নিউজ ডেস্ক: প্রিয় পাঠক দিনের শেষে বঙ্গ-ভারতী নিউজের তরফ থেকে আপনাদের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে দিনের গুরুত্বপূর্ণ সব খবর। রাজ্য থেকে দেশ, কি ঘটলো ‘আজ সারাদিন’? দেখে নিন একনজরে এবং জেনে নিন বিস্তারিতভাবে।
“চাকরিহারাদের আপনার প্রয়োজন নেই” রায়নার সভা থেকে স্পষ্ট জানালেন মমতা
তৃতীয় দফার নির্বাচনের আগে বাংলায় ভোটযুদ্ধ তুঙ্গে। তৃণমূল ও বিজেপি একে অপরকে লাগাতার আক্রমণ করেই চলেছে। একদিকে তৃণমূল লাগাতার একাধিক ইস্যু নিয়ে বিজেপিকে আক্রমন করে চলেছে, তো অন্যদিকে বিজেপি বাংলায় অজস্র দুর্নীতিকে হাতিয়ার করে তৃণমূলকে কটাক্ষ করে চলেছে। সবমিলিয়ে, গোটা বাংলা পরিণত হয়েছে একটা রণক্ষেত্রে। এমনটাই অবস্থা এই মুহূর্তে রাজ্যের।
এদিনের চিত্রটাও ঠিক একই দেখা গেলো। রায়নার জনসভা থেকে এদিন ফের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় চাকরিহারাদের পাশে দাঁড়ান এবং আক্রমন করেন বিজেপিকে। এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন যে ২৬ হাজার ছেলেমেয়েদের চাকরি খেয়েছে বিজেপি। এখানেই শেষ নয়, তিনি সিপিএমকেও নিশানা করেন এবং দাবি করেন যে বিজেপি সিপিএমকে টাকা দিয়ে মামলা করিয়েছে এতজনের ভবিষ্যৎ নষ্ট করেছে।
সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কোন কাজকর্ম নেই। প্রধানমন্ত্রী কি বলা উচিত, তা তিনি জানেন না। এতদিন পেরিয়ে যাওয়ার পর উনি চাকরিহারাদের নিয়ে কথা বলছেন। আমাদের তরফ থেকে সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবী দেওয়া হয়েছে মামলা লড়ার জন্য। ওরা সকলেই লড়ছে। কিন্তু আমি আপনাদের বলছি যে আমরা কারোর চাকরি চলে যেতে দেবোনা। এতদিন ধরে প্রধানমন্ত্রী কোথায় ছিলেন? ২৬ হাজার ছেলেমেয়েদের চাকরি তো আপনি খেয়েছেন। মানে আপনার দল খেয়েছে। তারা সিপিএমকে টাকা দিয়ে মামলা লড়িয়ে ছেলেমেয়েদের চাকরি খেয়েছে। আমাদের ছেলেমেয়েদের আপনার কোন দরকার নেই। আপনারা সকলে দেখুন যে এরা চাকরিও খেয়ে নেবে আবার বড় কথাও বলবে।”
এছাড়া এদিনের সভা ত্রিপুরা ও পুলিশ ডিউটি প্রসঙ্গেও মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ত্রিপুরায় ক্ষমতায় আসার আগে বিজেপির তরফ থেকে বলা হয়েছিল যে বামেরা যেই শিক্ষকদের চাকরি খেয়েছে, তাদের চাকরি আবার ফিরিয়ে দেওয়া হবে। অনেকদিন কেটে গেল কিন্তু আজ অবধি তারা চাকরি ফিরে পেলোনা। নির্বাচন কমিশনকে দেখুন। আমাদের রাজ্যের অনেক পুলিশকে অন্য রাজ্যে পাঠিয়েছে ভোটের ডিউটির জন্য। কিন্তু তাদের পোস্টাল ব্যালট দেওয়া হয়নি। আমি জানতে চাই যে কেন তাদের দেওয়া হবেনা? কিন্তু আমি আপনাদের বলছি যে আমি ছেড়ে কথা বলবোনা। যা করতে হয় তাই করবো। যদি দরকার পড়ে তাহলে আমাদের তরফ থেকে আদালতেও যাওয়া হবে এই সব ব্যাপারে।”
