নিউজ ডেস্ক: প্রিয় পাঠক দিনের শেষে বঙ্গ-ভারতী নিউজের তরফ থেকে আপনাদের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে দিনের গুরুত্বপূর্ণ সব খবর। রাজ্য থেকে দেশ, কি ঘটলো ‘আজ সারাদিন’? দেখে নিন একনজরে এবং জেনে নিন বিস্তারিতভাবে।
দুর্গাপুরের সভা থেকে আজ কি বললেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ
সোমবার, অর্থাৎ ৬ই মে, দুর্গাপুরে একটি সভার আয়োজন করা হয় ভারতীয় জনতা পার্টির তরফ থেকে। সেখানে বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষের সমর্থনে প্রচার করতে আসেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এদিন তাঁকে দেখার জন্য দলীয় কর্মী ও সমর্থকদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। এদিন মঞ্চ থেকে সকলকে একাধিক প্রতিশ্রুতি দেন অমিত শাহ।
অমিত শাহ বলেন, “মোদির গ্যারান্টি দিচ্ছি আমি আপনাদের। দিলীপ ঘোষকে একবার আপনারা জেতান এই কেন্দ্রে, দুর্গাপুর ও বর্ধমানে যে কারখানাগুলো বন্ধ পরে রয়েছে, সেগুলি আবার চালু করে দেবো আমরা। ওই এলাকায় বিপুল বিনিয়োগ করে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। তৃণমূল রাজ চলছে এখানকার শ্রমিকদের উপর। তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তোলাবাজি করছে এবং এর জন্য শ্রমিকরা তাদের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সেই টাকাগুলো সোজা চলে যাচ্ছে ভাইপোর কাছে। আপনারা শুধু আমাদের এখানে একবার জিতিয়ে দিন, আমি কথা দিচ্ছি আপনাদের যে এই সমস্ত দুষ্কৃতীদের সোজা করে দেবো আমরা উল্টো ঝুলিয়ে।”
তিনি আরো বলেন, “গত ১৫ দিন ধরে দিদি এখানে আছেন বিজেপিকে হারানোর জন্য। কিন্তু আমি আপনাকে চ্যালেঞ্জ করছি দিদি। আপনি এখানে পাঁচ বছর ধরে পড়ে থাকলেও, বিজেপিকে হারাতে পারবেন না। দিদি এখানে অপরাধের প্লান্ট খুলেছেন। রাজ্যের মন্ত্রীদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা পাওয়া যায়। গোটা ইন্ডিয়া জোট ১২ লক্ষ কোটি টাকার দুর্নীতি করেছে।”
এদিন ফের রামমন্দির নিয়ে মুখ খুললেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। অমিত শাহ বলেন, “রামমন্দির তৈরি করতে বাধা দিচ্ছিল তৃণমূল ও কংগ্রেস। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, দুজনকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল প্রাণপ্রতিষ্ঠার সময়ে। কিন্তু ভোটব্যাংকের ভয়ে ওরা আসেনি। রামকে অপমান করেছে তৃণমূল।”
দুর্গাপুরের সভা থেকে আজ কি বললেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
একদিকে যখন অমিত শাহ একের পর ইস্যুতে আক্রমণ করছেন অমিত শাহ, ঠিক তখন দুর্গাপুরের অপর প্রান্তে বিজেপিকে আক্রমণ করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখানে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী কীর্তি আজাদের হয়ে প্রচার করতে আসেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন সভায় লোকের ভিড় ছিল দেখার মতো। এদিন মঞ্চ থেকে একাধিক দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বাংলা একমাত্র রাজ্য যেখানে পেনশন দেওয়া হয়। এছাড়া আর কোন রাজ্যে দেওয়া হয়না। এমনকি কেন্দ্র সরকারেরও কোনো পেনশন নেই। ওরা সব তুলে দিয়েছে। বিজেপিশাসিত কোন রাজ্যে পেনশন বলে কিছু নেই। কিন্তু একমাত্র বাংলা দেয় পেনশন এবং সেই কারণেই এখানে লোক অবসর নেওয়ার পরও শান্তিতে থাকে। বিজেপি টাকা দিলে কি হবে। ভোট এলেই যদি ভোট পাওয়ার জন্য ওরা আপনাদের টাকা দেয়, তাহলে টাকাটা নিয়ে নিন। প্যাকেটটা পকেটে পুরে নিন। কিন্তু ভোট দেওয়ার বেলায় উল্টে দেবেন। এবার আমরাও নজর রাখবো যে টাকা দিয়ে কিভাবে ওরা ভোট কেনে।”
এরপর নির্বাচন কমিশনকে আক্রমণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশন কোথায় আছে কোন খোঁজ পাচ্ছিনা। কে জানে কোথায় আছে। আমি আসছিলাম তখন রাস্তা দিয়ে। একজন মহিলা আমাকে বললেন যে নাম বদলে গিয়েছে মডেল কোড অফ কন্ডাক্টের। আমরাই বদলে দিয়েছি। ঢাল নেই, তরোয়াল নেই, নিধিরাম সর্দার’!” এদিন মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “বিজেপি হারছে, বিজেপি হারছে, বিজেপি হারছে।”
সিউড়ির সভা থেকে আজ কি বললেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
“একটা চুল পর্যন্ত স্পর্শ করতে পারবেনা বিজেপি” সিউড়ির সভা থেকে বড় হুঙ্কার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এখানেই শেষ নয়, তিনি আরো দাবি করেন যে তিনি বাংলায় সারাজীবন থাকবেন। এদিন মুখ্যমন্ত্রীকে দেখার জন্য ভিড় উপচে পড়ে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিজেপি শুধু বাংলার বদনাম করছে এবং বলছে যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হাটাও। কিন্তু আমি আপনাদের বলছি যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সারাজীবন বাংলায় থাকবে। ওদের ক্ষমতা নেই আমার একটি চুল পর্যন্ত স্পর্শ করার।”
তিনি আরো বলেন, “ভবিষ্যৎ অনেক উজ্জ্বল বীরভূমের। এখানে দেউচা পাচামির মতো দ্বিতীয় বৃহত্তম কয়লাখনি হচ্ছে। কাজও শুরু হয়ে গেছে এবং চাকরিও দেওয়া হয়েছে অনেককে। বাংলায় বিদ্যুতের অভাব হবেনা আগামী ১০০ বছর। ভিনরাজ্যকে আমরা বিক্রি করতে পারবো নিজেরটার দাম কমিয়ে।”
এরপর কেন্দ্র সরকারকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, “এটা কিন্তু বাংলার ভোট নয়, এটা কিন্তু বিজেপি সরকারকে বদলানোর ভোট। আপনাদের অনেক উন্নতি হয়েছে। নতুন চাকরি হবে আরও ১ লক্ষ।”
‘আজ সারাদিন’ আজ এই পর্যন্তই। আগামীকাল আমরা ফের আপনাদের কাছে ফিরে আসবো দিনের সব নজরকাড়া খবর নিয়ে। ধন্যবাদ। শুভরাত্রি।