নিউজ ডেস্ক: প্রিয় পাঠক দিনের শেষে বঙ্গ-ভারতী নিউজের তরফ থেকে আপনাদের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে দিনের গুরুত্বপূর্ণ সব খবর। রাজ্য থেকে দেশ, কি ঘটলো ‘আজ সারাদিন’? দেখে নিন একনজরে এবং জেনে নিন বিস্তারিতভাবে।
সিএএ থেকে এজেন্সির দাপট! ধুবুলিয়ার সভা থেকে কি বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?
লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল-বিজেপি লড়াই তুঙ্গে বাংলায়। ধুবুলিয়ার জনসভা থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে একাধিক ইস্যু নিয়ে ফের সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আবারো সকলকে সাবধান করলেন সিএএ নিয়ে। এখানেই শেষ নয়, তৃণমূল সুপ্রিমো দলের সকল নেতানেত্রীদের স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন সিবিআই বা ইডি ডাকলে কি করে নির্ভয়ে তাদের জবাব দিতে হবে।
রবিবার, অর্থাৎ ৩১শে মার্চ, লোকসভা নির্বাচনের প্রচার শুরু করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কৃষ্ণনগরের প্রার্থী মহুয়া মৈত্রের সমর্থনে ধুবুলিয়ায় একটি সভা করলেন মাননীয়া। এদিন দলের কর্মী ও সমর্থকদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। মঞ্চ থেকে তিনি একাধিক বিষয়ে সুর চড়ান। প্রায় ঘন্টাখানেকের কাছাকাছি, তিনি বক্তৃতা দেন। পাশাপাশি, সকলকে দেন বেশকিছু প্রতিশ্রুতিও।
এদিন ফের মুখ্যমন্ত্রীর মুখে শোনা যায় সিএএ নিয়ে সতর্কবার্তা। তিনি বলেন, “সকল মতুয়া ভাইবোনেদের কাছে আমার অনুরোধ যে আপনারা সিএএর ফাঁদে ভুলেও পা দেবেন না। ওটা মাথা আর ল্যাজা হচ্ছে এনআরসি। যারা বলছেন নাগরিকত্ব পেয়ে যাবেন, তারা সম্পূর্ণ ভুল। সিএএ করা মানে এনআরসির আওতায় পড়ে যাওয়া। আবেদন করা মানেই বিদেশী হয়ে যাওয়া। আপনাদের সবকিছু তো কেড়ে নেবেই, পাশাপাশি ডিটেনশন ক্যাম্পেও আপনাদের পাঠিয়ে দেবে। কি দরকার ওসব করার? এমনিই আপনারা ভালো আছেন। আমরাও চাই আপনারা ভালো থাকুন শান্তিতে থাকুন। আপনারা কি নিজেদের সর্বনাশ ডেকে আনতে চান?”
এরপরই তৃণমূল সুপ্রিমো বিজেপি প্রার্থীদের সিএএতে আবেদন না করা নিয়ে একহাত নেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আগে বিজেপি নেতাদের বলুন আবেদন করতে। লোকসভা নির্বাচনে যারা বিজেপি প্রার্থী তারা কেন আবেদন করছেন না জানেন? কারণ তারা ভালো করেই জানে যে আবেদন করলে তারা নাগরিকত্ব হারাবে এবং নির্বাচনেও দাঁড়াতে পারবেনা। সিএএ করার যদি ক্ষমতা থাকতো তাহলে একবছর আগে কেন করলোনা? শুধু নির্বাচন এলে ভাওতা। যেই আবেদন করবেন, তক্ষুনি সব শেষ। এরপর দেখবেন ইউনিফর্ম সিভিল কোড নিয়ে আসবে।”
এদিনের সভা থেকে ‘এজেন্সি রাজ’ নিয়েও মুখ খোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “ইডি বা সিবিআই চিঠি পাঠালে জানিয়ে দেবেন যে নির্বাচনের প্রচারের জন্য ব্যস্ত আছি। যা হবে ভোটের পর দেখা যাবে। বাংলা নিয়ে যদি ওরা এতই নিশ্চিত হয়, তাহলে এতো এজেন্সি পাঠানোর কি দরকার? কেনই বা রাজ্যের অফিসারদের বদলি করে দিতে হচ্ছে? কিসের ভয় পাচ্ছে বিজেপি? আমার ১৫জন ভোট ম্যানেজারকে এনআইএ হাওড়া থেকে গ্রেফতার করে নিলো। এছাড়া আমার জেলা প্রেসিডেন্টকে নোটিস পাঠাচ্ছে। ভোটপ্রক্রিয়া চলাকালীন এসব করা যায়না। ওদের ভয় পাওয়ার এতো দরকার নেই।”
