নিউজ ডেস্ক: প্রিয় পাঠক দিনের শেষে বঙ্গ-ভারতী নিউজের তরফ থেকে আপনাদের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে দিনের গুরুত্বপূর্ণ সব খবর। রাজ্য থেকে দেশ, কি ঘটলো ‘আজ সারাদিন’? দেখে নিন একনজরে এবং জেনে নিন বিস্তারিতভাবে।
রামমন্দির উদ্বোধন ও ৩৭০ ধারা বিলোপ নিয়ে মতামত জানালেন মোদি
পবিত্র ঈদের প্রাক্কালে গোটা দেশবাসীকে প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানান দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে এর সঙ্গে অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধন নিয়েও মুখ খোলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন যে বহু বছরের অপেক্ষার পর রামলালা নিজের ঘরে ফিরতে পেরেছেন। এখানেই শেষ নয়, তিনি আরো জানান যে স্বর্গীয় আশীর্বাদ পেয়েছিলেন বলেই প্রাণপ্রতিষ্ঠায় অংশ নিতে পেরেছেন।
বুধবার, অর্থাৎ ১০ই এপ্রিল, মার্কিন সংবাদসংস্থা নিউজউইকের সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে বসেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এদিন নানা বিষয়ে নিজের গুরুত্বপূর্ণ মতামত জানান তিনি, যার মধ্যে একটি ছিল অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধন। এছাড়াও ৩৭০ ধারা বিলোপ নিয়েও মুখ খোলেন তিনি। এই বিষয়গুলিতে তাঁর অবস্থান কি, তা তিনি সকলকে জানিয়ে দেন গতকাল।
এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, “ভগবান শ্রী রামচন্দ্রের মন্দিরের উদ্বোধনের সাক্ষী হতে পেরে আমি খুব খুশি এবং ধন্য। যখন আমাকে এই প্রাণপ্রতিষ্ঠার অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার কথা বলা হয়, তখন আমি জানতাম যে আমাকে দেশবাসীর প্রতিনিধিত্ব করতে ১৪০ কোটি দেশবাসীর। কয়েকশো বছর ধরে আমাদের দেশের সকল রামভক্ত এই দিনটার জন্য অপেক্ষা করেছিল। সকলেই অপেক্ষা করছিল যে কবে রামলালা নিজের ঘরে ফিরবেন। রামমন্দির উদ্বোধন হওয়ার পরই গোটা দেশ আনন্দ ও উৎসবে মেতে উঠেছে। স্বর্গ থেকে এমন আশীর্বাদ না থাকলে এই দিনটার সাক্ষী আমি হতে পারতামনা।”
এরপর প্রধানমন্ত্রী ভগবান শ্রী রামচন্দ্রের জীবন নিয়েও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেন। তাঁর বক্তব্য, “আমাদের সভ্যতার সঙ্গে মিশে গিয়েছে ভগবান শ্রী রামচন্দ্রের জীবনযাত্রা। তাই ১১ দিন ধরে আমি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সফর করেছি যেখানে ভগবান রামের পদচিহ্ন পড়েছে। তবে হ্যাঁ ওই সফরে গিয়ে আমি ভালো করে বুঝতে পেরেছি যে উনি আমাদের প্রত্যেকের মধ্যেই সম্মানের সঙ্গে বিরাজ করেন। ভগবান শ্রী রামচন্দ্র আমাদের সকলের মধ্যেই রয়েছে।”
অন্যদিকে ৩৭০ ধারা বিলোপ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দেখুন এই বিষয়ে আমি আপনাকে এটাই বলবো যে অন্যের মুখের কথা বিশ্বাস না করে আপনি নিজে একবার কাশ্মীর যান আর দেখুন এখন ওখানে কতটা পরিবর্তন হয়েছে। যেভাবে সুশাসন ও উন্নয়ন হচ্ছে তাতে ওখানকার লোকেরা খুবই খুশি। আগে যেভাবে ওখানে সাধারণ মানুষের জীবন চাপে পড়তো সন্ত্রাস ও বিক্ষোভের জন্য, এখন আর তা দেখাই যায়না। মানুষ এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি শান্তিতে রয়েছে কাশ্মীরে।”
