নিউজ ডেস্ক: প্রিয় পাঠক প্রতিদিন সকালে বঙ্গ-ভারতী নিউজের তরফ থেকে আপনাদের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে গতকালের গুরুত্বপূর্ণ সব খবর। রাজ্য থেকে দেশ, কি ঘটলো গত ২৪ ঘন্টায়? দেখে নিন একনজরে এবং জেনে নিন বিস্তারিতভাবে।
সুপ্রিম কোর্টের তরফ থেকে খারিজ করে দেওয়া হল হাতরাস পদপিষ্ট কাণ্ড নিয়ে দায়ের জনস্বার্থ মামলা
হাতরাসে ভোলে বাবার সৎসঙ্গ অনুষ্ঠানে পদপৃষ্ঠ হয়ে মৃত্যু হয় অনেকের। এরপরই তদন্ত নামে পুলিশ এবং গ্রেপ্তার করা হয় ছয়জন সেবাদারকে। মূল সেবাদার মধুকরও এই মুহূর্তের পুলিশের হাতে বন্দি। তবে ভোলে বাবা এখনো পুলিশের জালে আসেনি তবে তার নামে দিল্লিতে একটি এফআইআর হয়েছে। যা উত্তরপ্রদেশে নেই। যদিও ভোলে বাবার আইনজীবী বক্তব্য যে তদন্তে সবরকমভাবে সহযোগিতা করবে তাঁর মক্কেল। এমনকি ভোলেবাবাও এক সাংবাদিক সাক্ষাৎকারে নিজের মত প্রকাশ্যে এনেছেন এই ঘটনা প্রসঙ্গে।
এমন পরিস্থিতিতে মৃতদের পরিবার ও আহতদের সঙ্গে দেখা করতে যান কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। তাদের সমস্যার কথা শুনে তিনি সবরকমভাবে পাশে থাকার আশ্বাস দেন। পাশাপাশি, সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয় তিনি জানিয়ে দেন যে তিনি এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করবেন না। তবে তিনি উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কাছে অনুরোধ করেন যেন মনখোলাভাবে আর্থিক সাহায্য করা হয় ক্ষতিগ্রস্তদের।
সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের তরফ থেকেও একটি তদন্ত কমিটি গড়ে তোলা হয় পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখার জন্য এবং সাতদিনের মধ্যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল রিপোর্ট জমা দেওয়ার। তবে তার আগেই সেই বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) একটি সাড়ে আটশো পাতার রিপোর্ট জমা দেন যাতে সেদিনকার পরিস্থিতি পাশাপাশি আয়োজকদের ভূমিকার কথাও তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়াও দাবি করা হয়েছে যে এটি একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রও হতে পারে। জানা গিয়েছে সে রিপোর্টের ভিত্তিতেই যোগী আদিত্যনাথের সরকার পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।
তবে সম্প্রতি হাতরাস কান্ড নিয়ে শীর্ষ আদালতে একটি মামলা দায়ের হয়েছিল। সেটি ছিল একটি জনস্বার্থ মামলা। তাতে দাবি করা হয়েছিল যেন এই ঘটনার তদন্ত করার জন্য একটি পাঁচ সদস্যের কমিটি গড়া হোক তাতে নেতৃত্ব দিক সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি। যদিও শুক্রবার, অর্থাৎ ১২ই জুলাই, মামলা খারিজ করে দেয় শীর্ষ আদালত।
সুপ্রিম কোর্টের বক্তব্য যে এমন মামলাকে জনস্বার্থ মামলা হিসেবে শীর্ষ আদালতে আনা অযৌক্তিকর। এছাড়াও মামলাকারীদের এদিন হাইকোর্টে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চের তরফ থেকে। তাদের স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয় যে এই আবেদন সোনার এক্তিয়ার রয়েছে একমাত্র হাইকোর্টের।
