইন নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার জন্য নয়, বরং সকলকে নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য।
“ওরা কেউ আসেনি” নন্দীগ্রাম কাণ্ড নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের
নন্দীগ্রাম কাণ্ড নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার, অর্থাৎ ২৫শে এপ্রিল, তমলুকের তৃণমূল প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্যের হয়ে প্রচারে এসে একহাত নিলেন গোটা অধিকারী পরিবারকে। তিনি জানালেন যে আনিসুরকে জেল দিতে হয়েছে শুভেন্দু অধিকারীর জন্য। এখানেই শেষ নয়, তৃণমূল সুপ্রিমো আরো জানালেন যে নন্দীগ্রামে যখন বোমা-গুলি চলছিল, তখন অধিকারী পরিবার থেকে কেউ আসেনি।
এদিন মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমার এখনো মনে আছে সেদিনের কথা। নন্দীগ্রামে তখন প্রচন্ড গুলি চলছিল। আর সিপিএমের গুন্ডারা কোলাঘাটে আটকে দিয়েছিল মদ খেয়ে। চক্রান্ত করা হয়েছিল আমার গাড়িতে পেট্রোল বোমা মারার। ওই মুহূর্তে আমি ডেকে পাঠিয়েছিলাম আনিসুরকে। ও পাঁশকুড়ার ছেলে। এখন ও জেলে আছে ওই গদ্দারটার জন্য। সেদিন যখন কেউ ছিলোনা, তখন আমি আনিসুরকে বলেছিলাম আমাকে পৌঁছে দিতে। ও বাইকে করে আমাকে তমলুক অবধি পৌঁছে দেয়।”
এরপর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “যখন নন্দীগ্রামে গিয়েছিলাম, তখন না বাবা ছিল, না ছেলে ছিল। ওদের কোথাও দেখা যায়নি। ওরা কেউ আসেনি। সেদিন পুরো রাতজুড়ে বোমা-গুলির আওয়াজ শুনছিলাম। তখনও কিন্তু কেউ আসেনি। তবে হ্যাঁ আমায় চিত্ত মাইতি থাকতে দিয়েছিল। হ্যাঁ এটা একেবারেই ঠিক যে আমি ওদের নাম বইতে লিখেছিলাম। তবে স্বীকার করছি যে ভুল লিখেছিলাম। কিন্তু আপনারাই বলুন যে নিজেদের লোকের নাম করাটা কি ভুল? সেই কারণেই লিখেছিলাম। তবে এখন সংশোধন করে দেব কারণ আমি ১০ দিন ওখানে পড়েছিলাম। না পিতা, না পুত্র, কেউই আসেনি ওরা। ওদের কাউকে বেরোতে দেখা যায়নি। ওরা কেউ ছিলোনা সেই সময়ে।”
এছাড়াও এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাম না নিয়ে একহাত নেন প্রাক্তন বিচারপতি, তথা তমলুকের বিজেপি প্রার্থী, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে। তিনি বলেন, “যিনি বিজেপি প্রার্থী হয়েছেন এখানে, তিনিই প্রথমে সই করেছিলেন চাকরি যাওয়ার কাগজে। বিচারকের আসনে বসে উনি যোগাযোগ রাখতেন বিজেপির সঙ্গে। উনি তো সেটা নিজের মুখেই স্বীকার করেছেন। তাহলে আপনারাই বলুন যে একে আমি কি বলবো যে বিচারকের আসনে বসে বিজেপি করতো? তাকে বিতাড়িত করে দিন এবং তার নামটাও ঠিক করে দিন। আগে নিজের দেহত্যাগ করুন আমাকে পদত্যাগ করতে বলার আগে। আপনি বিচারালয়ের কলঙ্ক।”
‘আজ সারাদিন’ আজ এই পর্যন্তই। আগামীকাল আমরা ফের আপনাদের কাছে ফিরে আসবো দিনের সব নজরকাড়া খবর নিয়ে। ধন্যবাদ। শুভরাত্রি।