নিউজ ডেস্ক: প্রিয় পাঠক দিনের শেষে বঙ্গ-ভারতী নিউজের তরফ থেকে আপনাদের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে দিনের গুরুত্বপূর্ণ সব খবর। রাজ্য থেকে দেশ, কি ঘটলো ‘আজ সারাদিন’? দেখে নিন একনজরে এবং জেনে নিন বিস্তারিতভাবে।
লোকসভা নির্বাচনের আগে ধাক্কা গেরুয়া শিবিরের! জেএনইউতে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে এবিভিপিকে বড় ব্যবধানে হারালো বামেরা
লোকসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হতেই সমস্ত রাজনৈতিক দল নেমে পড়েছে জোরদার প্রচারে। তবে শুধু প্রচার নয়, লাগাতার আক্রমণে করে চলেছে একে অপরকে। একদিকে শাসকদল লাগাতার দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তোপ দাগছেন বিরোধীদের উপর। আবার অন্যদিকে বিরোধীরা বন্যা বইয়ে দিচ্ছে প্রতিশ্রুতির। সবমিলিয়ে, লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে গোটা ভারতবর্ষ পরিণত হয়েছে একটা আস্ত রনক্ষেত্রে।
কিন্তু এরই মাঝে একটু হলেও ব্যাকফুটে চলে গেল ভারতীয় জনতা পার্টি। রাজধানীর এক জনপ্রিয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরাজয়ের শিকার হলো তারা। ঠিক কি ঘটেছে? দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে (জেএনইউ) গোহারান হারলো অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি)। ছাত্র সংসদ নির্বাচনে বড়সড় জয় পেলো বামপন্থীরা। স্বাভাবিকভাবেই এই গুরুত্বপূর্ণ জয় পেয়ে সকল সদস্যই অত্যন্ত খুশি।
চলতি মাস, অর্থাৎ মার্চ মাসের ২২ তারিখে জেএনইউতে শুরু হয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন। কোভিডের কারণে প্রায় বছর পাঁচেক বন্ধ ছিল নির্বাচন। তবে এবার তা শুরু হতেই মোট ৭৩ শতাংশ ভোট পড়ে, যা সর্বকালের সেরা বলে মনে করা হচ্ছে। ফলাফল সামনে আসতেই দেখা যায় যে চারটির চারটি আসনই গেছে বামেদের ঝুলিতে। সভাপতি পদে জেতেন ধনঞ্জয়। তিনি হারান উমেশচন্দ্র আজমিকে। সহ-সভাপতি পদে অভিজিৎ ঘোষ কিস্তিমাত করেন দীপিকা শর্মাকে। অন্যদিকে প্রিয়াংশী আর্য রুখে দেন অর্জুন আনন্দকে এবং যুগ্ম সম্পাদক আসনে মহম্মদ সাজিদ পরাস্ত করেন গোবিন্দ ডাঙ্গিকে। সবমিলিয়ে, লাল ঝড়ে গুঁড়িয়ে যায় গেরুয়া দাপট।
উল্লেখ্য, বরাবরই রাজনৈতিক ইস্যুতে শিরোনামে উঠে আসতো দিল্লির জেএনইউর নাম। মাঝেমধ্যেই বিজেপি-আরএসএস রাজধানীর এই জনপ্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের ‘টুকরে টুকরে গ্যাং’ বা ‘আর্বান নকশাল’এর তকমা দিতো। অন্যদিকে বাম ছাত্র সংগঠনগুলি এবিভিপির বিরুদ্ধে বহিরাগত দুষ্কৃতীদের দিয়ে ছাত্রদের উপর আক্রমণের অভিযোগ তুলতো। তুঙ্গে থাকতো লড়াই। ৫ই এপ্রিল বিনয় শর্মার পরিচালনায় একটি ছবি মুক্তি পেতে চলেছে যেখানে জেএনইউ-কে ‘জাহাঙ্গির ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি’ নাম দেওয়া হয়েছে।
