নিউজ ডেস্ক: প্রিয় পাঠক দিনের শেষে বঙ্গ-ভারতী নিউজের তরফ থেকে আপনাদের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে দিনের গুরুত্বপূর্ণ সব খবর। রাজ্য থেকে দেশ, কি ঘটলো ‘আজ সারাদিন’? দেখে নিন একনজরে এবং জেনে নিন বিস্তারিতভাবে।
মাদক পাচারকারী কি এবারের বিজেপি প্রার্থী? কি বক্তব্য তৃণমূল কংগ্রেসের?
লোকসভা নির্বাচনের আগে তুঙ্গে বাংলায় শাসক-বিরোধী লড়াই। তৃণমূল হোক কি বিজেপি, দুজনেই একে অপরকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে নারাজ। বাংলার দুই শক্তিশালী দলই অব্যাহত রেখেছে একে অপরকে আক্রমণ। সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম হোক কি সংবাদমাধ্যম, সবেতেই তারা তুলে ধরছে একে অপরের দুর্নীতির কথা। একদিকে বিজেপি শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের নানা দুর্নীতি প্রকাশ্যে আনছে, আবার অন্যদিকে ঘাসফুল শিবির বিভিন্ন ইস্যুকে হাতিয়ার করে কটাক্ষ করে যাচ্ছে গেরুয়া শিবিরকে। সবমিলিয়ে, লড়াই যে হাড্ডাহাড্ডি হবে তা একেবারেই স্পষ্ট।
কিন্তু এই সবকিছুর মাঝে এবার বঙ্গ বিজেপিকে নিয়ে একটি বিস্ফোরক তথ্য তুলে ধরবেন শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন মুখপাত্র ও কাউন্সিলর অরূপ চক্রবর্তী। কি সেই তথ্য? বারাসাত কেন্দ্রে বঙ্গ বিজেপি প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত করেছে স্বপন মজুমদারকে। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে মাদক পাচারের জন্য দশ বছর কারাদণ্ডের অভিযোগ।
এই তথ্য তুলে ধরে কুনাল ঘোষ টুইট করেন, “ইনিই কি বিজেপির এবারের বারাসতের প্রার্থী? যদি হন, তাহলে তিনি মাদককান্ডে ঘোষিত অপরাধী। বিজেপি ব্যাখ্যা দিক। প্রার্থী খুঁজে না পেয়ে শেষে মাদক ব্যবসায়ী?” অন্যদিকে কাউন্সিলর অরূপ চক্রবর্তী বলেন, “একবার দেখে বলুন তো এই সেই মাদক পাচারকারী বিজেপি নেতা স্বপন মজুমদার কিনা যিনি ১৭-বারাসাত লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী হয়েছেন? ইনি তো তাহলে একজন আন্তর্জাতিক ড্রাগ ডিলার। অসম পুলিশ তো এনাকে গ্রেপ্তার করেছিল।”
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই তৃণমূল কর্মী ও সমর্থকেরা সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মগুলিতে নিজেদের মতামত পেশ করেন এবং অধিকাংশই দাবি করেন যে স্বপন মজুমদারের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হোক। যদিও বিজেপি সমর্থকরাও তৃণমূলের নিন্দা করতে বাদ যাননি। গেরুয়া শিবিরের সমর্থকরা ঘাসফুল শিবিরের দুর্নীতির কথা তুলে ধরেন। এখানেই শেষ নয়, তাঁরা এটাও দাবি করেন যে এবার বাংলায় পদ্মফুল ফোটা শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা। এছাড়াও তারা বলেন যে এবার ফের বিজেপিই ক্ষমতায় আসবে।
উল্লেখ্য, এবারের লোকসভা নির্বাচন হবে সাত দফায়। ইতিমধ্যেই, রাজ্যে রুটমার্চ করা শুরু করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে ৪২টি কেন্দ্রেরই প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে বিজেপির তরফ থেকে ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে ৩৮টি। এবার দেখার বিষয় যে শেষ হাসি কোন দল হাসে।
