নিউজ ডেস্ক: প্রিয় পাঠক প্রতিদিন সকালে বঙ্গ-ভারতী নিউজের তরফ থেকে আপনাদের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে গতকালের গুরুত্বপূর্ণ সব খবর। রাজ্য থেকে দেশ, কি ঘটলো গত ২৪ ঘন্টায়? দেখে নিন একনজরে এবং জেনে নিন বিস্তারিতভাবে।
নিট পরীক্ষায় দুর্নীতির তদন্তে উদ্ধার ৩০ লক্ষ টাকার ছটি মেয়াদ উত্তীর্ণ চেক
চলতি বছরের নিট পরীক্ষায় দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসতেই চাপে পড়ে কেন্দ্র সরকার। সমস্ত বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি আক্রমণ করতে শুরু করে তাদের। পাশাপাশি, সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মগুলিতেও এই দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসতে বয়ে নিন্দার বন্যা। এখানেই শেষ নয়, সবচেয়ে বড় ধাক্কা খায় কেন্দ্র সরকার যখন এর জল গড়ায় শীর্ষ আদালত পর্যন্ত। সেখানে কেন্দ্র একপ্রকার মানতে বাধ্য হয় যে এই পরীক্ষায় দুর্নীতি হয়েছে। পাশাপাশি, পড়ুয়াদের একাংশ সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছে। সবমিলিয়ে, এই ঘটনা জনসমক্ষে আসতেই চরম চাপে ও অস্বস্তিতে পড়েছে এনডিএ জোট।
এমনিতেই ধৃত এক পরীক্ষার্থীর বয়ান বিহার সরকারের আর্থিক দুর্নীতি বিভাগের বিস্ফোরক রিপোর্ট চিন্তায় ফেলে দিয়েছে গেরুয়া শিবিরকে। এবার তার উপর পুলিশের হাতে লাগলো আরো ভয়ংকর কিছু। সেটি কি? বিহার পুলিশের হাতে লেগেছে ৩০ লক্ষ টাকার ছটি মেয়াদ উত্তীর্ণ চেক। প্রাথমিকভাবে তদন্তকারীদের অনুমান যে পরীক্ষার আগে প্রশ্নপত্র গুলি বিক্রি করা হয়েছিল অর্থের বিনিময়ে। এখানেই শেষ নয়, এক তদন্তকারী এটাও দাবি করেছেন যে এখনো অনেককিছু বিষয় লোকের সামনে আসা বাকি।
সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন মানবজিৎ সিং ধিলো নামে এক তদন্তকারী আধিকারিক। এই বিষয়ে তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানান কি তথ্য হাত লেগেছে বিহার পুলিশের। পাশাপাশি, তিনি আরো স্পষ্ট করে দেন যে কোনদিকে এগোচ্ছে এই দুর্নীতির তদন্ত। তিনি বলেন, “এই অর্থের বিনিময়ে পরীক্ষার্থীদের হাতে প্রশ্নপত্র তুলে দেওয়া হয়েছিল পরীক্ষার আগে। আমরা তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি এবং খতিয়ে দেখছি ব্যাংকগুলোর অ্যাকাউন্ট হোল্ডার সম্পর্কে। ৩৫জন পরীক্ষার্থী যুক্ত এই দুর্নীতির সঙ্গে। পরীক্ষার দিনই গ্রেফতার করা হয়েছিল চারজনকে। তলব করা হয়েছে ৯জনকে। এখনো ২২জনকে শনাক্ত করা বাকি। ১৯জনকে এখনো পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে।”
উল্লেখ্য, এই ঘটনার সঙ্গে আয়ুশ রাজ নামে এক ধৃত পুলিশকে বয়ান দেন যে টাকা দিয়ে তিনি যেই প্রশ্নপত্র পেয়েছিলেন, পরীক্ষার হলে গিয়ে দেখেন সেটা একেবারেই এক। তিনি বলেন, “গত ৪ঠা মে পাটনার লার্ন হোস্টেলে রাতে আমাকে নিয়ে গিয়ে প্রশ্নপত্র আর উত্তরপত্র, দুটোই দেওয়া হয়। ওরা আমাকে মুখস্ত অবধি করতে বলে। সেই সময়ে আমার সঙ্গে আরও ২০-২৫জন পরীক্ষার্থী ছিল। পরীক্ষার হলে গিয়ে আমি দেখি যে যেই প্রশ্নপত্র আমি টাকা দিয়ে পেয়েছিলাম, সেই একই প্রশ্নপত্র পরীক্ষা এসেছে।”
