সৃষ্টিরচনার পূর্বে সমস্ত আত্মার আত্মা এক পূর্ণ পরমাত্মাই ছিলেন
সৃষ্টিরচনার পূর্বে সমস্ত আত্মার আত্মা এক পূর্ণ পরমাত্মাই ছিলেন। না ছিল দ্রষ্টা না দৃশ্য। দৃষ্টিভেদে সৃষ্টির মধ্যে যে বিভিন্নভাব দেখা যায়, তাও তিনিই। তিনি তখন একলা থাকতে ইচ্ছা করেছিলেন তাঁর ইচ্ছাশক্তিরূপা মায়া তৎস্বরূপে লীন ছিল। তিনি স্বরূপত দ্রষ্টা হলেও কোনো দৃশ্য তাঁর চোখে পড়ত না, কারণ তিনি তখন এক ও অদ্বিতীয়রূপে প্রকাশিত ছিলেন। এই অবস্থায় তিনি নিজেকে অসতের মতো, না থাকার মতো, নিজেই যেন নেই, এইরকম মনে করতেন। প্রকৃতপক্ষে তিনি অ-সৎ ছিলেন না, কারণ তাঁর শক্তিসমূহ লীন অবস্থায় ছিল। তাঁর জ্ঞান লুপ্ত ছিল না। এই দ্রষ্টা ও দৃশ্যকে অনুসন্ধানকারী শক্তিই কার্যকারণরূপা মায়া।
দেবদীপাবলি/কার্তিগাই দীপাম/রাস পূর্নীমা
আজ গোটা ভারতবর্ষে আলোর উৎসব। আজ দেব দীপাবলি। উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব, পশ্চিম জুড়ে আজ সনাতনী দের আলোর উৎসব – দেবদীপাবলি। ভগবান শিবের ভক্তগন এবং ভগবান বিষ্ণুর ভক্তগন আজ উভয়ই তাদের ভগবানকে পূজা করবেন। পুরাণ এবং মহাভারত অনুযায়ী কার্তিক পূর্ণিমায় ভগবান শিব ব্রহ্মার বর প্রাপ্ত দুর্বধ্য ত্রিপুরাসুরকে বধ করেন এবং দেবতাদের স্বর্গ ফিরিয়ে দেন। এর পর থেকেই ভগবান শিবের আর এক নাম হয়, ত্রিপুরান্টকা। দেবতারা ভগবান শিবকে কৃতজ্ঞতা জানাতে আলোর উৎসবের আয়োজন করেন। এই উৎসবকেই পশ্চিম ও উত্তরভারত (কাশীতে এই উৎসব বিশেষভাবে পালন হয়) দেবদীপাবলি হিসেবে পালন করে এবং দক্ষিণ ভারত (কেরালা, তামিলনাড়ু) ‘কার্তিগাই দীপাম’ নামে এই উৎসব পালন করে। বাঙালির ভাইফোঁটায় যেমন বোনেরা ভাইদের জন্য ঈশ্বরের কাছে শুভ কামনা করে, তেমন দক্ষিণ ভারতের বোনেরা আজকের দিনে ভাইয়দের জন্য ঈশ্বরের কাছে শুভ কামনা করে। এই দিন শিব ভক্তরা আলো জ্বালিয়ে অজ্ঞানকে নির্মূল করার জন্য ভগবান শিবের ধ্যান করেন। জ্ঞান প্রাপ্তির জন্য প্রার্থনা করেন। আর এই দিনটি যদি সোমবারে আসে তাহলে তা অতি উত্তম বলে মানা হয়।
কার্তিক পূর্ণিমায় সনাতনীদের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব হল, রাস উৎসব। এই কার্তিক পূর্ণিমা তিথিতেই কৃষ্ণ ভগবান যুমনার তীরে গোপিনীদের সাথে লীলা করেন। সেই সময় উপস্থিত সকল গোপিনীর কৃষ্ণত্ব প্রাপ্তি ঘটেছিল। আধ্যাত্মিক জগতে এই অবস্থার গুরুত্ব অপরিসীম। ভগবানের রাসলীলার আধ্যাত্মিক ব্যাখ্যানুযায়ী গোপিনীরা ছিলেন জন্মজন্মান্তরের এক একজন সাধক। লীলা অন্তে এঁরা সকলেই কৃষ্ণত্ব লাভ করেন।
