#পরিপূরক_ফুলে_দম্পতি
মহারাষ্ট্রের সাতারা জেলার নাইগাওয়ে ১৮৩১ সালের ৩ রা জানুয়ারি মালি সম্প্রদায়ের এক দম্পতির ঘরে জন্ম হয় সাবিত্রী দেবীর। হিন্দু মালি সম্প্রদায় পেশাগত ভাবে কৃষক বা বাগানের মালি। আদরে যত্নে একটি বাগান বা ক্ষেতকে ফলে ফুলে সুন্দর করে সাজিয়ে তোলাই মালি সম্প্রদায়ের পেশা। সাবিত্রী দেবীও এর অনথ্যা করেননি। তিনি আদরে যত্নে সাজিয়ে তুলতে চেয়েছিলেন তৎকালীন হিন্দু সমাজকে। বারবার বিদেশী শত্রুর আক্রমণের ফলে হিন্দু সমাজ রক্ষণশীল হয়ে পড়ে। হিন্দু নারীরা হয়ে যায় পর্দানশীন। হিন্দু সমাজের বহু ক্ষেত্রে ঘুণ ধরে যায়। শাস্ত্র চর্চার অভাবে প্রগতিশীলতাকে উপেক্ষা করে হিন্দু সমাজ যখন ঐতিহ্য ও পরম্পরাকে আঁকড়ে ধরেছিল ঠিক সেই সময়েই আবির্ভাব ঘটে এই মহিয়সী নারীর। নিজের বুদ্ধি, ধৈর্য্য, সৎ ও মমতাময়ী ব্যক্তিত্বের দ্বারা তিনি যত্ন সহকারে সাজিয়ে তুলতে চেয়েছিলেন তৎকালীন হিন্দু সমাজকে। তাঁর প্রতি কাজে সাহস ও শক্তির আধার ছিলেন তাঁর স্বামী জ্যোতিরাও ফুলে।
১৮৪০ সালে মাত্র নয় বছর বয়সে ১২ বছর বয়সী জ্যোতিরাও ফুলের ঘরণী হন সাবিত্রী দেবী। স্বামী স্ত্রীয়ের পড়াশুনার প্রতি আগ্রহ দেখে নিজের উদ্যোগে স্ত্রী কে লেখাপড়া করান। জ্যোতিরাও ফুলে ছিলেন তৎকালীন সময়ের একজন প্রগতিশীল লেখক ও সমাজসংস্কারক। স্বামীর চিন্তাধারা ও কর্ম দ্বারা বিশেষ ভাবে প্রভাবিত হন সাবিত্রী দেবী। পরবর্তীতে তিনিও স্বামীর পথ অনুসরণ করেন। সাবিত্রী দেবীর সংস্কার মূলক কাজের জন্য তাঁকে “ভারতীয় নারীবাদের জননী” বলা হয়।
ঊনবিংশ শতকে হিন্দু নারীর শিক্ষা ও ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিলেন ফুলে দম্পতি। পুনের প্রথম মহিলা বিদ্যালয় ও তাঁরাই প্রতিষ্ঠা করেন। বাল্য বিবাহ ও সতিপ্রথার বিপরীতেও পদক্ষেপ নেন তাঁরা। বিধবা বিবাহ ও বাল্য বিধবাদের শিক্ষা এবং মুক্তির স্বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রেও এই মারাঠি দম্পতির ভূমিকা অনস্বীকার্য।
সাবিত্রী দেবীর বান্ধবী ফতেমা শেখও তাঁর সাথে এই কাজে ব্রতী হয়েছিলেন। সমাজের অসহযোগিতা সত্ত্বেও তাঁরা পিছপা হননি। তাঁরা সমাজে সমানাধিকারের পক্ষেও বহু পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। অস্পৃশ্যতার কালো ছায়া কে সমাজের থেকে নির্মূল করতে চেয়েছিলেন তাঁরা। ১৮৭৩ সালে তাঁরা পুনেতে “সত্যশোধক সমাজ” প্রতিষ্ঠা করেন। সমাজে নির্যাতিত নারী, শুদ্র, দলিত সকলের জীবনে সুস্থতা ও স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছিল এই সংস্থা। ফুলে দম্পতি কৃষক ও শ্রমিকদের জন্য একটি নাইট স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। গরিব ছাত্রদের স্কুলছুট রুখতে তাঁদের স্টাইপেন দেওয়ার ব্যবস্থাও তাঁরা করেন। ১৮৭৬ এর মন্বন্তরের সময় পুনেতে তাঁরা ৫২ টি বিনামূল্যের ফ্রী হোস্টেল প্রতিষ্ঠা করেন।
