নিউজ ডেস্ক: প্রিয় পাঠক দিনের শেষে বঙ্গ-ভারতী নিউজের তরফ থেকে আপনাদের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে দিনের গুরুত্বপূর্ণ সব খবর। রাজ্য থেকে দেশ, কি ঘটলো ‘আজ সারাদিন’? দেখে নিন একনজরে এবং জেনে নিন বিস্তারিতভাবে।
লোকসভা নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের বিরোধিতা করতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলো জাতীয় কংগ্রেস
গতমাসে অনুপ পান্ডের অবসর এবং গত শনিবার অরুণ গোয়েলের হঠাৎ ইস্তফা খালি করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশনারের দুই পদ। এমন পরিস্থিতিতে ওই দুই শূন্য পদে নিয়োগ হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। চলতি মাসের ১৫ তারিখে এই বিষয়ে বৈঠকে বসতে চলেছে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি প্যানেল, যাতে থাকেন একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং বিরোধী দলনেতা। আগে এই প্যানেলে থাকতেন দেশের প্রধান বিচারপতি।
এবার লোকসভা নির্বাচনের আগে এই নিয়োগের বিরোধিতা করতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল জাতীয় কংগ্রেস। বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশের হাত শিবিরের এক নেত্রী জয়া ঠাকুর শীর্ষ আদালতের কাছে আবেদন করেছেন যেন কোনভাবেই কেন্দ্রীয় সরকার, অর্থাৎ ভারতীয় জনতা পার্টি, নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ না করতে পারে।
যদিও এই নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ মামলা নিয়ে জটিলতা চলছে বহুদিন। দিন দুয়েক আগে যখন অনুপ গোয়েল পদত্যাগ করেন, তখন হইচই পড়ে যায় রাজনৈতিক মহলে। এছাড়া যখন ডিসেম্বর মাসে কেন্দ্রের তরফ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে প্যানেলে থাকবেনা প্রধান বিচারপতি, তখন বিরোধীদের তরফ থেকে উঠে আসে প্রশ্ন। সকলেরই একটাই অভিযোগ যে এমন ব্যবস্থা কেন্দ্র সরকারকে একটা বড় ক্ষমতা দেবে, পাশাপাশি কোন স্বাধীনতাও থাকবেনা নির্বাচন কমিশনের।
সুপ্রিম কোর্টে বড় ধাক্কা তৃণমূলের! সন্দেশখালি মামলায় আর্জি খারিজ রাজ্যের, তদন্ত করবে সিবিআইই
ফের সুপ্রিম কোর্টে বড় ধাক্কা খেলো বাংলার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। সন্দেশখালি মামলায় আর্জি খারিজ হলো শাসক শিবিরের। অর্থাৎ পুরো ঘটনার তদন্ত করবে সিবিআইই। কিন্তু কলকাতা হাই কোর্টের রায়ে পুলিশ ও প্রশাসনকে নিয়ে যা মন্তব্য করা হয়েছিল, তা বাদ দিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি, এদিন ভর্ৎসনার মুখেও পড়তে হয় রাজ্যকে। “শাহজাহানকে গ্রেফতার করতে এতো দেরি হল কেন?” রাজ্যকে প্রশ্ন করা হয় সুপ্রিম কোর্টের তরফ থেকে।
সন্দেশখালির নৃশংসতার ঘটনা রীতিমতো হইচই ফেলে দিয়েছিল রাজ্য-রাজনীতিতে। শাসকদল নারী সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ, এমনটাই কটাক্ষ করেছিল বিরোধী দলগুলি। পাশাপাশি, শেখ শাহজাহানকেও গ্রেফতার করতে এত দেরি কেন করছে রাজ্য পুলিশ, তা নিয়েও উঠেছিল প্রশ্ন। অবশেষে ৫৬ দিন বাদে রাজ্য পুলিশের জালে ধরা পড়ে সেখানকার বেতাজ বাদশা। এরপরই ইডির তরফ থেকে কলকাতা হাই কোর্টে আবেদন করা হয় গোটা ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার।
