নিউজ ডেস্ক: প্রিয় পাঠক দিনের শেষে বঙ্গ-ভারতী নিউজের তরফ থেকে আপনাদের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে দিনের গুরুত্বপূর্ণ সব খবর। রাজ্য থেকে দেশ, কি ঘটলো ‘আজ সারাদিন’? দেখে নিন একনজরে এবং জেনে নিন বিস্তারিতভাবে।
লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার পর কি বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি?
দেখতে দেখতে মিটে গেল চলতি লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফা। কিছু জায়গা থেকে বিক্ষিপ্ত অশান্তির খবর এলেও অধিকাংশ জায়গাই শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে, এমনটাই দাবি করছে সকলে। কেউ দাবি করছেন যে এই দল জিতবে তো কেউ দাবি করছেন যে ওই দল জিতবে। ভোটযুদ্ধ শুধু রাজনীতির ময়দানেই নয়, দেখা গেল সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মগুলিতেও।
কিন্তু এই সবকিছুর মাঝেই একটি বড় মন্তব্য করে বসলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ঠিক কি বললেন তিনি? নিজের এক্স হ্যান্ডেল থেকে প্রধানমন্ত্রী দাবি করলেন যে লোকসভা নির্বাচনে প্রথম দফায় দুর্দান্ত সারা পেয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি। এখানেই শেষ নয় তিনি আরও দাবি করেন যে প্রথম দফাতেই স্পষ্ট হয়ে গেছে গোটা ভারতবর্ষ এনডিএ জোটকেই চাইছে এবং বড় ব্যবধানে জিতবে তারা।
নিজের এক্স হ্যান্ডেল থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি লেখেন, “লোকসভা নির্বাচনে প্রথম দফায় বেশ দুর্দান্ত সারা পেয়েছি আমরা। আমি সেই সকল মানুষকে ধন্যবাদ জানাতে চাই যারা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নিজের মূল্যবান ভোট দিয়ে এসেছেন।” এরপর তিনি লেখেন, “যা নির্বাচন হয়েছে, তাতে মানুষ খুবই সন্তুষ্ট। এর থেকে স্পষ্ট যে গোটা ভারতবর্ষ এই মুহূর্তে এনডিএ জোটকেই মসনদে বসতে দেখতে চায়। এবার আমরা বড় ব্যবধানে জয়ী হবো।”
এই পোস্ট চারিদিকে ছড়িয়ে পড়তে বন্যা বয়ে যায় কমেন্টের। একপক্ষ দাবি করে যে এবার জয় হবে হাত শিবিরের, অর্থাৎ জাতীয় কংগ্রেসের। আবার অন্যপক্ষ দাবি করেছে এবার রেকর্ড আসনে জয়ী হবে ভারতীয় জনতা পার্টি। অর্থাৎ তাঁরা বলতে চেয়েছেন যে ক্ষমতা ধরে রাখতে সফল হবে গেরুয়া শিবির। এছাড়া কেউকেউ মিশ্র প্রতিক্রিয়াও দেয়। সবমিলিয়ে, লোকসভা নির্বাচনের আবহাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তরফ থেকে এমন পোস্ট উন্মাদনা বাড়িয়ে দিয়েছে সকল ভারতবাসীর। রাজনৈতিক মহল মনে করছেন যে দ্বিতীয় দফায় আরো বেশি সংখ্যক মানুষ ভোট দিতে আসবে।
উল্লেখ্য, লোকসভা নির্বাচন শুরু হওয়ার আগেই এনডিএ ও ইন্ডিয়া জোট দুজনেই দাবি করেছে যে জয় এবার তাদেরই হবে। একদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সহ কেন্দ্র সরকারের বাকি শীর্ষ নেতারা দাবি করছেন যে এবার রেকর্ড গড়বে তারা। আবার অন্যদিকে ইন্ডিয়া জোট দাবি করেছে যে চলতি লোকসভা নির্বাচনে মানুষ বিদায় জানাবে গেরুয়া শিবিরকে।
“সিএএ হোক কি এনআরসি, ওসব কিছু হতে দেবোনা”: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
ফের সিএএ-এনআরসি নিয়ে সুর চড়ালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন গাজোলে এক সভা থেকে তিনি ফের স্পষ্ট করে উপস্থিত সকল দলীয় কর্মী ও সমর্থকদের জানিয়ে দেন যে তিনি রাজ্যে এটি হতে দেবেন না। এখানেই শেষ নয় ,মুখ্যমন্ত্রী ফের জানান যে আবেদন করলেই সকলে নাগরিকত্ব হারাবেন। পাশাপাশি তিনি আরো দাবি করেন যে মানুষের ব্যক্তিগত জীবনে হস্তক্ষেপ করার কোন অধিকার নেই বিজেপির।
শনিবার, অর্থাৎ ২০শে এপ্রিল, মালদহের গাজোলের মহাবিদ্যালয়ের মাঠে একটি জনসভার আয়োজন করা হয় বাংলা শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে। এদিন মালদহ উত্তরের তৃণমূল প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে প্রচার করতে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঞ্চ থেকে তিনি একাধিক বিষয় নিয়ে তোপ দাগেন বিজেপির দিকে। মুখ্যমন্ত্রীকে দেখার জন্য দলের কর্মী ও সমর্থকদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিএএ-এনআরসি নিয়ে বলেন, “আমি সকল পরিযায়ী শ্রমিক ভাইদের কাছে অনুরোধ করছি যে আপনারা ভোট দিয়ে যাবেন, যাতে কোনরকমে ওরা আপনাদের নাম বাদ না দিতে পারে। আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি যে সিএএ হোক কি এনআরসি, ওসব কিছু হতে দেবোনা বাংলায়। মনে রাখবেন এটা যদি হয়, তাহলে আপনারা সকলেই পরিচয় ও নাগরিকত্ব হারাবেন। ওরা বলছে মাছ, মাংস, ডিম, এসব কিছু খাওয়া যাবেনা। কে কি খাবে সেটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। কোন সাহসে ধমকাচ্ছেন লোককে?”
এরপরই তৃণমূল সুপ্রিমো দুই মালদার প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় ও শাহনাওয়াজ আলি রাইহানকে ভোট দেওয়ার কথা বলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “একবার আপনারা প্রসূনকে ভোটটা দিয়ে দেখুন। ও আপনাদের জন্য লড়াই করবে এবং আপনাদের সমস্ত সমস্যার কথা তুলে ধরবে। আমার আরও এক প্রার্থী আছে শাহনাওয়াজ ভাই। ও কিন্তু এক জনপ্রিয় ছাত্র অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের। ও কিন্তু আপনাদের সকলকে ভালোবাসে। তাই সবকিছু ছেড়ে ও এখানে এসেছে আপনাদের পাশে দাঁড়াতে। ওকে ভোট দিয়ে দেখুন একবার।”
প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট শেষ হয়েছে ১৯শে এপ্রিল। মালদহে ভোট হবে তৃতীয় দফায় এবং সেটি হবে ৭ই মেতে। এবার দেখার বিষয় যে শেষ পর্যন্ত মালদহের মানুষ কাকে এগিয়ে রাখে ভোট যুদ্ধে। কে জিতবে তা জানা যাবে কিছুদিনের মধ্যে।
‘আজ সারাদিন’ আজ এই পর্যন্তই। আগামীকাল আমরা ফের আপনাদের কাছে ফিরে আসবো দিনের সব নজরকাড়া খবর নিয়ে। ধন্যবাদ। শুভরাত্রি।