নিউজ ডেস্ক: প্রিয় পাঠক দিনের শেষে বঙ্গ-ভারতী নিউজের তরফ থেকে আপনাদের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে দিনের গুরুত্বপূর্ণ সব খবর। রাজ্য থেকে দেশ, কি ঘটলো ‘আজ সারাদিন’? দেখে নিন একনজরে এবং জেনে নিন বিস্তারিতভাবে।
একরাতের মধ্যে আরো দুটি নোটিশ জাতীয় কংগ্রেসকে ধরালো আয়কর বিভাগ
আর মাত্র কদিন! তারপরেই লোকসভা নির্বাচন। যদিও অনেক আগে থেকেই বুদ্ধিযুদ্ধের খেলায় নেমে গেছিল সমস্ত রাজনৈতিক দল। তবে দিন যতো এগোচ্ছে, ততো আক্রমণের ঝাঁজ বাড়াচ্ছে কেন্দ্র সরকার। বিরোধীদের দুর্বল করতে লাগাতার চাপ বাড়িয়ে যাচ্ছে গেরুয়া শিবির। কখনো পশ্চিমবঙ্গে এজেন্সি হানা, তো কখনো দিল্লির আপ সরকারের নেতা-মন্ত্রীদের তলব। সবমিলিয়ে, এই মুহূর্তে শাসকদল, অর্থাৎ বিজেপি, রীতিমতো ব্যাকফুটে ফেলে দিয়েছে সমস্ত বিরোধী দলগুলিকে।
কিন্তু এই সবকিছুর মাঝে আরো বড় চাপে পড়লো জাতীয় কংগ্রেস। ইতিমধ্যেই ১৮২৩ কোটি টাকার একটি নোটিশ পাঠানো হয়েছিল কংগ্রেসকে আয়কর বিভাগের তরফ থেকে, যার পরে রীতিমতো ক্ষুব্ধ হয় হাত শিবির। তবে ব্যাপার এখানে শেষ হয়নি। একরাতের মধ্যে আরও দুটি নোটিশ পাঠানো হয় তাদের তরফ থেকে। এমনটাই দাবি করেছেন দলের প্রবীণ নেতা জয়রাম রমেশ। এই পদক্ষেপকে প্রতিহিংসার রাজনীতির তকমা দিয়ে তিনি লড়াই থেকে না সরে আসার ইঙ্গিত দিয়েছেন।
হাত শিবিরের মিডিয়া প্রধান বলেন, “শুক্রবার জাতীয় কংগ্রেসকে ১৮০০ কোটি টাকারও বেশি একটি নোটিশ ধরানো হয়েছে আয়কর বিভাগের তরফ থেকে। কিন্তু একরাতের মধ্যেই আরো দুটো নোটিশ ওদের তরফ থেকে? এটাকে সম্পূর্ণ প্রতিহিংসার রাজনীতি ছাড়া কিছুই বলেনা।”
এখানেই শেষ নয়, জয়রাম রমেশ এটিকে ‘ট্যাক্স টেররিজম’ বলেও দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “তবে শুধু প্রতিহিংসার রাজনীতি নয়, মোদি সরকার একরকমের ট্যাক্স টেররিজম চালাচ্ছে। তবে আমরা বলে রাখার প্রয়োজন মনে করি যে জাতীয় কংগ্রেস কোনোভাবেই লড়াই থেকে সরে দাঁড়াবেনা। আসলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কংগ্রেস ও ইন্ডিয়া জোটকে ভয় পেয়েছেন এবং সেই কারণেই উনি বিরোধীদের পঙ্গু করতে চাইছেন।” প্রসঙ্গত, এখনো পর্যন্ত আয়কর বিভাগের তরফ থেকে এই বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
উল্লেখ্য, বরাবরই জাতীয় কংগ্রেসের তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে যে ভারতীয় জনতা পার্টি তাদের ভয় পায়। সম্প্রতি, দলনেত্রী সোনিয়া গান্ধী এক সাংবাদিক সম্মেলনে দাবি করেছিলেন যে বিজেপি সবরকমভাবে চেষ্টা করছে তাদের দুর্বল করার, কিন্তু তবুও তারা এই লড়াই চালিয়ে যাবেন। এছাড়াও কংগ্রেস নেত্রী আরো জানিয়েছেন যে লাগাতার এরম পদক্ষেপ গণতন্ত্রে বড়সড় আঘাত আনছে। এবার দেখার বিষয় যে লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে ঠিক কি চাল চালা হয় কংগ্রেসের তরফ থেকে।