যথারীতি, সিবিআই পায় সেই দায়িত্ব। এরপরই রাজ্য সরকার এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দ্বারস্থ হয় সুপ্রিম কোর্টের। কিন্তু সেখানেও মুখ পোড়ে তাদের। আরজিত খারিজ হয়ই, পাশাপাশি প্রশ্নের মুখেও পড়তে হয় তাদের। সবমিলিয়ে, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে যে তৃণমূল কংগ্রেস ব্যাকফুটে চলে গেছে, তা মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
লোকসভা নির্বাচনের আগে সিএএ কার্যকর করার সম্ভাবনা! রাত্রি দশটা নাগাদ জারি হবে বিজ্ঞপ্তি
সামনেই লোকসভা নির্বাচন। ইতিমধ্যেই প্রচার ও প্রার্থী বাছাই নিয়ে ব্যস্ত সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলি। সকলেরই একটাই লক্ষ্য এবং সেটা হলো নিজেদের গোদি বাঁচানো। সুতরাং জয়কে পাখির চোখ করে ময়দানে নামতে বিন্দুমাত্র দেরি করেনি কেউ। তবে এরই মাঝে কেন্দ্রের তরফ থেকে এলো একটি বড় ঘোষণা, যার রীতিমতো চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করার পাশাপাশি হইচই ফেলে দিয়েছে চারিদিকে। কি সেই ঘোষণা? সূত্র মারফত জানা গিয়েছে যে, সিএএ নিয়ে আজ একটি বড় ঘোষণা করতে পারে কেন্দ্রীয় সরকার। আজ রাত দশটা নাগাদ কেন্দ্রের তরফ থেকে এই প্রসঙ্গে একটি বিবৃতি জারি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
২০১৯ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর এনআরসি-সিএএ আগুনে জলে গোটা ভারতবর্ষ। দীর্ঘদিন ধরে এটি একটি আলোচ্য বিষয় ছিল। বৃহস্পতিবার, অর্থাৎ ৭ই মার্চ, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দিল্লিতে এক সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলোচনায় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন যে লোকসভা নির্বাচনের আগেই এই আইন কার্যকর করা হবে এবং এটিকে কারোর রোখার ক্ষমতা নেই। তবে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে যে বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং সেখানেই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে বড় ঘোষণা করতে পারেন তিনি। তাছাড়া রাত্রি দশটা নাগাদও বিজ্ঞপ্তি জারি করা হতে পারে বলে খবর।
প্রসঙ্গত, গতকাল বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জনগর্জন সভায় জানান যে তিনি কোনরকমে সিএএ হতে দেবেন না বাংলায়। রাজনৈতিক মহল মনে করছেন যে লোকসভা নির্বাচনের আগে এই ঘোষণা সবকিছু উল্টেপাল্টে দিতে পারে গোটা দেশে। এবার দেখার বিষয় যে শেষ পর্যন্ত কি ঘোষণা আসে প্রধানমন্ত্রীর তরফ থেকে।
“কারোর অধিকার কেড়ে নিলে তৃণমূল আওয়াজ তুলবে” সিএএ নিয়ে নিজের অবস্থান জানালো মমতা
লোকসভা ভোটের আগে একটি বড় চমক দিতে পারে কেন্দ্রের শাসকদল ভারতীয় জনতা পার্টি। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে যে আজই হয়তো কার্যকর করা হতে পারে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন। পাশাপাশি, আরো জানা গিয়েছে যে রাত্রি দশটা নাগাদ এই প্রসঙ্গে একটি বিবৃতিও জারি করা হতে পারে কেন্দ্রের তরফ থেকে। সবমিলিয়ে, এই মুহূর্তে একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে জাতীয় রাজনীতিতে।
