নিউজ ডেস্ক: প্রিয় পাঠক প্রতি সপ্তাহের শুরুতে বঙ্গ-ভারতী নিউজের তরফ থেকে আপনাদের কাছে তুলে ধরা হয় গতসপ্তাহের সেরা সব খবর। তবে এই সপ্তাহের থিম আইপিএল স্পেশ্যাল। চলতি মরশুমে সেরা দুই ম্যাচ এখনো অবধি কোনটি? দেখে নিন একনজরে এবং জেনে নিন বিস্তারিতভাবে।
রুদ্ধশ্বাস জয় গিলদের! মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সকে ৬ রানে হারালো গুজরাট টাইটান্স
গতসপ্তাহের সেরা ম্যাচের তালিকায় শীর্ষস্থানে রয়েছে গুজরাট টাইটান্স বনাম মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ম্যাচ। টানটান উত্তেজনা ভরা এই ম্যাচে মাত্র ৬ রানে জয় পায় শুভমান গিলরা। সৌজন্যে সাঈ সুদর্শনের দুর্দান্ত ব্যাটিং এবং সাঈ কিশোর-মোহিত শর্মাদের বিধ্বংসী বোলিং। যদিও মুম্বাইয়ের তরফ থেকেও উঠে আসে বেশকিছু নজরকাড়া পারফরম্যান্স। একদিকে বল হাতে বুমরাহের দেখার মতো স্পেল এবং ব্যাট হাতে অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও ডেওয়াল্ড ব্রেভিসের মারকুটে ইনিংস। সবমিলিয়ে, একটা হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচের সাক্ষী হয় স্টেডিয়ামে উপস্থিত সকল দর্শকেরা। এছাড়াও এই ম্যাচ প্রসংশা কুড়িয়েছে প্রাক্তন ক্রিকেটার থেকে ক্রিকেটপ্রেমী সকলেরই। অন্যদিকে, ম্যাচের সব গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত চোখের নিমেষে ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলিতে এবং এরপরই শুরু হয় কমেন্টের বন্যা।
২৪শে মার্চ, অর্থাৎ রবিবার, গুজরাটের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয় দুই দল। টসে জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন রোহিত শর্মা। নির্ধারিত ২০ ওভারে গুজরাটের স্কোর দাঁড়ায় ৬ উইকেটে ১৬৮। সর্বোচ্চ ৪৫ রান করেন সাঈ সুদর্শন। এছাড়া অধিনায়ক শুভমান গিল করেন ৩১। মুম্বাইয়ের বোলারদের মধ্যে সেরা বোলিং উঠে আসে জাস্প্রীত বুমরাহের থেকে। জবাবে রান তাড়া করতে নেমে ২০ ওভার শেষে মুম্বাইয়ের স্কোর দাঁড়ায় ৯ উইকেটে ১৬২। সর্বোচ্চ ৪৬ রান করেন ডেওয়াল্ড ব্রেভিস। এছাড়া অধিনায়ক রোহিত শর্মা করেন ৪৩। গুজরাটের বোলারদের মধ্যে দুটি করে উইকেট পান মোহিত শর্মা, স্পেন্সার জনসন, উমেশ যাদব ও আজমাতুল্লাহ ওমারজাই এবং একটি উইকেট নেন রবিশ্রীনিবাসন সাঈ কিশোর। ম্যাচের সেরা হন সাঈ সুদর্শন।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সাঈ সুদর্শন বলেন, “প্রথম ইনিংসে ব্যাট করা খুব একটা সহজ ছিলোনা। দ্বিতীয় ইনিংসে যখন ওরা ব্যাট করতে নামে, শিশিরের জন্য ওরা কিছুটা সুবিধে পায় শট খেলতে। তবে দিনের শেষে আমি খুশি আমরা ম্যাচ জিততে পেরেছি বলে। নিজের দলকে জেতানোর জন্য আমি এটিকে একটি বাড়তি সুযোগ বলে নিয়েছি।”
এরপরই তরুণ ক্রিকেটারকে বলতে শোনা যায় পিচ এবং নিজের পারফরম্যান্স প্রসঙ্গে। তিনি বলেন, “কয়েকটা বল খেলার পর আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে এই পিচে কিভাবে খেলতে হবে এবং সেই অনুযায়ী ইনিংসে গতি আনতে চেয়েছিলাম। সত্যি কথা বলতে গেলে এই পুরস্কার পেয়ে আমি বেশ চমকে গেছি কারণ দ্বিতীয় ইনিংসে অনেকেই ভালো খেলা উপহার দিয়েছে। ব্যাটার হিসেবে আজ আমি কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিলাম যখন ওরা পেস তুলে নিয়েছিল। তবে আমাদের বোলাররাও আজ দুর্দান্ত বোলিং করেছে পরিকল্পনা অনুযায়ী।”