১৮৬৩ সালে ফুলে দম্পতি ” বাল হত্যা প্রতিবন্ধক গৃহ” নামে একটি কেয়ার সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন। যেখানে সন্তানসম্ভবা ব্রাহ্মণ পরিবারের বিধবা এবং ধর্ষণের শিকার যে সকল মহিলারা ছিলেন তারা অত্যন্ত সুরক্ষিত পরিবেশে সন্তান প্রসব করতেন। অপুষ্টি এবং শিশুমৃত্যুকে নির্মূল করতেই তাঁরা এই উদ্যোগ নিয়েছিলেন। সন্তানহীন এই দম্পতি পরবর্তীতে এক ব্রাহ্মণ বিধবার পুত্রকে দত্তক নেন এবং তাকে একজন ডাক্তার তৈরী করেন।
১৯৯৭ সালে যখন বিশ্বের তৃতীয় মহামারী প্লেগের দাপটে মহারাষ্ট্র দিশেহারা তখন পুত্র ডাক্তার যশবন্ত রাওয়ের সাথে একত্রে সাবিত্রী দেবী পুনেতে একটি ক্লিনিক খোলেন। সেখানে মহামারী আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা করতেন যশবন্ত রাও এবং রোগীর সেবা করতেন সাবিত্রী দেবী। প্লেগ রোগীর সেবা করতে গিয়েই তিনি এই রোগে আক্রান্ত হন এবং ১৮৯৭ এর ১০ই মার্চ মৃত্যু হয় তাঁর।
#Men_do_not_cry – they do but they don’t show up
এক স্কুল শিক্ষক পুরুষকে সেদিন বললাম – পুরুষেরাও ধর্ষণের শিকার হন। উত্তরে উনি বললেন তা নিশ্চয়ই শতাংশে অনেক কম, এর চাইতে নারী ধর্ষণের সংখ্যা অনেক বেশি। স্তব্ধ হয়ে গেলাম। বুঝলাম যে শতাংশে কম হলে তার প্রতিকার নিয়ে দাবী জানানো যায় না। বুঝলাম যে বর্তমান ভারতীয় সমাজ Gender equality এর কথা বললেও পুরুষের অধিকার রক্ষা বিষয়ে বিশেষ উৎসাহী নয়। বুঝলাম যে, এই সমাজে যেখানে নারী অধিকার সুরক্ষিত করার আন্দোলন টাই সর্বত্র জোরদার সেখানে পুরুষের অধিকার নিয়ে আন্দোলন করা বেশ কষ্টকর। লিঙ্গ নিরপেক্ষ মনোভাব নিয়ে নারী দ্বারা অত্যাচারীত কোনো অসহায় পুরুষের পাশে দাঁড়ালে কপালে জুটবে চূড়ান্ত ভর্ৎসনা। তবুও বলতে হবে। আসল সত্যগুলো যদি মিডিয়া বলতো তাহলে সমাজে পুরুষ অধিকার কর্মীদের সত্য বলতে এগিয়ে আসতে হতো না।
আন্তর্জাতিক নারী দিবসে গুগল তার ডুডলের মাধ্যমে শুভেচ্ছা জানিয়েছিল। ফেসবুক দিয়েছিলো নোটিফিকেশন। সব কটি স্যোশাল মিডিয়ায় উপচে পড়েছিল শুভেচ্ছা বার্তা। কিন্তু আজ সবাই নিঃশব্দ। গুগল তার ডুডলে কোন শুভেচ্ছা জানালো না। ফেসবুক ও কোনো নোটিফিকেশন পাঠালো না। স্যোশাল মিডিয়ায় দুই একজন ছাড়া কারোর কোনো বক্তব্য নেই। নারী দিবসের দিন যে নারীরা পুরুষের থেকে শুভেচ্ছা বার্তা পায়, আজ তারাও পাল্টা শুভেচ্ছা তাদের পরিচিত পুরুষদের জানিয়েছেন কিনা তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। আসলে – “স্বামীকে হত্যা করে খাটের নিচে পুঁতে রেখে সেই খাটের উপড়েই সারারাত প্রেমিকের সাথে রাত্রিবাস করলো স্ত্রী”- এই সংবাদে যে সমাজের নারী পুরুষ নির্বিশেষের মধ্যে হাসির উদ্রেক হয়, কমেন্ট দেখে যেখানে মনে হয় এটা কোন অপরাধ নয় বরং ” ঐ খবর টি একটি মিম মেটেরিয়াল “! সেই সমাজের কাছ থেকে এর চাইতে বেশি আর কী কাম্য থাকতে পারে। যে সমাজে এক নারী গর্বের সাথে স্যোশাল মিডিয়ায় বলতে পারে – ” বিয়ের পর বরের মুখে অ্যাসিড ছুড়ে মারবো, যাতে বর আর পরকীয়া করতে না পারে ” – সেই সমাজে আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস নিয়ে যে কারোর বিশেষ মাথা ব্যথা থাকবে না এটা বোঝাই যায়। “নারী মানেই অসহায়,অত্যাচারীত”এবং “পুরুষ মানেই ধর্ষক” – এমন চিন্তাভাবনা পোষণ করে যে সমাজ সেই সমাজে “পুরুষ দিবসের শুভেচ্ছা” কখনোই উপচে পড়বে না। আর এটাই স্বাভাবিক।
তবুও আজ আন্তর্জাতিক পুরুষদিবস উপলক্ষে কিছু তথ্য সকলকে জানানোর ভারি ইচ্ছা জাগলো মনে। সেজ পাবলিকেশনের আর্টিকেল, মালিক ও নেড্ডাজির স্টাডি, ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের রিপোর্ট এবং ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর তথ্যের উপর ভিত্তি করে – ভারতবর্ষের পুরুষদের সাথে ঘটতে থাকা অপরাধের একঝলক তথ্য ভাগ করে নিচ্ছি আপনাদের সাথে। —————–
১. ভারতবর্ষে আজ অবধি যত আইন তৈরী হয়েছে তা সবই নারী সুরক্ষা কেন্দ্রীক। IPC Section – 377 “Crime against Men” এর উপর কাজ করলেও, তা শুধুমাত্র “পুরুষের সাথে হওয়া Penile Sexual Intercourse” পর্যন্তই সীমাবদ্ধ। অর্থাৎ, Non-penile abuse গুলি পুরুষের ক্ষেত্রে অপরাধ বলে গন্যই হয় না। কোন নারীর ওড়না ধরে টান দিলে তা আইনের কাছে punishable offense কিন্তু এক নারী যদি একটি পুরুষের জামা ছিঁড়ে দেয় প্রকাশ্য রাস্তায় তা মোটেও অপরাধ নয় বা Sexual abuse এর মধ্যেও পড়ে না।
২. মানসিক নির্যাতন –
কোনো নারী কে তার গায়ের রঙ বা বাপের বাড়ির অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে বিদ্রুপ করলে, সমালোচনা করলে বা কথা শোনালেন তা অবশ্যই অপরাধ। কিন্তু এর উল্টো টা হলে তা আইনের আওতায় পড়ে না। 85% Criticism, 29% insulting, 3.5% threatened or hurt – ভারতবর্ষের পুরুষরা নারীদের দ্বারা লাভ করে থাকেন। কিন্তু থানায় এই ঘটনাগুলো নিয়ে কোন ডায়রি হয়না। এছাড়াও ভারতের পুরুষদের সাথে হওয়া Force Marriage এর অপরাধ তো খুব ই কমন। সুযোগ সন্ধানী নারী আইনের সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন অছিলায় চাপ দিয়ে পুরুষকে বিবাহ করতে বাধ্য করে। কিন্তু এ নিয়ে বলতে গেলে সমাজ বিশ্বাস করে না। তবে উল্টো দিকের কথা সমাজ খুব সহজেই বিশ্বাস করে নেয়। কত নারী বিবাহের আগের দিন বিবাহ ভেঙে দেয়। কিন্তু সেগুলো খবর হয় না।
ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরো দ্বারা প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা গেছে ভারতের 85% বধু নির্যাতনের কেস, 73% ধর্ষণের কেস, 76% শ্লীলতাহানির অভিযোগ মিথ্যা। নারীরা বহু ক্ষেত্রেই মিথ্যা মামলা সাজিয়ে পুরুষদের বিপদে ফেলেন। ভারতের নারীকেন্দ্রিক আইনের দৌলতে তার অপরাধ প্রমাণ হলেও সামান্য জরিমানা ছাড়া আর কোন সাজা পান না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মিথ্যা মামলায় নারীটিই জয়লাভ করে। সমাজ ও তাকেই বিশ্বাস করে। এর সাথে যুক্ত আছে আরকটি মিথ্যা অভিযোগ – পণ নেওয়ার মিথ্যা অভিযোগ। সমাজ বিশ্বাসই করতে চায় না যে, একজন নারী ও তার পরিবারও মিথ্যা বলতে পারে। সমাজ প্রথম থেকেই ধরে নেয় পুরুষ এবং তার পরিবারটিই আসল দোষী।
৩. শারীরিক নির্যাতন –
বর্তমানে পুরুষের উপর তার স্ত্রীর শারীরিক নির্যাতনের অনেক ভিডিও স্যোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হচ্ছে। কিন্তু তাতে মানুষের প্রতিক্রিয়া সত্যিই হতাশাজনক। ভিডিও গুলো দেখে সমাজের পুরুষরা পর্যন্ত কৌতুক উপভোগ করেন। নারীরা তো এমন মন্তব্যও করেন যে – “যা হয়েছে ঠিক হয়েছে, এমনই হওয়া উচিত”। কারোর মনেই হয়না এটাও বধু নির্যাতনের মত সমান অপরাধ। সর্বসমক্ষে স্ত্রীকে চড় মারা এবং তার পরবর্তীতে স্ত্রীয়ের ডিভোর্স ফাইল করা নিয়ে দেশে সিনেমা তৈরী হয়। কিন্তু উল্টো টি সমাজের চোখে খুব সাধারণ ঘটনা। সর্বসমক্ষে স্ত্রী স্বামী কে চড় কষিয়েছে শুনলেই সমাজের মনে হয়- নিশ্চয়ই স্বামীই কোন চরম অপরাধ করেছে। আসলে কোনো যাদুবলে সমাজের এই রকম মাইন্ড সেট হয়ে রয়েছে। Domestic violence IPC Section 498A তে Criminal offence এর আওতায় পড়ে। আর NCRB এর রিপোর্ট বলছে – ভারতের 51.5% পুরুষ এই Domestic violence এর শিকার। যেখানে USA, UK, Canada তে সেই পরিমাণ টা 19.3%। তবুও ভারতীয় সমাজের কাছে, ভারতের আইনের চোখে নারীরাই একমাত্র নির্যাতিত এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজে। স্বামীর দিকে কোন অবজেক্ট ছুঁড়ে মারা, কোন অবজেক্ট দ্বারা স্বামীকে আঘাত করা, স্বামীকে থাপ্পড় মারা – এগুলো কোন কিছুই অপরাধ নয়। এ নিয়ে অভিযোগ জানাতে গেলেও সমাজ পুরুষ টিকেই সন্দেহের চোখে দেখা হয়। উল্টো দিকে স্ত্রীয়ের দোষের কারণে স্বামী তার স্ত্রী কে আঘাত করলে সেটাও একান্তই স্বামীর দোষ বলেই ধরা হয়। পিছনে কারণ যাই থাকুক। কত পুরুষ বাড়িতে, কাজের জায়গায় Sexually assaulted হয়। কিন্তু সমাজে সম্মান হারানোর ভয়ে তাঁরা তা প্রকাশ করে না। আর সাহস নিয়ে প্রকাশ করলেও সমাজ তাকেই দোষীর নজরে দেখে।
