নিউজ ডেস্ক: প্রিয় পাঠক দিনের শেষে বঙ্গ-ভারতী নিউজের তরফ থেকে আপনাদের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে দিনের গুরুত্বপূর্ণ সব খবর। আজকের থিম গুজরাট টাইটান্স। কি ঘটলো ‘আজ সারাদিন’? দেখে নিন একনজরে এবং জেনে নিন বিস্তারিতভাবে।
২০২২ সালে নিজেদের প্রথম আইপিএল খেলেছিল গুজরাট টাইটান্স এবং ঠিক যেন অভিষেক ম্যাচেই শত রান করে দেওয়ার মতো ব্যাপার হয়েছিল তাদের তরফ থেকে। প্রথম মরশুমেই তাক লাগিয়ে দেয় তারা। ফাইনালে তারা পরাজিত করে রাজস্থান রয়েলসকে এবং জিতে নেয় খেতাব। সেই বছর দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন টিম ইন্ডিয়ার তারকা অলরাউন্ডার হার্দিক পান্ডিয়া। এরপরই তারা হয়ে যায় ‘টক অফ দা টাউন’। কিন্তু পরবর্তী মরশুমে তীরে এসে তরী ডোবে তাদের। ফাইনালে তাদের হারায় মাহির চেন্নাই সুপার কিংস।
তবে চলতি আইপিএলে একেবারেই ভালো ফর্মে নেই গুজরাট টাইটান্স। যদিও এখনো তাদের কাছে সুযোগ রয়েছে প্লে অফ খেলার। কিন্তু সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীন। বলা যায় যে ভাগ্য সহায় হলেই তবেই তারা প্লে অফে যেতে পারবে। কোন বিভাগই কাজ করছেনা ঠিকঠাক করে। সবমিলিয়ে, এই গুজরাট আর সেই গুজরাট নেই। এমনটাই মনে করছে তাদের সমর্থকেরা। তবুও এমন পরিস্থিতিতে তারা হারায় গতবারের জয়ী দল চেন্নাই সুপার কিংসকে। প্রথমে ব্যাট করে বড় রান করার জেরেই ম্যাচ জিততে সুবিধে হয় তাদের। এমনটাই মনে করছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। যদিও বিশেষজ্ঞদের মতও একই।
এদিন ম্যাচ জিতে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে দলের অধিনায়ক শুভমান গিল বলেন, “আসলে ব্যাপারটা হচ্ছে আমার সামান্য ক্রাম্প হয়েছিল এবং সেই কারণেই আমি মাঠ থেকে চলে এসেছিলাম। যখন লক্ষ লক্ষ ক্রিকেটপ্রেমী আপনাকে সমর্থন জানায়, তখন কাজটা আরও সহজ হয়ে যায়। সত্যি বলতে গেলে একটু হালকা লাগে।”
এরপরই সাই সুদর্শনের সঙ্গে ওপেনিং জুটি প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করা হয় গিলকে। সেই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “যখন আমরা ব্যাট করতে নেমেছিলাম, তখন আমাদের মাথায় কোন লক্ষ্যমাত্রা চলছিলনা। আমরা পুরোপুরি পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যাট করছিলাম। সব সুযোগের সদ্ব্যবহার করেছি। এছাড়া আমার আর সাইয়ের মধ্যে ভালো বোঝাপড়া আছে। গতবছরেও আমরা একে অপরের সঙ্গে অনেক ব্যাট করেছি। ওর সঙ্গে ব্যাটিং করার মজাটাই আলাদা। আপনি যদি নম্বরের ভিত্তি থেকে দেখেন তাহলে আমরা বলব যে আমি আর ও গুজরাট টাইটানসের সেরা ওপেনিং জুটি।”
