ফিরে দেখা সাতদিন: আইএসএল স্পেশাল
নিউজ ডেস্ক: প্রিয় পাঠক প্রতি সপ্তাহের শুরুতে বঙ্গ-ভারতী নিউজের তরফ থেকে আপনাদের কাছে তুলে ধরা হয় গতসপ্তাহের সেরা সব খবর। তবে এই সপ্তাহের থিম আইএসএল স্পেশ্যাল। চলতি মরশুমে সেরা দুই ম্যাচ এখনো অবধি কোনটি? দেখে নিন একনজরে এবং জেনে নিন বিস্তারিতভাবে।
লাগাতার জয়ের পর পরাজয়ের শিকার হলো মোহনবাগান সুপার জায়েন্ট দল
ফিরে দেখা সাতদিন: আইএসএল স্পেশাল
গতসপ্তাহের সেরা ম্যাচের তালিকায় শীর্ষস্থানে রয়েছে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট বনাম চেন্নাইন এফসি ম্যাচ। আইএসএলে বড়ো ধাক্কা খেলো মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট। হোম ম্যাচে এবার পরাজয়ের শিকার হতে হলো তাদের। শুরু থেকে শেষ অবধি লড়াই করেও ম্যাচ পকেটে পুড়তে পারলোনা আন্তোনিও লোপেজ হাবাসের ছেলেরা। চেন্নাইন এফসির বিরুদ্ধে একটি টানটান উত্তেজনা ভরা ম্যাচ তারা শেষ করলো ২-৩ গোলে হেরে।
এদিন কড়া টক্কর দেওয়া সত্ত্বেও ম্যাচে ফিরতে পারলোনা তারা। কোনভাবেই ভাঙতে পারলোনা ওয়েন কয়লের ছেলেদের রক্ষণভাগ। এই হারের সাথে লাগাতার জয়ের পর এদিন পরাজয়ের শিকার হলো মোহনবাগান। পাশাপাশি, এই গুরুত্বপূর্ণ জয় পেয়ে পয়েন্টস টেবিলে বদল ঘটাতে সফল হলো চেন্নাইন এফসি।
গত রবিবার, অর্থাৎ ৩১ শে মার্চ, কলকাতার বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন স্টেডিয়ামে হোম টিম মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট মুখোমুখি হয় চেন্নাইন এফসির। প্রথম থেকে শেষ অবধি লড়াই করেও ম্যাচ জিততে না পারার জেরে হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়ে হোম ক্রাউড। প্রথমার্ধ হোম টিমের নামে গেলেও, দ্বিতীয়ার্ধ পুরোপুরি গেল চেন্নাইন এফসির নামে।
এদিন ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণে নামে মোহনবাগান। ২৯ মিনিটের মাথায় গোল করে দলকে এগিয়ে দেন জনি কাউকো। যদিও এরপরে আক্রমণে নামে চেন্নাই। বেশ কয়েকটি সুযোগও পায় সমতা ফেরানোর। তবে তা কাজে লাগাতে পারেনি তারা। ভেদ করতে পারেনি সবুজ-মেরুন শিবিরের রক্ষণভাগ। অবশেষে প্রথমার্ধ শেষ হয় ১-০ গোলে। এগিয়ে থাকে হাবাসের ছেলেরা।
তবে দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হতেই পাল্টে যায় পুরো চিত্র। এবার পুরোপুরি মোহনবাগানের উপর চাপ ফেলে দেয় চেন্নাই। লাগাতার রক্ষণভাগের উপর চাপ সৃষ্টি করতে শুরু করে স্ট্রাইকাররা। অবশেষে ৭২ মিনিটের মাথায় মাড়ের গোলে সমতায় ফেরে চেন্নাই। এরপর আশি মিনিটের মাথায় এগিয়ে যায় তারা এডওয়ার্ডসের গোলে। অন্যদিকে মোহনবাগান আপ্রাণ চেষ্টা করে ম্যাচে ফেরার এবং অতিরিক্ত সময় সফল হয় তারা। পেনাল্টি থেকে গোল করে পেত্রাতোস। কিন্তু শেষরক্ষা করতে পারলোনা বাগান শিবির। অন্তিম লগ্নে এসে ইয়াদোয়াদের গোলে ম্যাচ নিজেদের ঝুলিতে তুলে নেয় চেন্নাই এবং এর সঙ্গে একরাশ হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়ে সবুজ-মেরুন শিবির ও তাদের সমর্থকেরা। প্রসঙ্গত, এই মুহূর্তে দ্বিতীয়স্থানে রয়েছে মোহনবাগান এবং ষষ্ঠস্থানে রয়েছে চেন্নাই।