৪. আত্মহত্যা – ভারতের মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের আত্মহত্যার হার 2.5 গুন বেশি। ভারতের আত্মহত্যার মধ্যে 75% আত্মহত্যা পুরুষের। এর মধ্যে বিবাহিত পুরুষের সংখ্যাটাই অধিক। তবুও এই সমাজ মনে করে নারীরাই একমাত্র নির্যাতিত।
সকলের ধারণা শুধু নারী লজ্জা পায়, ভয় পায় থানায় অভিযোগ জানাতে, আন্দোলন করতে। পুরুষরাও সমানভাবে ভয় পায়, লজ্জা পায় অভিযোগ জানাতে। কারণ তাদের নাকি কাঁদতে নেই, তাদের নাকি কষ্ট হয় না। যে পুরুষের মনে আঘাত লাগে, যে পুরুষ কেঁদে ওঠে – সে নাকি পুরুষই নয়। এমন ধারণার বশবর্তী হয়ে সমাজে অপমানিত হওয়ার ভয়ে পুরুষও মুখ খোলে না। স্ত্রীয়ের কাছে রোজ মার খায় সে – একথা প্রকাশ হলে তার কপালে বিদ্রুপ ও অপমান ছাড়া আর কিছুই জুটবে না। একথা একজন পুরুষ খুব ভালো ভাবেই বোঝে। তাই শুধু নারী নয়, নারীর অত্যাচারে পুরুষও চুপ করে থাকে। আমি কখনও সেই নারীর লড়াই কে অসম্মান বা অস্বীকার করছি না, যে নিত্যদিন শ্বশুর বাড়িতে নির্যাতিত, যে কোন এক কীটের দ্বারা ধর্ষিত, যে নিজের কাজের জায়গায় Sexually assaulted, যে এক কীটের লালসার কারণে অ্যাসিড দগ্ধ। আমার ক্ষমতা বা সাহস কোনোটাই নেই সেইসব নারীদের জীবনযুদ্ধকে অস্বীকার করার। একজন নারী হয়ে জন্ম নিয়ে আমাকেও অনেক যুদ্ধ করতে হয়েছে। কিন্তু তবুও অন্ধ হতে পারেনি। চেনা পরিচিত আত্মীয় বন্ধু – এমন বহু পুরুষকে কীট দ্বারা অত্যাচারিত হতে দেখেছি। কীটের লালসার শিকার হতে দেখেছি পুরুষকে। একটি কীটের কারণে শেষ হতে দেখেছি অনেক পুরুষের কর্মজীবন। আত্মহত্যার ভয় দেখিয়ে বা ধর্ষণের অভিযোগের ভয় দেখিয়ে এক কীটকে এক পুরুষকে ফোর্স ম্যারেজ করতে দেখেছি। তাই তো আমি অন্ধ হতে পারিনা। নারী দেখলেই সম্মান করতে পারিনা আবার পুরুষ মাত্রই ধর্ষক এমনটাও ভাবতে পারিনা। কিন্তু যে সমাজে বাস করছি ভয় হয় আমি ও কোনদিন হয়ত অন্ধ হয়ে যাবো। এ সমাজ মিডিয়ার খবরেই ধারণা তৈরি করে। নিজে থেকে উদ্যোগ নিয়ে সত্যের সন্ধান করে না। মিডিয়া যা বলে যা লেখে তাকে ই সত্য বলে ধরে নিয়ে এগিয়ে যায়। এ সমাজ অন্যের দিকে আঙুল তোলে তথাপি নিজের ত্রুটি খুঁজে পায় না। এ সমাজ Gender Equality র কথা বলে কিন্তু পুরুষ অধিকার লড়াইয়ের কথা শুনলে উচ্চস্বরে হেসে ওঠে। এমন সমাজে কতদিন নিজেকে সুস্থ রাখতে পারবো আমি জানি না। এমনই চলতে থাকলে আমিও একসময় দৃষ্টি হারাবো।