মথুরাপুরের জনসভা থেকে বিজেপিকে বড় চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন অভিষেক বন্দোপাধ্যায়
লোকসভা নির্বাচন ঘোষণা হতেই হইচই পড়ে যায় গোটা বাংলায়। যদিও অনেক আগেই প্রচারে নেমে পড়েছিল সমস্ত রাজনৈতিক দল। তবে দিনক্ষণ ঘোষণা হওয়ার পর, সেই ব্যস্ততা নিয়ে নেয় এক আলাদা রূপ। এছাড়া আক্রমণ ও পাল্টা-আক্রমণ তো লেগেই রয়েছে রাজ্যের দুই প্রধান দল তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপির তরফ থেকে। সবমিলিয়ে, বেঙ্গল পরিণত হয়েছে ব্যাটেলগ্রাউন্ডে।
কিন্তু এমন আবহাওয়ায় ফের কেন্দ্র সরকারকে, অর্থাৎ ভারতীয় জনতা পার্টিকে, চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিল তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মথুরাপুরের জনসভা থেকে ঘাসফুল শিবিরের সেনাপতি স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন যে সমস্ত প্রার্থীই প্রত্যাহার করবে শাসকদল যদি গেরুয়া শিবির আগামী ৫ বছর বিনামূল্যে রান্নার গ্যাস ও নিজেদের শাসিত রাজ্যগুলিতে লক্ষীর ভান্ডারে দেড় হাজার টাকা করে দেন।
শনিবার, অর্থাৎ ৩০শে মার্চ, মথুরাপুরে একটি জনসভা আয়োজন করা হয় তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে। এদিনের সভায় দলের হয়ে প্রচার করতে আসেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দলীয় কর্মী ও সমর্থকদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। শুধু মথুরাপুর নয়, ঘাসফুল শিবিরের ভবিষ্যতের নক্ষত্রকে দেখার জন্য ভিড় জমিয়েছিলেন অন্যান্য জেলার সাধারণ মানুষও।
কিন্তু এদিন সভামঞ্চ থেকে দলের যুবরাজ রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন মোদি সরকারকে। মঞ্চে এসেই প্রথমে সকল সবুজ সৈনিকদের ধন্যবাদ জানান। এরপরই আক্রমণে নামেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। একাধিক ইস্যুকে কেন্দ্র করে তোপ দাগেন তিনি এবং এরপরই করে বসেন বড় মন্তব্য। তিনি বলেন, “আগামী ৫ বছর ওরা বিনামূল্যে রান্নার গ্যাস দিয়ে দেখাক, আমি বলছি সব প্রার্থীই প্রত্যাহার করে নেবে তৃণমূল কংগ্রেস।”
এরপরই আরো একটি শর্ত দেন তিনি। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিজেপি নেতারা বলছেন যে ক্ষমতায় এলে লক্ষীর ভান্ডারে তিন হাজার টাকা করে দেবেন সকল মহিলাকে। ১৭টা রাজ্যে তো আপনারা ক্ষমতায় আছেন, কোথাও একা আবার কোথাও জোটে। উত্তরপ্রদেশ, গুজরাট, রাজস্থান, এখানে তো আপনাদের সরকার আছে এবং এখানে তৃণমূল কংগ্রেসও নেই। এরমধ্যে অন্তত একটি রাজ্যে আপনারা লক্ষীর ভান্ডার চালু করে দেখান। তিন হাজার টাকা দিতে হবেনা, আপনারা দেড় হাজার টাকাই দিন। আমি বলছি আমি রাজনীতি ছেড়ে দেবো।” প্রসঙ্গত, এদিন মঞ্চ থেকে অভিষেক বন্দোপাধ্যায় উপস্থিত সকলকে প্রশ্ন করেন “দিদির গ্যারান্টি না মোদির গ্যারান্টি?”
‘আজ সারাদিন’ আজ এই পর্যন্তই। আগামীকাল আমরা ফের আপনাদের কাছে ফিরে আসবো দিনের সব নজরকাড়া খবর নিয়ে। ধন্যবাদ। শুভরাত্রি।