কোহলি ঝড়ে উড়ে গেলো ধাওয়ানরা! পাঞ্জাবকে ৫ উইকেটে হারালো বেঙ্গালুরু
গতসপ্তাহের সেরা ম্যাচের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে রয়াল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু বনাম পাঞ্জাব কিংস ম্যাচ। পরাজয় দিয়ে মরসুম শুরু করলেও, জয় পেয়ে ঘুরে দাঁড়াতে সফল হয় ফাফ ডু’প্লেসিরা। অন্যদিকে, শুরুটা ভালো হলেও পরেরটা একেবারেই ভালো যায়নি পাঞ্জাবের জন্য। প্রথম ম্যাচে জয় পেয়ে দ্বিতীয় ম্যাচে পরাজয়ের শিকার হলো শিখর ধাওয়ানরা। চার উইকেটে ম্যাচ নিজেদের ঝুলিতে তুলে নেয় কোহলি বাহিনী। এদিন ব্যাটিং ও বোলিং, দুই বিভাগই ছিলো দারুন ছন্দে। একদিকে যেমনি বল হাতে পাঞ্জাবের ব্যাটিং অর্ডারের কোমর ভাঙতে সফল হয় মহম্মদ সিরাজ ও যশ দয়াল, তেমনি অন্যদিকে ব্যাট হাতে তাক লাগিয়ে দেন চেজ মাস্টার বিরাট কোহলি ও ভারতের প্রবীণ উইকেটরক্ষক ব্যাটার দীনেশ কার্তিক।
২৫শে মার্চ, অর্থাৎ সোমবার, বেঙ্গালুরুর এম চিহ্নস্বামী স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয় দুই দল। টসে জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন ফাফ ডু’প্লেসি। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৭৬ রান তোলে পাঞ্জাব। সর্বোচ্চ ৪৫ রান করেন অধিনায়ক শিখর ধাওয়ান। বেঙ্গালুরুর বোলারদের মধ্যে দুটি করে উইকেট তোলেন মহম্মদ সিরাজ ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল এবং একটি করে উইকেট পান যশ দয়াল ও আলজারি জোসেফ। জবাবে রান তারা করতে নেমে চার বল বাকি থাকতে প্রয়োজনীয় রান তুলে নেয় আরসিবি। সর্বোচ্চ ৭৭ রানের একটি বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন বিরাট কোহলি। এছাড়া ১০ বলে ২৮ রানের একটি দ্রুতগতির ইনিংস খেলে দলকে ফিনিশ লাইন পার করান দীনেশ কার্তিক। পাঞ্জাবের বোলারদের মধ্যে দুটি করে উইকেট তোলেন কাগিসো রাবাডা ও হারপ্রীত ব্রার এবং একটি করে উইকেট নিজেদের ঝুলিতে তুলতে সফল হন স্যাম কারান ও হার্শাল প্যাটেল। ম্যাচের সেরা হন বিরাট কোহলি।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বিরাট কোহলি বলেন, “এই জয়তে যেমন আমি খুশি, তেমনি এটা ভেবেও খারাপ লাগছে যে আমি ক্রিজে থেকে ম্যাচটা শেষ করতে পারলামনা। তবে দুই মাস বাদে খেলতে নেমে যে পারফরম্যান্স আমি দিয়েছি, তাতে আমি সন্তুষ্ট। যেভাবে কেজি আর অর্ষদীপ বোলিং করছিল, তাতে আলাদা করে পরিকল্পনা করতে হয়েছে। তবে আমার পরবর্তী লক্ষ্য আগামী ম্যাচগুলিতে আরো ভালো খেলা দেখানোর।” এছাড়া নিজের পরিবারের সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলির কথাও তুলে ধরেন কিং কোহলি।
‘ফিরে দেখা সাতদিন’ আজ এই পর্যন্তই। আগামী সপ্তাহে আমরা ফের আপনাদের কাছে ফিরে আসবো সপ্তাহের সব নজরকাড়া খবর নিয়ে। ধন্যবাদ। সুপ্রভাত।