নিউজ ডেস্ক: প্রিয় পাঠক দিনের শেষে বঙ্গ-ভারতী নিউজের তরফ থেকে আপনাদের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে দিনের গুরুত্বপূর্ণ সব খবর। রাজ্য থেকে দেশ, কি ঘটলো ‘আজ সারাদিন’? দেখে নিন একনজরে এবং জেনে নিন বিস্তারিতভাবে।
“আবগারি দুর্নীতি মামলায় যুক্ত বিজেপিই” বিস্ফোরক আপ নেতা সঞ্জয় সিং
দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলায় নতুন টুইস্ট! জামিন পেয়েই বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন আপ নেতা সঞ্জয় সিং। শুক্রবার এক সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে, গোটা দুর্নীতির অভিযোগ তিনি সরাসরি চাপালেন বিজেপির উপর। জামিন পাওয়ার নেতা দাবি করলেন যে এই কেলেঙ্কারির সঙ্গে আম আদমি পার্টির কোন যোগ নেই, বরং বিজেপিই। এখানেই শেষ নয়, তিনি আরও দাবি করেন যে ষড়যন্ত্র করে গ্রেফতার করা হয়েছে দলের সুপ্রিমো, তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে।
সঞ্জয় সিং বলেন, “দিল্লির মদ কেলেঙ্কারিতে আম আদমি পার্টির কোন হাতই নেই। এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত বিজেপিই। ওদের দলের অনেক বড় বড় নেতারা এই কাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। এছাড়াও আমি এটা বলে রাখার প্রয়োজন মনে করি যে দলের সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়ালে গ্রেফতারি একটা ষড়যন্ত্র ছাড়া কিছুই নয়। অভিযুক্তদের কথা ততক্ষণ অবধি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছিলোনা যতক্ষণ না ওরা কেজরিওয়ালের নাম নিচ্ছিল। যেই ওনার নামটা নেওয়া হয়, তখনই সব গ্রহণযোগ্য হয়ে গেল। সেই বয়ানগুলোর ভিত্তিতেই গ্রেফতার করা হয় অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে। কি করে সম্ভব?”
এরপরই সঞ্জয় সিং প্রসঙ্গ তোলেন বিজেপি নেতা মাগুন্তা রেড্ডি ও তাঁর ছেলে রাঘব মাগুন্তার। তিনি বলেন, “ওরা দুজনেই এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। চাপে পড়ে তিনি অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে বিবৃতি দিয়েছেন। ৯টি বয়ানে কিছুই ছিলোনা। দশম বয়ানে ওঠে কেজরিওয়ালের নাম। যেই ১৬ই জুলাই তিনি জবানবন্দি দেন, ঠিক তখনই ১৮ই জুলাই তিনি জামিন পান। ওনার ছবি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে রয়েছে এবং তা দিয়েই উনি টিডিপি দল থেকে সাংসদ নির্বাচনে লড়াইয়ে নেমেছেন।”
উল্লেখ্য, মার্চ মাসের শেষেরদিকে আবগারি দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। এরপরই দলের নেতাদের তরফ থেকে রাজধানীর রাজপথে বিক্ষোভে নামা হয় এবং তাঁরা ধস্তাধস্তিতে জড়ায় পুলিশের সঙ্গে। যদিও আপ সুপ্রিমো সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন যে জেলের ভিতর থেকেই তিনি দিল্লির মানুষের হয়ে কাজ করে যাবেন। এছাড়াও ইন্ডিয়া জোটের তরফ থেকে রামলীলা ময়দানে একটি প্রতিবাদ সভা করা হয় এবং সকল প্রভাবশালী নেতারাই বিজেপিকে কটাক্ষ করেন এবং এজেন্সিরাজের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলেন। অন্যদিকে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর স্ত্রী সুনিতা কেজরিওয়াল সকলকেই জানান যে অরবিন্দ কেজরিওয়াল একজন সিংহ এবং তাঁকে বিজেপি বেশিদিন জেলে বন্দী করে রাখতে পারবেনা।”
“এনআরসি বা সিএএ আমরা মানছিনা এবং আগামীদিনে মানবনা”: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
লোকসভা নির্বাচনের আগে ফের সিএএ নিয়ে সুর চড়ালেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, তথা তৃণমূল সুপ্রিমো, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার কোচবিহারের সভা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সবাইকে নাগরিকত্ব দেওয়ার আশ্বাস জানান। এবার তারই পাল্টা দিলেন তৃণমূল নেত্রী। শুক্রবার তুফানগঞ্জের সভা থেকে তিনি সাফ জানিয়ে দিলেন যে তিনি কোনভাবেই সিএএ হতে দেবেন না রাজ্যে। এখানেই শেষ নয়, তিনি উপস্থিত সকলকে বলেন যে দশ বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী হয়ে থাকা সত্ত্বেও কিভাবে দাবি করা হয় যে আপনারা নাগরিক নন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এনআরসি বা সিএএ আমরা মানছিনা এবং আগামীদিনে মানবনা। আমি বা আমার সরকার থাকতে, এটা কোনদিনই চালু হবেনা আমাদের রাজ্যে। এটা ভালো করে মনে রাখবেন যে আপনাদের ভোটে কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রী হয়। আপনারা কখনো এটা ভেবে দেখেছেন যিনি ১০ বছর ধরে প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসে রয়েছেন, তিনি কি করে বলতে পারেন যে আপনারা নাগরিক নন। একবার আপনারা নিজেদের এটা প্রশ্ন করে দেখুন।”
তিনি আরো বলেন, “আপনারা জানেন ওরা কেন সিএএ চালু করেছে? ওরা চায় আপনাদের বিদেশি বানাতে। একবার চিন্তা করে দেখুন যে ব্যাপারটা যদি এতই সহজ হতো, তাহলে বিজেপি নেতারা কেন এতে আবেদন করছেন না? আবারো বলছি আপনাদের যে সিএএ হল মাছের মাথা আর এনআরসি হচ্ছে লেজটা। একবার আবেদন করলেই আপনি বিদেশী হয়ে যাবেন। একবার অসমের দিকে দেখুন। কত লোক মারা গেছে দাঙ্গায়? আপনাদের ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখা হবে এবং বলা হবে যে বাংলাদেশ থেকে মা-বাবার সার্টিফিকেট নিয়ে আসুন। আপনারা তখন আনতে পারবেন তো?”
এছাড়াও এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাম না করে নিশানা করেন প্রাক্তন বিচারপতি, তথা তমলুকের বিজেপি প্রার্থী, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে। তিনি বলেন, “আপনারা তো ভালো করেই দেখেছেন একজন বিচারপতির পদে বসে কি কি করে বেরিয়েছে। উনি আবার এখন তৃণমূলকে গালাগালি দিয়ে বেড়াচ্ছে। আমিও ঠিক ওর বিরুদ্ধে একজন ছাত্রনেতাকেই দাঁড় করিয়েছি। দেবাংশু ওকে ছুুটিয়ে বেড়াক। আপনি বিচারপতি থাকাকালীন চাকরি খেয়েছেন অজস্র ছেলেমেয়ের। এবার আপনার বিচার হবে এবং তা করবে জনতা। মিলিয়ে নেবেন এবার জনগণ আপনার চাকরি খাবে কারণ দিনের শেষে এটার জনতার আদালত। এবার আপনি সব উত্তর ভালো করে পেয়ে যাবেন।”
‘আজ সারাদিন’ আজ এই পর্যন্তই। আগামীকাল আমরা ফের আপনাদের কাছে ফিরে আসবো দিনের সব নজরকাড়া খবর নিয়ে। ধন্যবাদ। শুভরাত্রি।