নিউজ ডেস্ক: প্রিয় পাঠক প্রতিদিন সকালে বঙ্গ-ভারতী নিউজের তরফ থেকে আপনাদের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে গতকালের গুরুত্বপূর্ণ সব খবর। রাজ্য থেকে দেশ, কি ঘটলো গত ২৪ ঘন্টায়? দেখে নিন একনজরে এবং জেনে নিন বিস্তারিতভাবে।
নিট পরীক্ষায় দুর্নীতি নিয়ে বিস্ফোরক রিপোর্ট পেশ বিহার সরকারের আর্থিক দুর্নীতি বিভাগের
লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণা হওয়ার পরই বড় চাপে কেন্দ্রীয় সরকার। একে তো মসনদে কতদিন টিকবে, তা নিয়ে রয়েছে অনিশ্চয়তা। তার উপর বাড়তি চাপ হয়ে দাঁড়ালো চলতি বছরের নিট পরীক্ষায় হওয়া দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসা। এরপরই সকল বিরোধী রাজনৈতিক দল লাগাতার আক্রমণ করে চলেছে মোদি সরকারকে। যদিও কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান দাবি করেছেন যে পরীক্ষার্থীদের আতঙ্কিত হওয়ার মতো কোনো ব্যাপার নেই। পাশাপাশি, বিরোধীদেরও একহাত নেন তিনি এবং দাবি করেন যে বিরোধীদের স্বার্থ রয়েছে এবং কোনোকিছুই প্রমান হয়নি। সবটাই অভিযোগ। অন্যদিকে, এই দুর্নীতিকে কেন্দ্র করে সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছে পড়ুয়াদের একাংশ।
এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত এক ধৃতের বয়ান প্রকাশ্যে আসতেই আরো চাপে পরে কেন্দ্র সরকার। আয়ুশ রাজ নামে এক ধৃত পুলিশকে বয়ান দেন যে টাকা দিয়ে তিনি যেই প্রশ্নপত্র পেয়েছিলেন, পরীক্ষার হলে গিয়ে দেখেন সেটা একেবারেই এক। তিনি বলেন, “গত ৪ঠা মে পাটনার লার্ন হোস্টেলে রাতে আমাকে নিয়ে গিয়ে প্রশ্নপত্র আর উত্তরপত্র, দুটোই দেওয়া হয়। ওরা আমাকে মুখস্ত অবধি করতে বলে। সেই সময়ে আমার সঙ্গে আরও ২০-২৫জন পরীক্ষার্থী ছিল। পরীক্ষার হলে গিয়ে আমি দেখি যে যেই প্রশ্নপত্র আমি টাকা দিয়ে পেয়েছিলাম, সেই একই প্রশ্নপত্র পরীক্ষা এসেছে।”
তবে এবার এর চেয়েও বড় চাপ খেলো কেন্দ্র সরকার। বিহার সরকারের আর্থিক দুর্নীতি বিভাগের তরফ থেকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের পরীক্ষার্থীদের তলব করা হয়। সেই অনুযায়ী তারা তৈরি করে একটি বিস্ফোরক রিপোর্ট। তাতে বলা হয়েছে যে ১৫ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা মূল্য প্রতিটি প্রশ্নপত্রের এবং তৈরি করা হয়েছিল একটি সলভার গ্যাং, যাদের দেয়া হতো ১০ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা। বিভিন্ন কোচিং সেন্টার ও সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে প্রশ্ন বিক্রির জন্য এবং সলভার গ্যাং এদের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিজেদের কাজ করতো। তদন্তকারীদের অনুমান যে বিভিন্ন কোচিং সেন্টার ও পরীক্ষা মাফিয়াদের সাহায্যে এই দুর্নীতির জাল ছড়িয়েছে বেশকিছু রাজ্যে।
ফের হামলার মুখে পড়লেন মনিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং! তাঁর বাড়ির কাছে ঘটলো অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা
অশান্তি থামার নাম নেই মণিপুরে। লম্বা সময় ধরে সেই রাজ্যে চলছে হিংসা এবং প্রাণ যাচ্ছে বহু সাধারণ মানুষের। স্বাভাবিকভাবেই, একটা আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে গোটা রাজ্যজুড়ে। ভয় নিয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষদের। এমনকি হামলার শিকার হতে হয়েছে সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংকেও। গত সোমবার, অর্থাৎ ১০ই জুন, জিরিবাম জেলায় তাঁর কনভয়ের উপর চালানো হয় হামলা এবং তার কয়েকদিনের মধ্যেই ফের তিনি পড়েন হামলার কবলে। তাঁর বাড়ির কাছে ঘটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা। যদিও আহত বা নিহতের কোন খবর আসেনি। তবে এমন কাণ্ড প্রশ্ন তুলছে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে। অনেকে ভাবতে শুরু করেছেন যে যদি স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী হামলা থেকে পার না পায়, তাহলে তারা কোথায় যাবে।
জানা গিয়েছে যে ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার, অর্থাৎ ১৫ই জুন, রাতে। ইম্ফলে কুকি ইনের আশপাশে মণিপুর সচিবালয় কমপ্লেক্সের কাছে রয়েছে কুকিদের বেশকিছু পরিতক্ত বাড়ি আর সেখানেই লাগে আগুন। তক্ষুনি খবর দেওয়া হয় দমকলকে। ঘটনাস্থলে আসে চারটি ইঞ্জিন এবং তারা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সফল হয়। কিন্তু এই সবকিছু মাঝে ঘটে একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যসচিব থাঙ্কখোপাও কিপগেনের বাড়ি ভস্মীভূত হয়ে যায়। যদিও পুলিশের তরফ থেকে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। তারা মনে করছে যে এই ঘটনা পরিকল্পনা করেও ঘটানো হতে পারে।
যদিও মণিপুরের এমন দুরবস্থা নিয়ে ইন্ডিয়া টুডের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে মুখ খুলেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং। তিনি বলেন এটা অত্যন্ত লজ্জাজনক ব্যাপার যে আমার নিজের রাজ্যেই আমার কনভয়ের উপর হামলা হয়েছে। মুখ্যসচিবকে বলা হয়েছে এই ঘটনা তদন্ত করার। কিভাবে হামলাকারীরা খবর পেল আমার কনভয় কোনখানে যাচ্ছে।” এরপরই মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয় রাজ্যের পরিস্থিতি প্রসঙ্গে। সেই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “বাহিনী মোতায়নের পর পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে পুরোপুরি পরিস্থিতি ঠিক করতে সময় লাগবে। কিছু জায়গা থেকে হিংসার খবর উঠে এসেছে সম্প্রতি। তবে মোদি সরকার সবরকমভাবে চেষ্টা করছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে তোলার। আমি আশা করছি যে আগামী ২-৩ মাসের মধ্যে আমাদের রাজ্যে শান্তি ফিরে আসবে।”
‘সাতসকাল’ আজ এই পর্যন্তই। আগামীকাল আমরা ফের আপনাদের কাছে ফিরে আসবো দিনের সব নজরকাড়া খবর নিয়ে। ধন্যবাদ। সুপ্রভাত।