তবে এবার এর চেয়েও বড় চাপে পড়ে কেন্দ্র সরকার যখন বিহার সরকারের আর্থিক দুর্নীতি বিভাগের তরফ থেকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের পরীক্ষার্থীদের তলব করা হয় এবং সেই অনুযায়ী তারা তৈরি করা হয় একটি বিস্ফোরক রিপোর্ট। তাতে বলা হয়েছে যে ১৫ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা মূল্য প্রতিটি প্রশ্নপত্রের এবং তৈরি করা হয়েছিল একটি সলভার গ্যাং, যাদের দেওয়া হতো ১০ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা। বিভিন্ন কোচিং সেন্টার ও সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে প্রশ্ন বিক্রির জন্য এবং সলভার গ্যাং এদের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিজেদের কাজ করতো। তদন্তকারীদের অনুমান যে বিভিন্ন কোচিং সেন্টার ও পরীক্ষা মাফিয়াদের সাহায্যে এই দুর্নীতির জাল ছড়িয়েছে বেশকিছু রাজ্যে।
নিজবাড়িতে ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা! বাড়ছে মৃতের সংখ্যা, রেলকে কটাক্ষ মমতার
সোমবার, অর্থাৎ ১৭ই জুন, বাংলায় ঘটলো একটি ভয়ংকর ঘটনা। একটি ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা ঘটলো নিজবাড়িতে। কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস শিয়ালদহ আসার সময়ে ধাক্কা খায় একটি মালগাড়ির সঙ্গে এবং এর জেরে পেছনের দুই কামরা হয়ে যায় বেলাইন। এই ঘটনায় আহত হয়েছে বেশ কয়েকজন এবং মৃত্যু হয়েছে কয়েকজনের। যদিও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সঙ্গে এদিন উদ্ধারকাজে হাত লাগাতে দেখা যায় স্থানীয়দের। কিন্তু এমন ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে সকল বঙ্গবাসী।
এই ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। নিজের এক্স হ্যান্ডেল থেকে তৃণমূল সুপ্রিমো লেখেন, “এই দুর্ঘটনার খবর পেলাম এখন। কিছু জানতে পারিনি বিশদে এখনো। জেলাশাসক, চিকিৎসক, পুলিশ সুপার ও অ্যাম্বুলেন্স পৌঁছেছে সেখানে। শুরু হয়েছে উদ্ধারকাজ।” অন্যদিকে শোকপ্রকাশ করেন রাষ্ট্রপ্রতি দ্রৌপদী মুর্মুও। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করেন। তিনি জানান যে ২ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে নিহতদের পরিবারকে এবং ৫০ হাজার টাকা আহতদের।
তবে তীব্র আক্রমণ করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। এই ঘটনার জন্য তিনি দায়ী করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে এবং দাবি করেছেন যে গত ১০ বছরে, অর্থাৎ মোদি সরকারের আমলে, বেড়েছে রেল দুর্ঘটনা। এখানেই শেষ নয় তিনি আরো অভিযোগ করেন যে মোদি সরকারের জন্য প্রাণ যাচ্ছে সাধারণ মানুষের। অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এক হাত নেন রেল ও কেন্দ্র সরকারকে এবং দাবি করেন যে কোনভাবেই রেল এই বিপর্যয়ের দায় এড়াতে পারেনা। এছাড়াও তিনি আহতদের সঙ্গে দেখা করেন হাসপাতালে।
‘সাতসকাল’ আজ এই পর্যন্তই। আগামীকাল আমরা ফের আপনাদের কাছে ফিরে আসবো দিনের সব নজরকাড়া খবর নিয়ে। ধন্যবাদ। সুপ্রভাত।