“তৃণমূল কংগ্রেস ১৫টি আসনও পাবেনা” কৃষ্ণনগর থেকে জানালেন নরেন্দ্র মোদি
একদিকে যখন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় চাকরিহারা থেকে শুরু করে সিএএ, একাধিক ইস্যু নিয়ে বিজেপিকে আক্রমন করে চলেছেন, ঠিক তখন অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সন্দেশখালি কান্ডকে হাতিয়ার করে আক্রমণ অব্যাহত রাখে তৃণমূলের উপর। শুক্রবার অর্থাৎ ৩রা মে, কৃষ্ণনগরের সভা থেকে ফের একই কাজ করেন প্রধানমন্ত্রী। আবারো ব্যাকফুটে ফেলে দেন তৃণমূলকে।
এদিন প্রধানমন্ত্রীর সভায় ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। দলের কর্মী থেকে শুরু করে সমর্থকেরা, সকলেই এই গরমে জড়ো হন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে দেখতে। এদিন তিনি বলেন যে তৃণমূল তোলাবাজদের সরকার। এখানেই শেষ নয়, প্রধানমন্ত্রী আরও দাবি করেন যে গোটা ভারতবর্ষে তৃণমূল কংগ্রেস ১৫টি আসন পাবেনা। পাশাপাশি কংগ্রেসকেও কটাক্ষ করেন তিনি এবং দাবি করেন যে অর্ধশতরানও ছুঁতে পারবেনা এবার হাত শিবির।
এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, “এটা কিন্তু দেশের নির্বাচন। মনে রাখবেন আপনাদের ভোটের মাধ্যমেই কিন্তু দেশের সরকার তৈরি হবে। কে ক্ষমতায় আসবে, সেটা কিন্তু আপনারাই ঠিক করবেন। তবে আমি এখানে দাঁড়িয়ে আপনাদের বলে রাখছি যে গোটা ভারতবর্ষের তৃণমূল কংগ্রেস ১৫টি আসনও জিতবেনা। তাহলে এবার আপনারাই বলুন যে ১৫ টি আসন দিয়ে কি কোন ভাবে সরকার গড়া সম্ভব? কংগ্রেসও গোটা ভারতবর্ষে যাই বলে যাক না কেন, ওরা হাফ সেঞ্চুরিও ছুতে পারবেনা। তাহলে আবার আপনারা বলুন যে যারা ৫০টি আসন পাবেনা, তারা কি করে দেশের সরকার গড়বে? রইল কথা বাম সরকারের, তাহলে ওদের এখন দেখাই যাচ্ছেনা। তাহলে আপনারাই বলুন যে তারা কিভাবে সরকার গড়বে? মিলিয়ে রাখুন আমার কথা যে গোটা দেশে যদি কেউ পো সরকার গড়তে পারে, সেটা ভারতীয় জনতা পার্টি ও এনডিএ সরকার ছাড়া আর কেউ নয়।”
এরপর সন্দেশখালি কান্ড প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন “তৃণমূল কংগ্রেস আসলে তোলাবাজদের সরকার। ওরা একটুও সংবিধান মেনে কাজ করেনা। আপনারা দেখেছেন আদালত কি করে। আপনারা সকলেই দেখেছেন সন্দেশখালিতে কি ঘটেছে? ওখানে অজস্র অস্ত্র ও বোমা পাওয়া গেছে। আপনাদের কি মনে হয় ওগুলো ওখানে রাখা হয়েছিল কি গণতন্ত্র রক্ষা করতে? আমি আপনাদের সকলকে প্রশ্ন করতে চাই যে অপরাধী নাম শাহজাহান বলে কি তৃণমূল আপ্রাণ চেষ্টা করছে?”
‘আজ সারাদিন’ আজ এই পর্যন্তই। আগামীকাল আমরা ফের আপনাদের কাছে ফিরে আসবো দিনের সব নজরকাড়া খবর নিয়ে। ধন্যবাদ। শুভরাত্রি।