আরো কড়াকড়ি নির্বাচন কমিশনের! এপ্রিলের শুরুতে বাংলায় ২৭ কোম্পানির বাহিনী
দোরগোড়ায় লোকসভা নির্বাচন। ইতিমধ্যেই দিনক্ষণ ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে। সমস্ত রাজনৈতিক দল ময়দানে নেমে পড়েছে প্রচার করতে নিজেদের দল ও প্রার্থীর। সকলেরই একটাই লক্ষ্য এবং সেটা হল জয়। একদিকে যখন শাসকদল চাইবে নিজের গোদি বাচাতে, তেমনি অন্যদিকে বিরোধীদের প্রধান লক্ষ্য হবে ক্ষমতায় ফেরা। সুতরাং এই কদিন যে গোটা ভারতবর্ষের চিত্র যে অন্যরকম থাকবে, তা বেশ স্পষ্ট।
কিন্তু একইসাথে নির্বাচন কমিশনেরও একটা বড় লক্ষ্য থাকবে এবং সেটা হল শান্তিতে এবং সুষ্ঠুভাবে ভোট করানো। সেই কারণেই এবার বাংলার ক্ষেত্রে একটি বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তাদের তরফ থেকে। কি সেই সিদ্ধান্ত? ভোট ঘোষণার আগেই ১৫০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানো হয়েছিল রাজ্যে। কিন্তু এবার এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে আরও ২৭ কোম্পানি বাহিনী আসবে বাংলায়। এমনটাই জানিয়েছে কমিশন একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে যে ১লা এপ্রিলের শুরুতে যেই ২৭ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী আসছে, তাদের মধ্যে সিআরপিএফ ১৫, সিআইএসএফ ৭ এবং বিএসএফ ৫ কোম্পানি। তবে কোথায় মোতায়েন করা হবে, সেই সিদ্ধান্তটা পুরোপুরি রাজ্যের উপর নির্ভর করছে। তবে জানা গিয়েছে যে এই ব্যাপারে রাজ্যের সঙ্গে ইতিমধ্যেই যোগাযোগ করে ফেলেছে কমিশন। এবার দেখার বিষয় যে শেষ পর্যন্ত কি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় রাজ্যের তরফ থেকে।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানোর সিদ্ধান্তকে মাঝেমধ্যেই কটাক্ষ করে বাংলার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। ঘাসফুল শিবিরের বক্তব্য যে কেন্দ্র সরকার ক্ষমতার অপব্যবহার করছে। অন্যদিকে, বঙ্গ বিজেপি লাগাতার দাবি করে যে রাজ্যে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়না এবং তা করতে হলে কেন্দ্রীয় বাহিনী অত্যন্ত জরুরি। তবে এই সবকিছুর মাঝে বড় দাবি করে ফেলেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন মুখপাত্র কুনাল ঘোষ। সাংবাদিক সম্মেলন হোক কি নিজের এক্স হ্যান্ডেল, দুটোতেই তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে রাজ্যে জয় তৃণমূলেরই হবে। এখানেই শেষ নয় তিনি এটাও জানিয়ে দিয়েছেন যে কে কটা আসন পাবে। তৃণমূল নেতার মতে তাঁর দল পাবে ৩০-৩৫টি আসন ও বাকিগুলি পাবে গেরুয়া শিবির এবং শূন্যে থাকবে বাম-কংগ্রেস জোট। এবার দেখার বিষয় যে শেষ পর্যন্ত কার মুখে ফোটে হাসি। সব জানা যাবে আর কিছুদিনের মধ্যে।
‘আজ সারাদিন’ আজ এই পর্যন্তই। আগামীকাল আমরা ফের আপনাদের কাছে ফিরে আসবো দিনের সব নজরকাড়া খবর নিয়ে। ধন্যবাদ। শুভরাত্রি।