লাগাতার ব্যর্থতার পর অবশেষে জয়ের মুখ দেখলো ইস্টবেঙ্গল এফসি দল
গতসপ্তাহের সেরা ম্যাচের তালিকায় দ্বিতীয় নম্বরে রয়েছে ইস্টবেঙ্গল এফসি বনাম কেরালা ব্লাস্টার্স এফসি ম্যাচ। চলতি মরশুমে অবশেষে কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়াতে সফল হলো ইস্টবেঙ্গল এফসি দল। অ্যাওয়ে ম্যাচে এবার জয়ের স্বাদ পেতে সফল হলো তারা। শুরু থেকে শেষ অবধি দাপটের সঙ্গে লড়াই করে ম্যাচ নিজেদের নামে করলো কার্লেস কুয়াদ্রতের ছেলেরা। কেরালা ব্লাস্টার্স এফসির বিরুদ্ধে একটি টানটান উত্তেজনা ভরা ম্যাচ তারা শেষ করলো ৪-২ গোলে জিতে।
এদিন কঠিন লড়াই দেওয়া সত্ত্বেও ম্যাচে ফিরতে পারলোনা কেরালা ব্লাস্টার্স এফসি। কোনভাবেই ভাঙতে পারলোনা কার্লেস কুয়াদ্রতের ছেলেদের রক্ষণভাগ। এই হারের সাথে লাগাতার পরাজয়ের ধারা অব্যাহত রয়েছে তাদের। পাশাপাশি, এই বড় জয় পেয়ে পয়েন্টস টেবিলে কিছুটা পরিবর্তন ঘটাতে সফল হলো ইস্টবেঙ্গল এফসি।
গত বুধবার, অর্থাৎ ৩রা এপ্রিল, কচির জওহরলাল নেহেরু আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয় হোম টিম কেরালা ব্লাস্টার্স এফসি ও ইস্টবেঙ্গল এফসি। প্রথম থেকে শেষ অবধি লেগে থাকার পরও ম্যাচ জিততে না পারায় হতাশ মুখে মাঠ ছাড়ে কেরালার সমর্থকরা। অন্যদিকে ভিন্ন চিত্র দেখা যায় লাল-হলুদ শিবিরের সমর্থকদের মধ্যে। মুখ ভর্তি হাসি নিয়ে স্টেডিয়াম ছাড়ে তারা। প্রথমার্ধ হাড্ডাহাড্ডি হলেও, দ্বিতীয়ার্ধ পুরোপুরি যায় ইস্টবেঙ্গলের নামে।
এদিন ম্যাচ শুরু হতেই আক্রমণে নামে হোম টিম কেরালা ব্লাস্টার্স এফসি। ২৩ মিনিটের মাথায় প্রথম গোলটি করে তারা। দলকে এগিয়ে দেন সার্নিচ। এরপরও তারা বেশ কয়েকটি সুযোগ পায় ব্যবধান বাড়ানোর, কিন্তু শেষ অবধি সদ্ব্যবহার করতে পারেনি তার। প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময় পেনাল্টি থেকে গোল করে ম্যাচে সমতা ফেরান সাউল ক্রেসপো।
তবে ছবিটা পুরো পাল্টে যায় দ্বিতীয়ার্ধতে। লাগাতার আক্রমণ করে কেরালার উপর চাপ সৃষ্টি করতে শুরু করে ইস্টবেঙ্গল। ৭১ মিনিটের মাথায় আবারো নায়ক হন ক্রেস্পো। গোল করে তিনি এগিয়ে দেন দলকে। এরপর ৮২ মিনিটের মাথায় ইস্টবেঙ্গল তৃতীয় গোলটি করে। এবারের গোলদাতা নাওরেম। যদিও ঘুরে দাঁড়ানোর সবরকম চেষ্টা করে ইভান ভুকমানভিছের ছেলেরা। ৮৪ মিনিটের মাথায় হিজাজী মাহেরের আত্মঘাতী গোলে ম্যাচের দ্বিতীয় গোলটি পায় কেরালা। তবে অবশেষে আবার ৮৭ মিনিটের মাথায় নাওরেমের গোলে ব্যবধান বাড়াতে সফল হয় ইস্টবেঙ্গল এবং শেষ পর্যন্ত ৪-২ গোলে ম্যাচ নিজেদের নামে করে নেয় ইস্টবেঙ্গল।
‘ফিরে দেখা সাতদিন’ আজ এই পর্যন্তই। আগামী সপ্তাহে আমরা ফের আপনাদের কাছে ফিরে আসবো সপ্তাহের সব নজরকাড়া খবর নিয়ে। ধন্যবাদ। সুপ্রভাত।