তবে গতকালের মতো এদিনও এই আইন নিয়ে সুর চড়ালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই একটি সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন তাঁর অবস্থান এই প্রসঙ্গে। রীতিমতো চ্যালেঞ্জের সুরে তৃণমূল সুপ্রিমো সোজাসুজি জানিয়ে দিলেন যে কোনোভাবেই তিনি বাংলায় এই আইন কার্যকর হতে দেবেন না।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “নির্বাচন এলে কিছু একটা করার চেষ্টা করে ওরা। ইতিমধ্যেই সমস্ত চ্যানেলগুলি দেখাতে শুরু করে দিয়েছে যে আজ রাতেই কার্যকর হবে সিএএ। আমি জানতে চাই যে ২০২০ সালে এই আইন পাশ হয়েছিল। এরপর চার বছর কেটে যায়। আজ হঠাৎ করে করার প্রয়োজন মনে হল? আগে দেখি ওই আইনে কি বলা হয়েছে, তারপর আগামীকাল সভা থেকে যা ঘোষণা করার করবো। তবে কোনরকমের কোন বৈষম্য আমরা বরদাস্ত করবোনা।”
তিনি আরো বলেন, “এগুলো সব লোক দেখানো। ওরা কাউকেই নাগরিকত্ব দিতে পারবেনা। অতো সহজ নাকি? বলবে আপনারা পোর্টালে নাম লেখান এবং সেই অনুযায়ী আপনারাও নাম লেখাবেন। কিন্তু আদৌ কি তা কার্যকর হবে? আপনারা এই নিয়ে কোন চিন্তা করবেন না। যদি এনআরসির নাম করে কারো নাগরিকত্ব বাতিল করা হয় বা কাউকে ডিটেনশন ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়, আমরা তাহলে মুখ বুঝে থাকবোনা। আমরা মনে করি সকলেই নাগরিক। নতুন করে অশান্তি হোক, সেটা আমরা চাইনা। কারোর অধিকার কেড়ে নিলে তৃণমূল আওয়াজ তুলবে। রমজানের অভিনন্দন। সকলকে শুভনন্দন।”
কার্যকর করা হলো সিএএ! কড়া নিরাপত্তা মোতায়েন করা হলো দিল্লিতে
সমস্ত জল্পনার হল অবসান! লোকসভা নির্বাচনের আগেই কার্যকর করা হলো নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ)। বিল পাশ হওয়ার চার বছর পর এটি চালু হয়। ইতিমধ্যেই একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়ে গেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের পক্ষ থেকে এই প্রসঙ্গে, যেখানে সরকারিভাবে সিএএ কার্যকর করার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে৷
এক্স হ্যান্ডেলে বলা হয়েছে, “আজ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফ থেকে ‘নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ২০১৯’এর নিয়মাবলীগুলি জানিয়ে দেওয়া হবে। নাগরিকত্ব (সংশোধন) বিধি, ২০২৪ নামে এই নিয়মগুলি সিএএ-২০১৯এর আওতায় যোগ্য ব্যক্তিদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য আবেদন করতে সাহায্য করবে। এগুলি পুরোপুরি অনলাইন মোডে জমা দেওয়া হবে এবং এর জন্য একটি ওয়েব পোর্টাল দেওয়া হয়েছে।”
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের পক্ষ থেকে এই আইন ঘোষণা হওয়ার পরই কড়া নিরাপত্তা মোতায়েন করা হয়েছে উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে। গতবারের দাঙ্গার কথা মাথায় রেখেই তড়িঘড়ি এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে শাহীন বাগ, জামিয়া ও অন্যান্য জায়গায়। ফ্ল্যাগ মার্চ অবধি করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। ইতিমধ্যেই পুলিশের তরফ থেকে রাজধানীর আমজনতার কাছে অনুরোধ করা হয়েছে যে সকলে যেন আইন মেনে চলেন।
‘আজ সারাদিন’ আজ এই পর্যন্তই। আগামীকাল আমরা ফের আপনাদের কাছে ফিরে আসবো দিনের সব নজরকাড়া খবর নিয়ে। ধন্যবাদ। শুভরাত্রি।