নিউজ ডেস্ক: প্রিয় পাঠক দিনের শেষে বঙ্গ-ভারতী নিউজের তরফ থেকে আপনাদের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে দিনের গুরুত্বপূর্ণ সব খবর। আজকের থিম ‘পাকিস্তানের পরাজয় এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জয়’। কি ঘটলো ‘আজ সারাদিন’? দেখে নিন একনজরে এবং জেনে নিন বিস্তারিতভাবে।
চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ টুর্নামেন্ট একেবারেই ভালোভাবে শুরু হলোনা পাকিস্তান ক্রিকেট দলের জন্য। প্রথম ম্যাচেই ধাক্কা খেলো বাবর আজম ও তাঁর বাহিনী। পরাজয়ের শিকার হলো গোটা দল। বলা যায়, একেবারে তীরে এসে তরী ডুবল তাদের। হারলো তো হারলো, তাও আবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো এক অনভিজ্ঞ দলের কাছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই জয় চমকিয়ে দেয় বিশ্বের সকল ক্রিকেটপ্রেমীদের। সুপার ওভারে ম্যাচ জেতে তারা।
এদিন ম্যাচের শুরু থেকেই নড়বড়ে দেখায় পাকিস্তান দলকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বোলারদের সামনে একপ্রকার অপেশাদার দেখায় দলের ব্যাটিং অর্ডারকে। কোনরকম কষ্ট করে তারা পেরোয়ে ১৫০ রানের গুন্ডি। স্বয়ং দলের অধিনায়ক বাবর আজমও রান করেন অত্যন্ত ধীরে, যার ফলে স্কোরবোর্ডে বেশি রান তুলতে সফল হয়নি পাক বাহিনী। অন্যদিকে, দলে একাধিক প্রভাবশালী বোলার থাকা সত্বেও, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে রুখতে পারেনি তারা। আমির হোক কি আফ্রিদি বা হোক নাসিম, কেউই তেমন দাগ কাটতে সফল হয়নি। সকলকেই অত্যন্ত সাধারণ দেখিয়েছে গোটা ম্যাচজুড়ে। সবমিলিয়ে, দলের এমন বিশ্রী পারফরমেন্স হতাশ করেছে সেই দেশের সকল ক্রিকেটপ্রেমী থেকে শুরু করে প্রাক্তন ক্রিকেট তারকাদের।
ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় ঘোষণা করা হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অধিনায়ক মোনাঙ্ক প্যাটেল। ৩৮ বল খেলে তিনি করেন ৫০ রান, যার মধ্যে রয়েছে ৭টি চার এবং একটি ছয়। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এই জয়ের খুশি প্রকাশ করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অধিনায়কের বক্তব্য, “পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নিজেদের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলা এবং তাতে জয় পাওয়া একটা বড় কৃতিত্ব ছাড়া আর কিছুই নয়। গোটা দলই এই জয়ের পেছনে অবদান রেখেছে। যখন আমরা টস দিতি তখন আমাদের মাথায় একটাই কথা চলছিল যে আমরা যেন পরিস্থিতি সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারি এবং আমরা ঠিকঠাক কাজেও লাগাতে পেরেছি এবং পাকিস্তানকে ১৬০ রানের নিচে আটকাতে পেরেছি।”
এরপরই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অধিনায়ককে প্রশ্ন করা হয় তাঁর ইনিংস প্রসঙ্গে। সেই প্রশ্নের উত্তরে মোনাঙ্ক প্যাটেল বলেন, “নিজের অবদান নিয়ে আমি অত্যন্ত খুশি এবং তার চেয়ে বেশি খুশি এটার জন্য যে আমাদের দল ম্যাচটা জিতেছে। আমরা কথা বলেছিলাম প্রথম তিন ব্যাটসম্যানের পারফর্ম করা প্রসঙ্গে এবং আমি খুশি যে আমি আর গাউস সেটা করে দেখিয়েছি আমাদের প্ল্যান ছিল নিখুঁত শট খেলার এবং গাউস আমার উপর থেকে অনেকটা চাপ কমিয়ে দিয়েছে। দুই পয়েন্ট নিজেদের ঝুলিতে তুলতে পেরে বেশ ভালো লাগছে। একজন ব্যাটার বা একজন খেলোয়াড় হিসেবে আপনি চাইবেন যে বড় ম্যাচে কাজ করে দেখাতে এবং আপনি খুশি যে আমার এই অর্ধশতরানের ইনিংসে জয় পেয়েছে আমার দল।”
এরপরই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অধিনায়ককে প্রশ্ন করা হয় ম্যাচ ঘিরে পরিকল্পনা প্রসঙ্গে। সেই প্রশ্নের উত্তরে মোনাঙ্ক প্যাটেল বলেন, “টসে দিতে আমরা বোলিং করার সিদ্ধান্ত নিই। প্রথম ছয় ওভারের মধ্যে উইকেট তুলে ওদের আমরা রান করতে দিনি এবং ওদের শান্ত রাখি। আমরা ভালো করেই বুঝতে পেরেছিলাম যে ওরা সুযোগ নেবে পার্টনারশিপের পর। তবে যখন আমরা দেখি যে আমাদের মাত্র ১৬০ রান তাড়া করে জিততে হবে, তখন আমরা বুঝতে পারি যে এটা সম্ভব এবং তার জন্য দরকার একটা পার্টনারশিপ। বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ প্রতিবার সকলের কপালে জোটেনা। প্রথম বল থেকেই আমরা ম্যাচ জেতার উদ্দেশ্যে নেমেছিলাম।”
অন্যদিকে ম্যাচ হেরে বড় ধাক্কা খেয়েছে পাকিস্তান। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে হতাশা প্রকাশ করেন দলের অধিনায়ক বাবর আজম। তিনি বলেন, “ব্যাট করতে নেমে প্রথম ৬ ওভারে আমরা তেমন রান করতে পারিনি। পরপর উইকেট চলে যাওয়ার জেরে আমরা একটু ব্যাকফুটে চলে গেছিলাম। ওই মুহূর্তে ব্যাটার হিসেবে যেটা দরকার ছিল সেটা হলো পার্টনারশিপ। এছাড়া বল হাতেও আমরা প্রথম ছয় ওভারে কিছু করে দেখাতে পারিনি। আমাদের স্পিন বিভাগও মাঝের ওভারগুলিতে উইকেট তুলতে সফল হয়নি। তাই এই সবকিছুর জন্যই আমাদের ম্যাচ হারতে হয়েছে।”
এরপরই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের খেলা প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করা হয় পাক অধিনায়ককে। সেই প্রশ্নের উত্তরে বাবর আজম বলেন, “পুরো ক্রেডিটটাই আমি ওদের দিতে চাই কারণ ওরা সব বিভাগেই আমাদের চেয়ে অনেক ভালো খেলা দেখিয়েছে। পিচে একটু ময়েশ্চার ছিল। তাছাড়া পিচ টু-পেস্ড ছিল। একজন পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে আপনার এই পরিস্থিতিগুলো বোঝা খুব প্রয়োজন।”
‘আজ সারাদিন’ আজ এই পর্যন্তই। আগামীকাল আমরা ফের আপনাদের কাছে ফিরে আসবো দিনের সব নজরকাড়া খবর নিয়ে। ধন্যবাদ। শুভরাত্রি।