এরপরই দলের তারকা পেসার মোহিত শর্মাকে নিয়ে প্রশ্ন করা হয় গিলকে। সেই প্রশ্নের উত্তরে গিল বলেন, “বল হাতে মোহিত ভাই যে কাজ করে চলেছে, তা সত্যি প্রশংসার যোগ্য। গত দুই বছর ধরে আমরা ওনার থেকে যা চেয়েছি উনি তা করে দেখিয়েছেন। গত আইপিএলেও ওনার বোলিং ছিল দেখার মতো। এমনকি এই বছরেও দারুণ বল করছেন মোহিত ভাই। হ্যাঁ এটা ঠিক যে ২-৩ ম্যাচে উনি ভালো পারফর্ম করতে পারেননি। এটা স্বাভাবিক ব্যাপার। এটা যে কোন ক্রিকেটারের সাথেই হতে পারে। আমরা যেভাবে ব্যাট করছিলাম তাতে মনে হচ্ছিল যে সহজেই ২৫০ রানের গণ্ডি ছুঁড়ে নিতে পারবো। কিন্তু শেষ ২-৩ ওভারে ওরা দুর্দান্ত বোলিং করেছে। ওঠার পর মনে হচ্ছিল যে আমরা ১০-১৫ রান কম করেছি। ম্যাচের ক্ষেত্রে নয়, নেট রান রেটের ক্ষেত্রে।”
এছাড়া ম্যাচ শেষে সাক্ষাৎকার দেন দলের তারকা স্পিনার রাশিদ খানও। প্রথমেই আফগান তারকাকে প্রশ্ন করা হয় শুভমান গিল ও সাই সুদর্শনের ওপেনিং জুটি প্রসঙ্গে। সেই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “ওদের দুজনকে একসাথে ব্যাট করতে দেখার মজাটাই আলাদা। দুজনেই দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছে। ওরা যেভাবে খেলছিল তা দেখে আমি রীতিমতো আনন্দ পেয়েছি। আমার দল জিততে পেরেছে এই ব্যাপারটার জন্য আমি খুব খুশি। এছাড়া আমি নিজেও দুটো উইকেট নিয়েছি। হ্যাঁ মাঝে একটু ব্যাক সমস্যা হয়েছিল ঠিকই তবে আমি এখন ভালো আছি এবং দ্রুতই সুস্থ হয়ে যাবো।”
এরপরই রাশিদ খানকে প্রশ্ন করা হয় মহেন্দ্র সিং ধোনিকে বল করা প্রসঙ্গে। সেই প্রশ্নের উত্তরে রাশিদ বলেন, “আমি ওনার বিরুদ্ধে বোলিং করেছি। যখন উনি ব্যাট করতে নামেন তখন পুরো পরিস্থিতিটাই আলাদা হয়ে যায়। আমাদের সকলের মধ্যে একটা দারুন শক্তি চলে আসে। সুতরাং আমি এটাই বলবো যে ওনার সঙ্গে খেলতে পেরে আমি খুবই খুশি।”
উল্লেখ্য, এদিন টসে জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেয় চেন্নাই সুপার কিংস। নির্ধারিত ২০ ওভারে গুজরাট টাইটান্স তোলে ৩ উইকেটে ২৩১ রান। শতরান করেন দুই ওপেনার শুভমান গিল ও সাই সুদর্শন। গিল করেন ১০৪ এবং সুদর্শন করেন ১০৩ রান। চেন্নাইয়ের বোলারদের মধ্যে দুটি উইকেট তোলেন তুষার দেশপান্ডে। জবাবে রান তারা করতে নেমে ২০ ওভার শেষে চেন্নাই তোলে ১৯৬ রান ৮ উইকেট হারিয়ে। ড্যারিল মিচেল করেন ৬৩ এবং মইন আলি করেন ৫৬ রান। গুজরাটের বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট তোলেন মোহিত শর্মা। এছাড়া দুটি উইকেট নেন রাশিদ খান এবং একটি করে উইকেট নিজেদের ঝুলিতে তোলেন উমেশ যাদব ও সন্দীপ ওয়ারিয়ার। ম্যাচের সেরা ঘোষণা করা হয় শুভমান গিলকে।
‘আজ সারাদিন’ আজ এই পর্যন্তই। আগামীকাল আমরা ফের আপনাদের কাছে ফিরে আসবো দিনের সব নজরকাড়া খবর নিয়ে। ধন্যবাদ। শুভরাত্রি।