ফের রাজধানী হলো রণক্ষেত্র! আবারও ধস্তাধস্তিতে জড়ালো পুলিশ ও আপ
আবারো রণক্ষেত্রের চেহারা নিলো রাজধানি। আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেফতারির বিরোধিতা করতে মঙ্গলবার ফের রাজপথে বিক্ষোভে নামে দলের নেতা-মন্ত্রী থেকে শুরু করে কর্মী-সমর্থকেরা। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়ায় তারা। যদি দিল্লি পুলিশের তরফ থেকেও কড়া নিরাপত্তা মোতায়েন আগে থেকেই করা হয়েছিল। সবমিলিয়ে, এদিন ফের গোটা দিল্লি সাক্ষি হলো আপ-বিজেপির এই মহাযুদ্ধের।
দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলায় গত বৃহস্পতিবার, অর্থাৎ ২১শে মার্চ, গ্রেফতার করা হয় আম আদমি পার্টি সুপ্রিমো, তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে। এরপরই দলের নেতা-মন্ত্রী থেকে শুরু করে কর্মী-সমর্থক সকলেই নিন্দা করতে শুরু করে। অবিজেপি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরাও তীব্র নিন্দা করে এই গ্রেফতারির এবং দাবি করে যে গণতন্ত্রে বড় আঘাতে এনেছে গেরুয়া শিবির। যদিও কেজরিওয়াল জানিয়ে দিয়েছিলেন যে জেল থেকেই তিনি মানুষ সেবার কাজ চালিয়ে যাবেন। তাঁর স্ত্রী সুনিতা কেজরিওয়ালের গলায়ও শোনা যায় একই সুর।
এরই মাঝে এই গ্রেফতারির পর দিল্লির রাজপথে বিক্ষোভ দেখাতে নামে গোটা আপ দল এবং পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতেও জড়ায় তারা। আটক অবধি করা হয় দুই মন্ত্রীকে। এক সাংবাদিক সম্মেলনে তারা স্পষ্ট জানিয়ে দেয় চলতি মাসের শেষদিন, অর্থাৎ ৩১ তারিখ, তারা রামলীলা ময়দানে একটি বড় র্যালি করবে। পাশাপাশি, দলের তরফ থেকে এটাও দাবি করা হয় যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আম আদমি পার্টিকে রোখার জন্য কেন্দ্রীয় এজেন্সির অপব্যবহার করছে।
তবে এখনো যেন লড়াই থামার নাম নেই। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ঘেরাওয়ের ডাক দিয়েছিল আপ।প্যাটেল চক মেট্রো স্টেশনের কাছে আসতেই পুলিশ তাঁদের আটকাতে শুরু করে, যার জেরে শুরু হয় ধস্তাধস্তি। এরপর গ্রেফতার করা হয় পাঞ্জাবের মন্ত্রী হরজোৎ সিং বাইন সহ দলের একাধিক কর্মী-সমর্থককে। যদিও দিল্লি পুলিশের তরফ থেকে মাইকিং করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করার কথা। এই প্রসঙ্গে দলের এক নেত্রী রিনা গুপ্তা বলেন, “বেআইনিভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে আমাদের নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে। আমাদের একটাই দাবি, ওনাকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া হোক। লোকসভা নির্বাচনের আগে ওনাকে ভয় পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী এবং সেই কারণে এই গ্রেফতারি যাতে উনি প্রচার না করতে বেরোতে পারেন।” এবার দেখার বিষয় যে শেষ পর্যন্ত কবে মুক্তি পায় কেজরিওয়াল।
‘আজ সারাদিন’ আজ এই পর্যন্তই। আগামীকাল আমরা ফের আপনাদের কাছে ফিরে আসবো দিনের সব নজরকাড়া খবর নিয়ে। ধন্যবাদ। শুভরাত্রি।