নিউজ ডেস্ক: প্রিয় পাঠক দিনের শেষে বঙ্গ-ভারতী নিউজের তরফ থেকে আপনাদের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে দিনের গুরুত্বপূর্ণ সব খবর। রাজ্য থেকে দেশ, কি ঘটলো ‘আজ সারাদিন’? দেখে নিন একনজরে এবং জেনে নিন বিস্তারিতভাবে।
“তাঁকে কেউ চেনেনা” কৃষ্ণনগরের বিজেপি প্রার্থী নিয়ে খোঁচা অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের
আর দিন দুয়েকের মাথায় শুরু হবে লোকসভা নির্বাচনের তৃতীয় দফা। ইতিমধ্যেই, সব দল ময়দানে নেমে পড়েছে প্রচার করতে জনসভার মাধ্যমে। সকলেই একে অপরের দুর্নীতিকে হাতিয়ার করে তার কথা তুলে ধরছে মানুষের কাছে। পাশাপাশি, সকলের থেকে বইছে প্রতিশ্রুতির বন্যাও। সবমিলিয়ে, এই মুহূর্তে একটা চরম ব্যস্ততার চিত্র উঠে আসছে গোটা ভারতবর্ষ থেকে।
রবিবার, অর্থাৎ ৫ই এপ্রিল, কৃষ্ণনগরের তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্রের হয়ে প্রচারে আসেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক, তথা ডায়মন্ড হারবারের প্রার্থী, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তাঁকে দেখার জন্য দলের কর্মী ও সমর্থকদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। মঞ্চ থেকে তিনি একাধিক ইস্যু নিয়ে তোপ দাগেন বিজেপির দিকে এবং আশ্বাস দেন মানুষকে।
এদিন প্রথমেই কৃষ্ণনগরের বিজেপি প্রার্থী নিয়ে খোঁচা দেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য যে অমৃতা রায়, ওরফে রাজমাতাকে, কেউ চেনেন না। এখানেই শেষ নয়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আরও দাবি করেন যে ঘাসফুল শিবিরের প্রার্থী জিতলে, তিনি আগামীদিনে গরিব মানুষদের হয়ে লড়বেন এবং প্রয়োজন পরলে দিল্লিতে গিয়েও বৃহত্তর আন্দোলনে নামবে।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিজেপি এখানে প্রার্থী হিসেবে যাকে দাঁড় করিয়েছে, তাকে কেউ চেনেনা। রাজমাতা হিসেবে পরিচয় দেন উনি নিজের। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ‘এজেন্সি রাজে’ বিশ্বাসী। মনে রাখবেন এটা যে ওরা যদি যেতে, তাহলে গরীবদের উপর অত্যাচার বাড়বে। যদি আপনারা আমাদের প্রার্থীকে যেতাম তাহলে দিল্লির বুকে আন্দোলন করবো আমরা এবং গরীবদের অধিকার নিয়ে সরব হবো। গরিবদের অধিকারের জন্য টাকা চাইতে গিয়েছিল বলে ওরা আমাদের মহিলা সংসদ দোলা সেন ও মহুয়া মৈত্রকে চুলের মুঠি ধরেছিল।”
এই প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, “আমাদের দলের সৈনিকরা প্রশ্ন করলেই, তাদের সাংসদ পদ খারিজ করা হয়। আমি কৃষ্ণনগরের সকল মায়েদের কাছে আজ একটা প্রশ্ন করতে চাই যে আপনারা কাকে নির্বাচিত করতে চান? নরেন্দ্র মোদির পুতুলকে নাকি যে নিজের প্রাণ বিপন্ন করে আপনাদের জন্য লড়াই করে মহুয়া মৈত্রকে?”
এছাড়াও এদিন তিনি আরো বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন যে বিজেপি প্রার্থীকে ভোট দেওয়া মানে তাঁকে ভোট দেওয়া। তবে আমি বলবো মহুয়া মৈত্রকে ভোট দেওয়া মানে বিজেপিকে হারানো। সিপিএম বা কংগ্রেসকে একটাও ভোট দেবেন না। ওরা তৃণমূলের ভোট কাটতে চায়। কানে শুনে নয়, চোখে দেখে ভোট দিন।”
“খুবই কাঁচা স্ক্রিপ্ট” সন্দেশখালি স্টিং অপারেশন প্রসঙ্গে মন্তব্য করলেন শুভেন্দু অধিকারী
সন্দেশখালি কান্ড নিয়ে উত্তাল ছিল গোটা বাংলা। এই প্রসঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বাংলার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসকে কটাক্ষ করে। কিন্তু হঠাৎ মাঝে উঠে আসে একটি ভিডিও যা রীতিমতো হইচই ফেলে দেয় চারিদিকে। কি সেই ভিডিও? সেই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে যে সন্দেশখালির বিজেপি নেতা গঙ্গাধর কয়াল দাবি করেছেন যে সন্দেশখালিতে ওঠা ধর্ষণের অভিযোগগুলি মিথ্যে। এরপরই ময়দানে নামে তৃণমূল কংগ্রেস এবং দাবি করে যে বিজেপি চক্রান্ত করেছে দলকে বদনাম করার জন্য।
তবে এবার এই প্রসঙ্গে মুখ খুললেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা, তথা নন্দীগ্রাম, বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। রবিবার মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গিপুরে নির্বাচনী প্রচারে এসে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে বলেন যে এটি একটি কাঁচা স্ক্রিপ্ট। এখানেই শেষ নয়, রীতিমতো হুমকির সুরে তিনি বলেন যে এই বিষয়টি তিনি বহু দূর পর্যন্ত নিয়ে যাবেন।
এদিন মঞ্চ থেকে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “আপনি (অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়) সন্দেশখালিকে জাগ্রত করে দিয়েছেন। ১০ বছর ধরে আপনার লোকেরা ওখানে মহিলাদের মাঝরাতে ডেকে কি করেছে তা সকলেই জেনেছে। তবে বলতে বাধ্য হলাম যে আপনি খুবই কাঁচা স্ক্রিপ্ট লিখেছেন। কিন্তু এবার আপনিও দেখুন যে এটাকে আমি কোথায় নিয়ে যাই। আমাকে জেলে ঢোকাবে বলেছে ভাইপো। কিন্তু কয়লা ভাইপো তো জেলে যাবে আমি বলেছি।”
সভা শেষে শুভেন্দু অধিকারী মুখোমুখি হন সাংবাদিকদের এবং মুখ খোলেন এই প্রসঙ্গে। তিনি বলেন, “যে লোকটিকে দিয়ে স্টিং অপারেশন করানো হয়েছে, তার পোর্টাল উদ্বোধনে গেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই। আমরা এটাও জানতে পেরেছি যে সঙ্গে রয়েছে বসিরহাটের এসপি মেহেদি হাসান ও আইপ্যাক। গঙ্গাধর কয়াল সিবিআইকে লিখেছেন যে সিবিআই যদি দুদিনের মধ্যে ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে উনি উচ্চ আদালত ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পর্যন্ত যাবেন। তবে এখন গঙ্গাধর কয়েল সেফ কাস্টাডিতে আছে আমার।”
‘আজ সারাদিন’ আজ এই পর্যন্তই। আগামীকাল আমরা ফের আপনাদের কাছে ফিরে আসবো দিনের সব নজরকাড়া খবর নিয়ে। ধন্যবাদ। শুভরাত্রি।