নিউজ ডেস্ক: প্রিয় পাঠক প্রতিদিন সকালে বঙ্গ-ভারতী নিউজের তরফ থেকে আপনাদের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে গতকালের গুরুত্বপূর্ণ সব খবর। রাজ্য থেকে দেশ, কি ঘটলো গত ২৪ ঘন্টায়? দেখে নিন একনজরে এবং জেনে নিন বিস্তারিতভাবে।
যোগী আদিত্যনাথ সরকার নিতে চলেছেন বড় পদক্ষেপ প্রশ্নফাঁস করা রুখতে
লাগাতার পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস হওয়া চাপে ফেলেছে চাপে ফেলেছে কেন্দ্র সরকারকে। স্বয়ং উত্তরপ্রদেশেও এর কালো ছায়া পড়েছে। সেই রাজ্যের উত্তরপ্রদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার খবর প্রকাশ্যে আসতেই চরম অস্বস্তিতে পড়েছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। স্বাভাবিকভাবেই তাকে কটাক্ষের মুখে পড়তে হয়েছে বিরোধীদের। এছাড়া নিন্দার বন্যা বইছে সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মগুলি থেকেও।
এমন পরিস্থিতিতে এবার বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছেন যোগী আদিত্যনাথ। মঙ্গলবার, অর্থাৎ ২৫শে জুন, মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকা হয় এবং তাতে একটি নতুন আইন আনার পরিকল্পনা করা হয়। জানা গিয়েছে যে তাতে সহমত জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। সেই আইন অনুযায়ী যে বা যারা প্রশ্নফাঁসের মতো অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকবে, তাদের যাবজ্জীবন জেল হবে। এখানেই শেষ নয়, এক কোটি টাকা জরিমানা পর্যন্ত হতে পারে। এছাড়া এটাও বলা হয়েছে যে এই দুর্নীতির সঙ্গে যারা যুক্ত থাকবে তাদের থেকে পুরো পরীক্ষার খরচও আদায় করা হতে পারে।
উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকারের এক সুত্র দাবি করেছেন যে শীঘ্রই এটি আইনে পরিণত হতে পারে। সেই সূত্রের বক্তব্য, “সামনেই বিধানসভার অধিবেশন রয়েছে। সেখানেই এই অধ্যাদেশ পাশ করা হবে। এবার যদি রাজ্যপালের তরফ থেকে অনুমতি পাওয়া যায়, তাহলে এটি দ্রুত আইনে পরিণত হবে।”
উল্লেখ্য, উত্তরপ্রদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে ৬জনকে এবং এই ছয়জনই ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র। এছাড়াও যোগ পাওয়া গেছে আরেক বিজেপি শাসিত রাজ্য মধ্যপ্রদেশের এক ছাপাখানার কর্মীরও। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায় যে অর্থের বিনিময়ে সে প্রশ্নপত্র বিক্রি করে। স্বাভাবিকভাবেই এমন ঘটনা জনসমক্ষে আসতে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে কেন্দ্র সরকারের স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে।
প্রশ্ন: এবার দেখার বিষয় যে কিভাবে এই চাপ সামাল দেবে কেন্দ্রীয় সরকার। কি চাল চলবে এবার বিরোধীরা? কি পদক্ষেপ নেওয়া হবে গেরুয়া শিবিরের তরফ থেকে? কোন পথে এগোচ্ছে এই অধ্যায়? আগামীদিনে কি একটি বড় বিক্ষোভ দেখা যাবে পরীক্ষার্থীদের তরফ থেকে? সব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে আর কিছুদিনের মধ্যে।
হাজী নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন রেখা পাত্র! কি অভিযোগ নিয়ে সেখানে গেলেন তিনি?
সন্দেশখালীর ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই কেঁপে উঠেছিল গোটা পশ্চিমবঙ্গ সহ গোটা ভারতবর্ষ। লাগাতার আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছিল রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসকে। বাম-কংগ্রেস জোট থেকে শুরু করে ভারতীয় জনতা পার্টি, সকলেই নিন্দা করেছিল এমন ঘটনার। ধিক্কার জানিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সকলে প্রায় ধরেই নিয়েছিল যে বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্র হাতছাড়া হবে তৃণমূল কংগ্রেসের থেকে। কিন্তু সেটা একেবারেই হয়নি, বরং উল্টোটা হয়েছে। অপ্রত্যাশিতভাবে সেখানে ভালো ফল করেছে ঘাসফুল শিবির। শুধু জয় নয়, একেবারে বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছেন বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী হাজী নুরুল ইসলাম। স্বাভাবিকভাবে, এই জয় হতাশা আনে বঙ্গ বিজেপি শিবিরে এবং মুখও পোড়ে গেরুয়া শিবিরের। আনন্দে মেতে ওঠেন তৃণমূল কর্মীরা।
কিন্তু কোথাও যেন এই পরাজয় বরদাস্ত করতে পারেননি সন্দেশখালির প্রতিবাদী মুখ, তথা বিজেপি প্রার্থী, রেখা পাত্র সহ গোটা বঙ্গ বিজেপি। এবার আইনি পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো তাদের তরফ থেকে। হাজী নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে এবার কলকাতা হাইকোর্টে গেলেন রেখা পাত্র। মনোনয়নের সময় ভুল তথ্য জমা দিয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী। এমনটাই অভিযোগ করেন তিনি। রেখা পাত্র বলেন, “মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় তৃণমূল প্রার্থী হাজী নুরুল ইসলাম সম্পূর্ণ ভুল তথ্য দিয়েছেন। উনি যেটা করেছেন সেটা সম্পূর্ণ অন্যায়। এটা আমি কোনোভাবেই মানবোনা।”
উল্লেখ্য, লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার দিন, বেশকিছু মুহূর্ত দৃষ্টি আকর্ষণ করে গোটা বাংলার। তাদের মধ্যে একটি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের রেকর্ড ব্যবধানে ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রে জয়। অন্যদিকে, সর্বদা আলোচিত সন্দেশখালির ফলও চমকে দিয়েছে গোটা বাংলাকে। প্রথমে মনে করা হয়েছিল যে সহজেই জয় পাবেন বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্র। কিন্তু সম্পূর্ণ অন্য জিনিস ঘটে। বেশ বড় ব্যবধানেই জয় পায় বসিরহাটের তৃণমূল প্রার্থী হাজি নুরুল ইসলাম। এমনকি বেলা গড়াতেই বুথ ছেড়ে চলে যান রেখা পাত্র। তবে যাওয়ার সময়ও তিনি সাংবাদিকদের দাবি করেন যে চুরি করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এছাড়াও কৃষ্ণনগরের তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্রের জয় তাক লাগিয়ে দিয়েছে সকলকে। ফের তিনি সংসদে বসার টিকিট পাকা করে নিয়েছেন। অনেকে মনে করছেন যে তিনি কড়া জবাব দিয়েছেন বিরোধীদের।
প্রশ্ন: এবার দেখার বিষয় যে শেষ পর্যন্ত কি পদক্ষেপ নেওয়া হয় বঙ্গ বিজেপির তরফ থেকে। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে কি পাল্টা প্রতিক্রিয়া আসবে? কি পদক্ষেপ নেবেন হাজী নুরুল ইসলাম? কোনদিকে এগোবে এই অধ্যায়? সব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে আর কিছুদিনের মধ্যে।
‘সাতসকাল’ আজ এই পর্যন্তই। আগামীকাল আমরা ফের আপনাদের কাছে ফিরে আসবো দিনের সব নজরকাড়া খবর নিয়ে। ধন্যবাদ। সুপ্রভাত।