নিউজ ডেস্ক: প্রিয় পাঠক প্রতিদিন সকালে বঙ্গ-ভারতী নিউজের তরফ থেকে আপনাদের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে গতকালের গুরুত্বপূর্ণ সব খবর। রাজ্য থেকে দেশ, কি ঘটলো গত ২৪ ঘন্টায়? দেখে নিন একনজরে এবং জেনে নিন বিস্তারিতভাবে।
নিট পরীক্ষায় দুর্নীতি মামলায় ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সিকে ভর্ৎসনা সুপ্রিম কোর্টের
দিন যত এগোচ্ছে তত চাপ বাড়ছে কেন্দ্রের নিট পরীক্ষায় দুর্নীতি মামলায়। এবার সুপ্রিম কোর্টের তোপের মুখে পড়লো ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি অথবা এনটিএ। শীর্ষ আদালতে মুখ পুড়লো তাদের। ভর্ৎসনা করা হলো তাদের। মঙ্গলবার, অর্থাৎ ১৮ই জুন, তাদের সাফ জানিয়ে দেওয়া হলো যে যদি কোন ভুল হয়ে থাকে তাদের থেকে তাহলে তারা যেন অবশ্যই স্বীকার করে। এখানেই শেষ নয় তাদের আরো জানানো হলো যে এরম শোচনীয় বিষয়ে তাদের নিরপেক্ষ হওয়া উচিত।
এদিন বিচারপতি বলেন, “পরীক্ষার্থীদের পরিশ্রম অবহেলা করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। যদি আপনাদের মনে হয় আপনাদের তরফ থেকে কোন গাফিলতি রয়েছে তাহলে সেটা একেবারেই শুধরে নেওয়া উচিত। এরাম একটা বিষয়ে আপনাদের নিরপেক্ষ হওয়া উচিত। যদি কিছু ভুল হয়ে থাকে তাহলে সেটা স্বীকার করুন। বলুন যে আপনারা ভুল করেছেন এবং সেটার জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছেন। এতে অন্তত মানুষের ভরসাটা থাকবে আপনাদের উপর।” এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে জুলাই মাসের ৮ তারিখে।
উল্লেখ্য, এই ঘটনার সঙ্গে আয়ুশ রাজ নামে এক ধৃত পুলিশকে বয়ান দেন যে টাকা দিয়ে তিনি যেই প্রশ্নপত্র পেয়েছিলেন, পরীক্ষার হলে গিয়ে দেখেন সেটা একেবারেই এক। তিনি বলেন, “গত ৪ঠা মে পাটনার লার্ন হোস্টেলে রাতে আমাকে নিয়ে গিয়ে প্রশ্নপত্র আর উত্তরপত্র, দুটোই দেওয়া হয়। ওরা আমাকে মুখস্ত অবধি করতে বলে। সেই সময়ে আমার সঙ্গে আরও ২০-২৫জন পরীক্ষার্থী ছিল। পরীক্ষার হলে গিয়ে আমি দেখি যে যেই প্রশ্নপত্র আমি টাকা দিয়ে পেয়েছিলাম, সেই একই প্রশ্নপত্র পরীক্ষা এসেছে।”
তবে এবার এর চেয়েও বড় চাপে পড়ে কেন্দ্র সরকার যখন বিহার সরকারের আর্থিক দুর্নীতি বিভাগের তরফ থেকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের পরীক্ষার্থীদের তলব করা হয় এবং সেই অনুযায়ী তারা তৈরি করা হয় একটি বিস্ফোরক রিপোর্ট। তাতে বলা হয়েছে যে ১৫ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা মূল্য প্রতিটি প্রশ্নপত্রের এবং তৈরি করা হয়েছিল একটি সলভার গ্যাং, যাদের দেওয়া হতো ১০ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা। বিভিন্ন কোচিং সেন্টার ও সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে প্রশ্ন বিক্রির জন্য এবং সলভার গ্যাং এদের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিজেদের কাজ করতো। তদন্তকারীদের অনুমান যে বিভিন্ন কোচিং সেন্টার ও পরীক্ষা মাফিয়াদের সাহায্যে এই দুর্নীতির জাল ছড়িয়েছে বেশকিছু রাজ্যে।