সমাধিশ্বরা মন্দির ও রাজপুতদের বিজয় স্তম্ভ
চিত্তর দূর্গের ভিতর এই শিব মন্দিরটির নাম – সমাধিশ্বরা মন্দির। একাদশ শতাব্দীতে তৈরী এই মন্দির ভগবান শিবের প্রতি উৎসর্গিত। এই মন্দিরের ভিতরে ভগবান শিবের ত্রিমূর্তি পূজা হয়। মন্দিরের কাঠামোটি একদম বুজে থাকা পদ্ম পাপড়ির মতো। মন্দিরের দেওয়াল জুড়ে মানুষের জীবনের বিভিন্ন স্তরের ঘটনা খোদাই করা পাথরের উপর। মন্দিরটি একটি জলাশয়ের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। জলাশয়টি গোমুখ আকৃতির। তাই এই জলাশয়টির নাম গোমুখ জলাশয়। মন্দিরের সামনে খোলা দেওয়ালের একটি নন্দী মন্দির করা আছে। জৈন মন্দির গুলির আদলে মন্দিরটি তৈরি।
মন্দিরের একদম মুখোমুখি বেশ খানিকটা দূরে ফোর্টের মধ্যেই দাঁড়িয়ে আছে রাজপুতদের বিজয় স্তম্ভ। ১৪৪৮ সালে হিন্দু রাজা রানা কুম্ভ তৎকালীন গুজরাট সুলতান মহম্মদ খিলজিকে যুদ্ধে পরাজিত করে এই বিজয় স্তম্ভটি নির্মাণ করেন। স্তম্ভটি ভগবান বিষ্ণুর প্রতি উৎসর্গিত। স্তম্ভটি নয় তলার। এর উচ্চতা ১২২ ফুট। একদম উপরের তলায় জৈন দেবী পদ্মাবতীর মূর্তি আছে জানা যায়।
পাথর খোদাই করা মন্দির এবং বিজয় স্তম্ভের নকশা মনমুগ্ধকর। বিজয় স্তম্ভ আর মন্দিরের মাঝখানে রানীমা পদ্মিনীর জৌহার কুন্ড টি অবস্থিত।
#তুলসী_পুজন_দিবস সকলকে জানাই শুভেচ্ছা
তুলসী পাতা শুধু পুজো-অর্চনাতেই লাগে না ৷ তুলসী পাতার অনেক গুণ রয়েছে ৷ আয়ুর্বেদে তুলসীকে ভেষজের আখ্যা দেওয়া হয় ৷ চলুন এই ভেষজের গুণগুলো জেনে নিই ৷
🔹(ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ব্যবহার/ প্রয়োগ করবেন না) ❌
🔸জ্বর হলে জলের মধ্যে তুলসী পাতা, গোল মরিচ এবং মিশ্রী মিশিয়ে ভাল করে সেদ্ধ করুন ৷ অথবা তিনটে দ্রব্য মিশিয়ে বড়ি তৈরি করুন ৷ দিনের মধ্যে তিন-চার বার ঐ বড়িটা জলের সঙ্গে খান ৷ জ্বর খুব তাড়াতাড়ি সেরে যাবে।
🔸কাশি যদি না কমে সেই ক্ষেত্রে তুলসী পাতা এবং আদা পিষে মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খান ৷ এতে উপকার পাবেন।
পেট খারাপ হলে তুলসীর ১০ টা পাতা সামান্য জিরের সঙ্গে পিষে ৩-৪ বার খান ৷ পায়খানা একেবারে বন্ধ হয়ে যাবে, মানে পায়খানার ওই সমস্যাটা আর কি!