দিল্লির রামলীলা ময়দানে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সমর্থনে আওয়াজ ওঠালো ইন্ডিয়া জোট
অবশেষে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী, তথা আম আদমি পার্টি প্রধান, অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সমর্থনে ময়দানে নামল ইন্ডিয়া জোট। দিল্লির রামলীলা ময়দানে এদিন আয়োজন করা হয় ‘লোকতন্ত্র বাঁচাও’ অনুষ্ঠান। উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী নেতানেত্রীরা। বাংলার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসও নিজেদের সদস্য পাঠায়। সকলেই এজেন্সির অপব্যবহার নিয়ে একহাত নেয় কেন্দ্র সরকার, অর্থাৎ ভারতীয় জনতা পার্টিকে।
সম্প্রতি, আপের তরফ থেকে ‘লোকতন্ত্র বাঁচাও’ কর্মসূচির কথা ঘোষণা করা হয়েছিল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেফতারির বিরোধিতা করতে। রবিবার, অর্থাৎ ৩১শে মার্চ, তা আয়োজিত হয় রাজধানীর রামলীলা ময়দানে। আজ দলের কর্মী ও সমর্থকদের ভিড় ছিল অজস্র। এদিন ইন্ডিয়া জোটের দলগুলির নেতারা বক্তব্য রাখেন আপ সুপ্রিমোর পক্ষে এবং একইসাথে তীব্র নিন্দা করেন ভোটের আগে বিজেপির এজেন্সি অপব্যবহারের।
এদিন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর স্ত্রী সুনিতা কেজরিওয়াল দাবি করেন তাঁর স্বামী একজন সিংহ এবং ওনাকে বেশিদিন আটকে রাখা যাবেনা। তিনি বলেন, “আপনাদের সকলের প্রিয় মুখ্যমন্ত্রী জেল থেকে বার্তা পাঠিয়েছেন। কিন্তু তার আগে আমি আপনাদের সকলকে কিছু প্রশ্ন করতে চাই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আমার স্বামী শ্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে জেলে পাঠিয়েছেন। আপনাদের কি মনে হয় উনি ঠিক করেছেন। আপনাদের কি মনে হয় উনি একজন প্রকৃত দেশপ্রেমিক এবং সৎ ব্যক্তি? বিজেপির বক্তব্য যে উনি এখন কারাগারে এবং সেই কারণেই ওনার পদত্যাগ করা উচিত। আপনাদেরও কি তা মনে হয়? আপনাদের সকলের কেজরিওয়াল একটা সিংহ। বিজেপি ওনাকে বেশিদিন জেলে বন্দি করে রাখতে পারবেনা।” এছাড়াও বাকিরা নিজেদের বক্তব্য পেশ করেন এই প্রসঙ্গে।
তবে এদিনের বিশেষ চমক তৃণমূল কংগ্রেসের ইন্ডিয়া জোট প্রসঙ্গে নিজের অবস্থান প্রকাশ্যে আনা। দলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, “ইন্ডিয়া জোটে তৃণমূল ছিল, আছে এবং থাকবে। আমরা দুটো আসন ফাঁকা রেখেছি কেজরীওয়াল জি এবং সোরেন জির জন্য। আপনারা আমাদের সঙ্গেই রয়েছেন। নরেন্দ্র মোদি যে গ্যারান্টি দিয়েছেন, সেগুলো আসলে জিরো ওয়ারেন্টি।”
‘আজ সারাদিন’ আজ এই পর্যন্তই। আগামীকাল আমরা ফের আপনাদের কাছে ফিরে আসবো দিনের সব নজরকাড়া খবর নিয়ে। ধন্যবাদ। শুভরাত্রি।