প্রশ্ন: এবার দেখার বিষয় যে শেষ পর্যন্ত আরো কি ধরা পড়ে বিশেষ তদন্তকারী দলের (সিট) সেই রিপোর্টে? পরবর্তী পদক্ষেপ কি নেওয়া হয় উত্তরপ্রদেশ সরকারের তরফ থেকে? ভোলে বাবাকে জালে নেওয়ার জন্য কি পরিকল্পনা করবেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ? উঠে আসবে কার বা কাদের নাম? কি হবে সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া? শেষ পর্যন্ত কতদূর গড়াবে জল? সব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে আর কিছুদিনের মধ্যে।
ইডির অভিযোগের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন আম আদমি পার্টি সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে
সম্প্রতি আবগারি দুর্নীতি মামলায় জেলে পাঠানো হয় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে। এরপরই কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামে দলের সকল কর্মী থেকে শুরু করে নেতা ও মন্ত্রীরা। সাহায্যের হাত বাড়ায় ইন্ডিয়া জোটও। জল গড়ায় দিল্লির আদালত থেকে শুরু করে শীর্ষ আদালত অবধি। এরপর নির্বাচনের জন্য তাঁকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেওয়া হলেও নির্বাচন শেষে তিনি আবার ফিরে যান কারাগারে।
এরপরে লাগাতার আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয় আপের তরফ থেকে কেজরির মুক্তির জন্য। তবে এতকিছু করেও জেল থেকে আর ছাড়া পাচ্ছেনা আম আদমি পার্টি সুপ্রিমো। বুধবার, অর্থাৎ ৩রা জুলাই, ইডি ও সিবিআইয়ের জোড়া আবেদনে আরো তাঁর জেলের মেয়াদ বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হল দিল্লির রাউস এভিনিউ আদালতের তরফ থেকে। আদালতের নির্দেশ আগামী ১২ জুলাই পর্যন্ত জেলে থাকতে হবে কেজরিকে।
এমনকি এদিন কেজরিওয়ালের তরফ থেকে আবেদন করা হয় অন্তত জেলে তাঁর চিকিৎসা চলাকালীন তাঁর স্ত্রী সুনিতাকে যেন থাকতে দেওয়া হয়। কিন্তু সেটিও স্থগিত রাখে তারা। যদিও পুরোপুরি নাকচ করা হয়নি আদালতের তরফ থেকে এবং জানানো হয়েছে যে এই মামলার রায়দান দেয়া হবে চলতি মাসের ৬ তারিখে।
তবে অবশেষে শুক্রবার, অর্থাৎ ১২ই জুলাই, এবার ইডির অভিযোগের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্ট অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেন অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে। কিন্তু তবুও তাঁকে এখনো থাকতে হবে জেলে কারণ ইডি ছাড়া কেজরিকে গ্রেপ্তার করেছে সিবিআইও। সিবিআইয়ের অভিযোগে এখনো স্বস্তি মেলেনি তাঁর। যদিও এই নৈতিক জয়কে নিয়ে খুশি আব শিবির দলের নেতার রাঘব চাড্ডা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে লিখেছেন “সত্যমেব জয়তে”।
প্রশ্ন: এবার দেখার বিষয় যে শেষ পর্যন্ত আর কি পদক্ষেপ নেওয়া হয় আম আদমি পার্টির তরফ থেকে। তারা কি পারবে কেজরিকে কারাগার থেকে বার করে আনতে? এবার কি ময়দানে নামবে ইন্ডিয়া জোট কেজরিকে সাহায্যের হাত বাড়াতে? সংসদ কি উত্তাল হবে এই বিষয়ে? পাল্টা চাপে পড়বেনা তো ভারতীয় জনতা পার্টি? সব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে আর কিছুদিনের মধ্যে।
‘সাতসকাল’ আজ এই পর্যন্তই। আগামীকাল আমরা ফের আপনাদের কাছে ফিরে আসবো দিনের সব নজরকাড়া খবর নিয়ে। ধন্যবাদ। সুপ্রভাত।