🔸মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে দিনে ৪-৫ বার তুলসী পাতা চেবান।
ঘা যদি দ্রুত কমাতে চান তাহলে তুলসী পাতা এবং ফিটকিরি একসঙ্গে পিষে ঘা এর স্থানে লাগান, কমে যাবে।
🔸শরীরের কোন অংশ যদি পুড়ে যায় তাহলে তুলসীর রস এবং নারকেলের তেল ফেটিয়ে লাগান, এতে জ্বালা কমবে। পোড়া জায়গাটা তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যাবে, সেখানে কোন দাগ থাকবে না।
ত্বকের চমক বাড়ানোর জন্য, এছাড়াও ত্বকের বলীরেখা এবং ব্রোন দূর করার জন্য তুলসী পাতা পিষে মুখে লাগান।
বুদ্ধি এবং স্মরণশক্তি বাড়ানোর জন্য প্রতিদিন ৫-৭ টা তুলসী পাতা চিবান।
🔸প্রস্রাবে জ্বালা হলে তুলসী পাতার রস ২৫০ গ্রাম দুধ এবং ১৫০ গ্রাম জলের মধ্যে মিশিয়ে পান করুন। উপকার পাবেন।
ত্বকের সমস্যা দূর করতে তিল তেলের মধ্যে তুলসী পাতা ফেলে হালকা গরম করে ত্বকে লাগান।
🔸শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যা
ঠান্ডা লাগলে তুলসী পাতা ম্যাজিকের মতো কাজ করে। গলার সব রকম সমস্যায় তুলসী পাতা ব্যবহৃত হয়।
🔸হার্টের অসুখ
তুলসী পাতায় আছে ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই উপাদানগুলো হার্টকে বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্ত রাখে সহায়তা করে। তুলসী পাতা হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়ায় ও এর স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
🔸মানসিক চাপ
তুলসীর ভিটামিন সি ও অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো মানসিক চাপ কমাতে সহায়তা করে। এই উপাদানগুলো নার্ভকে শান্ত করে। এ ছাড়াও তুলসী পাতার রস শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
🔸মাথা ব্যথা
মাথা ব্যথা ও শরীর ব্যথা কমাতে তুলসী খুবই উপকারী। এর বিশেষ উপাদান মাংশপেশীর খিঁচুনি রোধ করতে সহায়তা করে।
🔸বয়স রোধ করা
ভিটামিন সি, ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস ও এসেন্সিয়াল অয়েলগুলো চমৎকার অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের হিসেবে কাজ করে যা বয়সজনিত সমস্যাগুলো কমায়। তুলসী পাতাকে যৌবন চিরকাল ধরে রাখার টনিক ও মনে করেন কেউ কেউ।
🔸রোগ নিরাময় ক্ষমতা
তুলসী গাছের ঔষধি-গুণাবলি সমৃদ্ধ গাছ। তুলসীকে নার্ভের টনিক বলা হয় এবং এটা স্মরণশক্তি বাড়ানোর জন্য বেশ উপকারী। এটি শ্বাসনালী থেকে শ্লেষ্মাঘটিত সমস্যা দূর করে। তুলসী পাতা পাকস্থলীর ও কিডনির স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
🔸পোকার কামড়
তুলসী পাতা হল প্রোফাইল্যাক্টিভ যা পোকামাকড় কামড়ে দিলে উপসম করতে সক্ষম। পোকার কামড়ে আক্রান্ত স্থানে তুলসী পাতার তাজা রস লাগিয়ে রাখলে পোকার কামড়ের ব্যথা ও জ্বলা থেকে কিছুটা মুক্তি পাওয়া যায়।
🔸ত্বকের সমস্যা
তুলসী পাতার রস ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। তুলসী পাতা বেঁটে সারা মুখে লাগিয়ে রাখলে ত্বক সুন্দর ও মসৃণ হয়। এ ছাড়াও তিল তেলের মধ্যে তুলসী পাতা ফেলে হালকা গরম করে ত্বকে লাগালে ত্বকের যে কোনও সমস্যায় বেশ উপকার পাওয়া যায়। এ ছাড়াও ত্বকের কোনও অংশ পুড়ে গেলে তুলসীর রস এবং নারকেলের তেল ফেটিয়ে লাগালে জ্বালা কমবে এবং সেখানে কোনও দাগ থাকবে না।