নিউজ ডেস্ক: প্রিয় পাঠক দিনের শেষে বঙ্গ-ভারতী নিউজের তরফ থেকে আপনাদের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে দিনের গুরুত্বপূর্ণ সব খবর। আজকের থিম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভা ঘাটাল থেকে। কি ঘটলো ‘আজ সারাদিন’? দেখে নিন একনজরে এবং জেনে নিন বিস্তারিতভাবে।
দেখতে দেখতে পঞ্চম দফায় পৌঁছে গেছে চলতি লোকসভা নির্বাচন। সোমবার, অর্থাৎ ২০শে মে, পঞ্চম দফার ভোট। তার আগে জোরদার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে দেশের সমস্ত রাজনৈতিক দল। বাংলার অবস্থাটাও ঠিক তেমনি। শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস হোক কি প্রধান বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টি বা হোক বাম-কংগ্রেস জোট, সকলেই নেমে পড়েছে জনসভা ও পদযাত্রায়। একদিকে যেমন বিভিন্ন ইস্যুকে হাতিয়ার করে একে অপরকে কটাক্ষ করছে সকল দল, তেমনি বইয়ে দিচ্ছে প্রতিশ্রুতির বন্যাও। সবমিলিয়ে, পঞ্চম দফার ভোটের আগে হাওয়া অত্যন্ত গরম বাংলায়।
এমন পরিস্থিতিতে এদিন জোড়া সভা সারেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, তথা তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথমে ঝাড়গ্রামে সভা সেরে তিনি ঘাটালে যান সভা করতে দলের প্রার্থী দীপক অধিকারী, তথা বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা দেবের, সমর্থনে প্রচার করতে। ঘাটাল থেকেও তিনি বিজেপিকে একাধিক ইস্যু নিয়ে আক্রমণ করেন। পাশাপাশি দাবি করেন যে এবারের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি জিতবে না এবং ভারতবর্ষে ৪ঠা জুন আসবে এক নতুন সরকার। এদিন দলীয় কর্মী ও সমর্থকদের ভিড় ছিল দেখার মতো। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখার জন্য ভর্তি ছিল সভা।
এদিন সভার শুরুতেই ঘাটালের বিজেপি প্রার্থী, তথা বাংলা সিনেমার অভিনেতা, হিরণকে কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি উপস্থিত সকল মানুষকে জানান ঠিক কি কারণে দেব কে ভোট দেওয়া উচিত এবং জেতানো প্রয়োজন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এখানে দেবের বিরুদ্ধে কাকে দাঁড় করানো হয়েছে? কে লড়াই করছেন?” এরপরই উপস্থিত সকল সাধারণ মানুষ হিরনের নাম নেন। তারপরেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কে সে? খায় না মাথায় দেয়?” তারপর সকলকে জানান, “আপনারা সকলে দেবকে ভোট দিয়ে এখানে জেতান। ও খুব ভালো ছেলে। অনেক কাজের ছেলে দেব। মানুষের জন্য ও অনেক কাজ করে যখন কোভিড পরিস্থিতি চলছিল গোটা ভারতবর্ষে, তখন ও অনেক পরিযায়ী শ্রমিককে রাজ্যে ফিরিয়ে আনে।”
এরপরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি কটাক্ষ করেন বিজেপিকে। সভা থেকে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, “আমাদের দেশটা চালাচ্ছে কয়েকটা চোর মিলে। ওরা দেশকে বিক্রি করে দিচ্ছে। ধর্ম ও বর্ণের নামে ওরা ভারতকে বিক্রি করে দিচ্ছে। আমরা যা কথা দিই তা রাখি আর মোদীর গ্যারান্টি হলো ফোরটোয়েন্টি। আমাদের দয়া করে ভোটটা দিন। মনে রাখবেন এই ভোট কিন্তু আপনাদের ভবিষ্যতের জন্য। ওরা কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়ে দিয়েছে যে ওরা এনআরসি করে দেবে। কিন্তু প্রচারক ও প্রকাশকের নাম নেই এগুলো সব ভাওতা ছাড়া আর কিছু নয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে আগে সিএএর জন্য আবেদন করতে বলুন। বিজেপি একটা চাকরিখেকো বাঘ। ওদের আর ক্ষমতায় আসতে দেওয়া যাবেনা। নরেন্দ্র মোদী যদি আবার ক্ষমতায় আসে তাহলে ভোট দেওয়া বন্ধ হয়ে যাবে। দেশ থাক, মোদি যাক। এবার ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় আসবে আর ওরা এলে মানুষের জন্য অনেক কাজ করবে। ওরা এলে সাধারণ মানুষের অনেক লাভ হবে।”
এরপরই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, “ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের জন্য আরো একটু সময় লাগবে। ইতিমধ্যেই আমাদের তরফ থেকে সার্ভে শুরু করা হয়ে গেছে। আর ৩-৪ বছরের মধ্যে এই কাজ শেষ হয়ে যাবে। পুরো প্রকল্প শেষ করতে গেলে এক হাজার কোটি টাকা মতো লাগবে। সেটা পেয়ে গেলেই আর বেশি সময় লাগবেনা এটা আপনাদের জন্য করে দিতে।”
এই প্রসঙ্গে আরো বেশকিছু কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, “আমার দুটো বছর সময় লাগবে। আমি এই কথাটা দেবকে জানিয়ে দিয়েছি। এক হাজার কোটি টাকার প্রকল্প তো তাই একটু সময় লাগবে। এতো তাড়াতাড়ি করলে হবেনা। তবে আমরা সার্ভে শুরু করে দিয়েছি ও বলার পর। কিন্তু কাজ শেষ হয়ে যাবে ৩-৪ বছরের মধ্যে। ইতিমধ্যেই আমরা কোপালেশ্বরী-কেলেঘাই করে দিয়েছি। আমি মানস ভূইয়াকে দেখেছি উনি কোপালেশ্বরী-কেলেঘাই নিয়ে চিৎকার করে বেড়ায়। কিন্তু সেই কাজ আমরা করে দিয়েছি।” এদিন মুখ্যমন্ত্রীর মুখে এমন খুশির খবর শুনে আনন্দে ফেটে পড়েন উপস্থিত সকল দলীয় কর্মী ও সমর্থকেরা।
‘আজ সারাদিন’ আজ এই পর্যন্তই। আগামীকাল আমরা ফের আপনাদের কাছে ফিরে আসবো দিনের সব নজরকাড়া খবর নিয়ে। ধন্যবাদ। শুভরাত্রি।