নিউজ ডেস্ক: প্রিয় পাঠক দিনের শেষে বঙ্গ-ভারতী নিউজের তরফ থেকে আপনাদের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে দিনের গুরুত্বপূর্ণ সব খবর। আজকের থিম দিল্লি ক্যাপিটালসের জয়। কি ঘটলো ‘আজ সারাদিন’? দেখে নিন একনজরে এবং জেনে নিন বিস্তারিতভাবে।
দেখতে দেখতে চলতি আইপিএলের লিগ পর্বের সফর শেষ হয়ে গেল ঋষভ পান্থ বাহিনীর, অর্থাৎ দিল্লি ক্যাপিটালসের। টুর্নামেন্টের শুরুতে তারা একেবারেই ফর্মে ছিলোনা। হারছিল একের পর এক ম্যাচ। শুধু হারাই নয়, এমনকি জয়ের দোরগোড়ায় এসেও পরাজয় শিকার হতে হয়েছিল তাদের। তবে হঠাৎ তারা ফিরে আসে ছন্দে। লাগাতার জয়ের মুখ দেখে তারা। অবশেষে ১৪ ম্যাচ খেলে তাদের ঝুলিতে জোটে ১৪ পয়েন্ট। অর্থাৎ জয় পেয়েছে ৭টিতে এবং হেরেছেও ৭টিতে।
গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচেও দিল্লি ক্যাপিটালস নিজেদের দাপট অব্যাহত রাখলো। মঙ্গলবার, অর্থাৎ ১৪ই মে, ইতি রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে তারা জয় পায় লাখনৌ সুপার জায়েন্টসের বিরুদ্ধে। ১৯ রানে তারা ম্যাচ নিজেদের ঝুলিতে তোলে। সৌজন্যে অভিষেক পোড়েল ও ট্রিস্টান স্টাবসদের বিধ্বংসী ব্যাটিং এবং ইশান্ত শর্মা ও কুলদীপ যাদবের আক্রমণাত্মক বোলিং। তবে রান তাড়া করতে নেমে লাগাতার উইকেট হারালেও, নিকোলাস পুরাণ ও আরশাদ খানের মারকুটে ব্যাটিংয়ের উপর ভর করে ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে লাখনৌ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা পেরে ওঠেননি। তবে নেট রান রেটের ভিত্তিতে এখনো ‘প্লে অফ’ খেলার সুযোগ রয়েছে দুই দলের কাছেই।
ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ইশান্ত শর্মা বলেন, “গত কয়েকটি ম্যাচে আমি বেশি করে নারকেল বল বোলিং করার চেষ্টা করছি। এমনকি আরসিবির বিরুদ্ধে যে গত ম্যাচ আমরা খেলেছিলাম, সেটাতে আমি বিরাট কোহলিকে আউট করেছিলাম। তাছাড়া আজকের ম্যাচেও আমি কে এল রাহুলকে আউট করেছি। আমি এগুলো নিয়ে এতো বেশি ভাবিনা। আমি ম্যাচ অনুযায়ী খেলি এবং সেই অনুযায়ী ব্যাপারগুলো নিই।”
এরপর তারকা পেসারকে প্রশ্ন করা হয় তাঁর চোট প্রসঙ্গে। সেই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “যদি ম্যাচের জন্য আমার শরীর পুরোপুরি ঠিক থাকে, তাহলে এর জন্য আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই প্যাট্রিক ফারহার্টকে। হ্যাঁ চোট নিয়ে আমি বেশ কিছুদিন সমস্যায় ছিলাম। লাগাতার পরাজয় পাওয়া সত্ত্বেও, আমাদের আত্মবিশ্বাস একই ছিল। আমরা পজিটিভ ছিলাম এবং নিজেদের উপর আস্থা রাখতাম। একবার যদি আপনি ক্লোজ গেমগুলো জিততে শুরু করেন, তাহলে আপনার মনের মধ্যে একটা আলাদা আত্মবিশ্বাস জেগে ওঠে সেই গতিটাকে আগে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার।”