ঈদের দিনে সিএএ-এনআরসি নিয়ে বিজেপিকে আক্রমণ করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
আজ খুশির ঈদ। আনন্দের জোয়ারে ভাসছে ইসলাম সম্প্রদায়ের সকল মানুষ। উৎসবের আবহাওয়ায় পাল্টে গেছে চারিদিকের পরিস্থিতি। কিন্তু আজও কেন্দ্রীয় সরকারের ঘোষিত বিতর্কিত সিএএ-এনআরসি নিয়ে সুর চড়ালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রেড রোডের মঞ্চ থেকে এদিন ফের মুখ্যমন্ত্রী বললেন যে সিএএ হলো মাছের মাথা এবং লেজা হলো এনআরসি। এখানেই শেষ নয়, এদিন তৃণমূল সুপ্রিমো অভিন্ন দেওয়ানিবিধি নিয়েও মুখ খোলেন। সর্বশেষে মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত সকলকে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন যে ঘাসফুল শিবির সিএএ, এনআরসি বা অভিন্ন দেওয়ানিবিধি মানেনা।
বৃহস্পতিবার, অর্থাৎ ১১ই এপ্রিল, ইসলাম ধর্মের পবিত্র উৎসব ঈদ উপলক্ষে নামাজের আয়োজন করা হয় কলকাতার রেড রোডে। এদিন ইসলাম সম্প্রদায়ের লোকেদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। সেখানে উপস্থিত হন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়াও সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ও। প্রথমে তিনি সকলকে শুভেচ্ছা দেন। এরপর এদিন মুখ্যমন্ত্রী ফের আওয়াজ ওঠান সিএএ-এনআরসির বিরুদ্ধে।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আপনাদের আমি বলে রাখি যে সিএএ হলো মাছের মাথা। ল্যাজাটা হলো এনআরসি আর মাছের পেটিটা কি জানেন? ওটা হলো অভিন্ন দেওয়ানিবিধি। কিন্তু আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি যে আমরা এগুলো মানবোনা। কোনরকমের কোন গায়ের জোর বরদাস্ত করবোনা। না সিএএ, না এনআরসি, না অভিন্ন দেওয়ানিবিধি, আমরা একটাও মানবোনা। সকলের যেমন নিজস্ব অধিকার ছিল, তেমনই থাকবে। আজ যারা জনপ্রতিনিধি হয়েছেন, তারা সকলেই জনতার ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। যদি আমরা নাগরিক না হই, তাহলে আপনারাও নাগরিক নন। মৃত্যু আমাকে ভয় পায়, আমি মৃত্যুকে ভয় পাইনা। আমার কাছে যদি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ কিছু থাকে, তাহলে সেটা হলো আপনাদের সকলের নিরাপত্তা।”
এছাড়া এদিন এজেন্সিরাজ নিয়েও ফের মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তৃণমূল সুপ্রিমো দাবি করেন যে লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে বিরোধী দলের নেতা ও মন্ত্রীদের পেছনে এজেন্সি লাগিয়ে দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “নির্বাচন শুরুর আগে সকলের বিরুদ্ধে ওরা ইডি, সিবিআই, এনআইএ লাগিয়ে দিচ্ছে। আমি বলেছি যে এর থেকে ভালো একটা জেলখানা বানিয়ে দিন। সেখানেই নাহয় সকলে চলে যাবে। কিন্তু ১৩২ কোটি মানুষকে আপনারা জেলে ভরতে পারবেন তো? আমরা লড়াই করি রয়েল বেঙ্গল বাঘের মতো। ভোট যতো এগিয়ে আসছে, ওরা মুসলিম নেতাদের ফোন করে টোপ দেওয়ার চেষ্টা করছে।”
‘আজ সারাদিন’ আজ এই পর্যন্তই। আগামীকাল আমরা ফের আপনাদের কাছে ফিরে আসবো দিনের সব নজরকাড়া খবর নিয়ে। ধন্যবাদ। শুভরাত্রি।