মঙ্গলবার কাকভোরে শান্তিপূর্ণভাবে কাঞ্চনজঙ্গা এক্সপ্রেসের সকল যাত্রী পৌঁছলো শিয়ালদহ স্টেশনে
একটা গোটা রাত ভয়তে কাটিয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের যাত্রীরা পৌঁছালেন শিয়ালদা স্টেশন। কোনভাবে গন্তব্যে পৌঁছে তারা স্বস্তির নিঃশ্বাস নেয়। অনেকে নেমেই কেঁদে ফেলেন। আবার অনেকে গতকাল কি ঘটেছিল, সেগুলি নিয়ে কথা বলতে শোনা যায়। এদিন স্টেশনে উপস্থিত ছিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম সহ একাধিক আধিকারিক। এতটাই ভয় পেয়েছিলেন সকলে যে অনেকে স্টেশনে নেমেই ফিরহাদ হাকিমকে জড়িয়ে কাঁদতে শুরু করে দেন। তবে কি হতে পারে, না পারে, সেই কথা মাথায় রেখে রাজ্যের তরফ থেকে ব্যবস্থা করা হয়েছিল অ্যাম্বুলেন্স ও বাস। কিন্তু সেগুলির প্রয়োজন পড়েনি কারণ সকলেই সুস্থ ছিল।
উল্লেখ্য, সোমবার, অর্থাৎ ১৭ই জুন, একটি ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা ঘটে নিজবাড়িতে। কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস শিয়ালদহ আসার সময়ে ধাক্কা খায় একটি মালগাড়ির সঙ্গে এবং এর জেরে পেছনের দুই কামরা হয়ে যায় বেলাইন। এই ঘটনায় আহত হয়েছে বেশ কয়েকজন এবং মৃত্যু হয়েছে কয়েকজনের। যদিও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সঙ্গে সেই মুহূর্তে উদ্ধারকাজে হাত লাগাতে দেখা যায় স্থানীয়দের। কিন্তু এমন ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে সকল বঙ্গবাসী।
এই ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। নিজের এক্স হ্যান্ডেল থেকে তৃণমূল সুপ্রিমো লেখেন, “এই দুর্ঘটনার খবর পেলাম এখন। কিছু জানতে পারিনি বিশদে এখনো। জেলাশাসক, চিকিৎসক, পুলিশ সুপার ও অ্যাম্বুলেন্স পৌঁছেছে সেখানে। শুরু হয়েছে উদ্ধারকাজ।” অন্যদিকে শোকপ্রকাশ করেন রাষ্ট্রপ্রতি দ্রৌপদী মুর্মুও। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করেন। তিনি জানান যে ২ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে নিহতদের পরিবারকে এবং ৫০ হাজার টাকা আহতদের।
তবে তীব্র আক্রমণ করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। এই ঘটনার জন্য তিনি দায়ী করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে এবং দাবি করেছেন যে গত ১০ বছরে, অর্থাৎ মোদি সরকারের আমলে, বেড়েছে রেল দুর্ঘটনা। এখানেই শেষ নয় তিনি আরো অভিযোগ করেন যে মোদি সরকারের জন্য প্রাণ যাচ্ছে সাধারণ মানুষের। অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও একহাত নেন রেল ও কেন্দ্র সরকারকে এবং দাবি করেন যে কোনভাবেই রেল এই বিপর্যয়ের দায় এড়াতে পারেনা। এছাড়াও তিনি আহতদের সঙ্গে দেখা করেন হাসপাতালে।
‘সাতসকাল’ আজ এই পর্যন্তই। আগামীকাল আমরা ফের আপনাদের কাছে ফিরে আসবো দিনের সব নজরকাড়া খবর নিয়ে। ধন্যবাদ। সুপ্রভাত।