অন্যদিকে, ম্যাচ শেষে সাক্ষাৎকার দেন দলের তারকা স্পিনার কুলদীপ যাদবও। তিনি বলেন, “বোলিংয়ের জন্য এই উইকেটটা দারুন। বিশেষ করে আমাদের স্পিনারদের জন্য এমন উইকেট খুবই ভালো। দ্বিতীয় ইনিংসে আমি একটু হলেও গ্রিপ পাচ্ছিলাম এবং আমি চেষ্টা করছিলাম বলটা যতটা স্পিন করা যায়। যেহেতু উইকেট খুবই স্লো ছিল, তাই লেন্থের উপর আমি বেশি নজর দিয়েছিলাম। আমি যতটা পেরেছি ফুল বল করছিলাম।”
এরপর পিচ প্রসঙ্গে কুলদীপ যাদব আরো বলেন, “যদি কুইক ট্র্যাক হতো, তাহলে লেন্থ নিজের নিয়ন্ত্রণে আনতে সুবিধা হয়। কিন্তু যদি স্লো হয়, তাহলে আপনাকে একেবারে নিখুঁত বোলিং করতে হবে। আমি কয়েকটা বল পুষ করার চেষ্টা করেছিলাম আর যেকোন রিস্ট স্পিনারের কাছে রেভ জিনিসটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আর সত্যি বলতে গেলে ক্রিকেট এরকমই হয়। আমরা এখানে ম্যাচ জিততে এসেছিলাম এবং আমরা জিতেছিও আর সেটাই আমাদের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এবার দেখা যাক যে আর দুদিন বাদে কোন দল পরবর্তী রাউন্ডে যায়।”
এছাড়া ম্যাচ শেষে দিল্লি ক্যাপিটালস অধিনায়ক ঋষভ পান্থ নিজের মতামত জানান জয় প্রসঙ্গে। তিনি বলেন, “যখন নিকোলাস পুরান ব্যাটিং করছিল, তখন আমরা সত্যি বলতে একটু হলেও চাপে ছিলাম। তবে আমরাও অনেক পরিকল্পনা করে রেখেছিলাম আগে থেকে। আমরাও ভালো বোলিং করে চলেছিলাম। সবমিলিয়ে দেখতে গেলে, পুরো ম্যাচে আমাদের জন্য সবকিছুই ঠিকঠাক গেছে এবং আমরা জিতেছি।”
এরপরই মরশুম প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হয় পান্থকে। সেই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “অনেক আশা নিয়ে আমরা মরশুমটা শুরু করেছিলাম। হ্যাঁ চোট নিয়ে কিছু ক্রিকেটারের সমস্যা ছিল ঠিকই, তবুও শেষ ম্যাচের পর আমাদের কাছে প্লে অফ যাওয়ার একটা রাস্তা ছিল। যদি গত ম্যাচটা আমি খেলতাম তাহলে আমাদের কাছে হয়তো আজ প্লে অফের টিকিট পাকা হয়ে যেতো। ব্যক্তিগতভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর ব্যাপারটা আমার বেশ ভালই লাগছে।”
শেষে দীর্ঘদিন বাদে ক্রিকেটের ময়দানে ফেরা প্রসঙ্গে ফের মুখ খোলেন পান্থ। তিনি বলেন, “গোটা ভারতবর্ষ আমাদের সমর্থন করছে, এই জিনিসটা দেখে আমার খুব ভালো লেগেছে। দেড় বছর ধরে আমি এই দিনটার জন্য অপেক্ষা করেছিলাম। আমি সারাক্ষণই ময়দানে থাকতে চেয়েছিলাম। কোন মুহূর্তই আমি মিস করতে চাইনি।”
‘আজ সারাদিন’ আজ এই পর্যন্তই। আগামীকাল আমরা ফের আপনাদের কাছে ফিরে আসবো দিনের সব নজরকাড়া খবর নিয়ে। ধন্যবাদ। শুভরাত্রি।