নিউজ ডেস্ক: প্রিয় পাঠক দিনের শেষে বঙ্গ-ভারতী নিউজের তরফ থেকে আপনাদের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে দিনের গুরুত্বপূর্ণ সব খবর। আজকের থিম ‘ক্রাইম’। কি ঘটলো ‘আজ সারাদিন’? দেখে নিন একনজরে এবং জেনে নিন বিস্তারিতভাবে।
ঝাড়ফুঁকের নামে নাবালিকার শ্লীলতাহানী, ওঝাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ
এক নাবালিকাকে শ্লীলতাহনীর অভিযোগ উঠল এক ওঝার বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর আষাড়ু পঞ্চায়েতে। জানা গিয়েছে কে সেখানকার এক নাবালিকা দীর্ঘদিন ধরেই শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছিল। পরিবারের লোকজন ডাক্তার দেখালেও সমাধান হয়নি সমস্যার। এরপরই প্রতিবেশীরা সাদিক বিশ্বাস নামে এক ওঝার কাছে ঝাড়ফুঁক করানোর পরামর্শ দেয় এবং সেই অনুযায়ী যোগাযোগ করা হয় ধৃত ওঝার সঙ্গে।
পরিবারের বক্তব্য যে মঙ্গলবার রাতে সেই ওঝা তাদের বাড়িতে আসে এবং ঝাড়ফুঁকের নামে নাবালিকাকে এক আলাদা ঘরে নিয়ে যায় এবং তারপরই শ্লীলতাহানি করা হয়। আতঙ্কিত নাবালিকা কোনরকমে ঘর থেকে বেরিয়ে এসে ওঝার কুকীর্তির কথা সকলকে জানায়। এরপরই পরিবারের তরফ থেকে বাগদা থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয় এবং সেই অনুযায়ী গ্রেফতার করা হয়। বনগাঁ মহকুমা আদালতে পাঠানো হয়েছে সেই ধৃত ওঝাকে বুধবার সকালে।
চুরি করতে এসে হাতেনাতে ধরা পড়লো দুষ্কৃতি, খুন গৃহকর্তা
এক মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী হলো উত্তর ২৪ পরগনার কাঁচড়াপাড়া। সেই পুরসভার চার নম্বর ওয়ার্ডের সূর্যনগর কলোনী এলাকায় ঘটলো একটি খুনের ঘটনা, যার পর রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়ে যায় গোটা এলাকায়। একটি বাড়িতে চুরি করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ে দুই দুষ্কৃতী। ধরা পড়তেই তারা বেধড়ক মারধর করে গৃহকর্তাকে। এখানেই শেষ নয়, এমনকি সেই গৃহকর্তাকে খালের জলে ফেলে শ্বাসরোধ করে খুন করার অভিযোগ পর্যন্ত ওঠে।
মৃত গৃহকর্তার নাম সুনীল সাউ। বাড়িতে তিনি থাকতেন নিজের স্ত্রীকে নিয়ে। পরিবার সূত্র মারফত জানা গিয়েছে যে বাড়িতে কেউ না থাকায় ঘরের টিন কেটে ভিতরে ঢুকে যাবতীয় সব সামগ্রী চুরি করে সেই দুই দুষ্কৃতী। হঠাৎ সেই সময়ে কাজ সেরে বাড়ি ফেরেন সুনীল এবং তাদের হাতেনাতে ধরে ফেলেন। এরপর দুষ্কৃতীরা তাঁকে বেধড়ক মারধর করে এবং ঘরের পাশে এক নর্দমায় ফেলে দেয়। তাঁকে উদ্ধার করে কল্যাণী জহরলাল নেহেরু হাসপাতালে নিয়ে যায় প্রতিবেশীরা এবং সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং বাকিজনের তল্লাশি চলছে।
গোটা ঘটনা প্রসঙ্গে ডিসি নর্থ ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট গণেশ বিশ্বাস বলেন, “মালিকের অনুপস্থিতিতে চোরেরা ঘরে ঢোকে। যখন মালিক চলে আসে, তখন ওরা বুঝতে পারে যে ঘরে কেউ ঢুকেছে। এরপর ধস্তাধস্তি হয় একজন পালানোর চেষ্টা করলে। তারপর বাড়ির পাশের নালা খালে পড়ে যায়। পরে জানা গেল যে মৃত্যু হয়েছে। মৃত রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।”
চুরির অভিযোগে এক কিশোরকে খুন বারুইপুরে
দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর থানা এলাকার উত্তরভাগে চুরির অভিযোগে এক কিশোরকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠলো। জানা গিয়েছে যে সেই মৃত কিশোরের নাম পবিত্র সর্দার। ইতিমধ্যেই বারুইপুর থানায় মৃত কিশোরের মা অভিযোগ দায়ের করেছেন এবং সেই অনুযায়ী গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। মৃত পবিত্র সর্দারের পরিবার হত্যাকারীদের চরম শাস্তির দাবি জানিয়েছে।
ঘটনা প্রসঙ্গে জানা গিয়েছে যে বারুইপুরে মামাবাড়ি পবিত্র সরদারের। সেখানে সে পরিবারের সঙ্গে ঘুরতে এসেছিল। কাছেই একটা আশ্রম আছে। সেখানে মৃত কিশোরকে ডেকে পাঠানো হয় এবং চুরির অভিযোগ তুলে বেধড়ক মারধর করা হয়। খবর পেয়ে সেখানে মৃতের মামা ছুটে যান, তবে তাঁকেও মারধর করা হয় বলে তাঁর অভিযোগ। নৃশংস মারধরের জেরে গুরুতর আহত হয় পবিত্র এবং তৎক্ষণাৎ তাকে নিয়ে যাওয়া হয় বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে। কিন্তু চিকিৎসকরা সেখানে তাকে মৃত ঘোষণা করে।
ঘটনা জানাজানি হতেই রাগে ফেটে পড়ে এলাকাবাসীরা। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য যে ওই আশ্রমে অপরাধমূলক কাজকর্ম চলে এবং তা ঢাকতেই এই খুন করা হয়েছে। এরপরই পবিত্রের মায়ের তরফ থেকে বারুইপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ তদন্তে নামলেও এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। আশ্রম কর্তৃপক্ষের তরফ থেকেও কোন প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
পবিত্রের মায়ের বক্তব্য, “আমি কাজে গিয়েছিলাম এবং আমি জানিওনা ও কখন আশ্রমে গেছে। ছেলেকে খুন করা হয়েছে, আমি ফোনে জানতে পারি বাড়ির লোকের থেকে। যারা হত্যা করেছে আমার ছেলেকে, তাদের যেন কঠিন শাস্তি হয়। কয়েকটা কুকুর ও নিরাপত্তারক্ষী থাকে এই আশ্রমে। উঁচু পাচিল পর্যন্ত রয়েছে। তাহলে সেখানে চুরি হয় কি করে? এর আগে তো কোনদিন আমার ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠেনি চুরি করার।”
‘আজ সারাদিন’ আজ এই পর্যন্তই। আগামীকাল আমরা ফের আপনাদের কাছে ফিরে আসবো দিনের সব নজরকাড়া খবর নিয়ে। ধন্যবাদ। শুভরাত্রি।