নিউজ ডেস্ক: প্রিয় পাঠক দিনের শেষে বঙ্গ-ভারতী নিউজের তরফ থেকে আপনাদের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে দিনের গুরুত্বপূর্ণ সব খবর। রাজ্য থেকে দেশ, কি ঘটলো ‘আজ সারাদিন’? দেখে নিন একনজরে এবং জেনে নিন বিস্তারিতভাবে।
মণিপুরে পুনর্নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিল নির্বাচন কমিশন! ১১টি বুথে হবে ভোটগ্রহণ
দীর্ঘদিন ধরে জাতিসংঘর্ষে জর্জরিত মণিপুরে শান্তিপূর্ণভাবে লোকসভা নির্বাচন করানো ছিল একটা বড় চ্যালেঞ্জ নির্বাচন কমিশনের কাছে। কিন্তু তাতে ব্যর্থ হল তারা। প্রথম দফার নির্বাচনের দিন বিভিন্ন এলাকা থেকে উঠে আসে বিক্ষিপ্ত অশান্তির খবর, যার জেরে রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে পড়ে স্থানীয় বাসিন্দারা। এমনকি বেশকিছু জায়গায় ভোট অবধি বয়কট করে দেওয়া হয়।
কিন্তু এবার একটি বড় সিদ্ধান্ত নিল নির্বাচন কমিশন। কি সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো তাদের তরফ থেকে? দাঙ্গায় জর্জরিত রাজ্যে এবার পুনর্নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিল তারা। জানা গিয়েছে যে সোমবার, অর্থাৎ ২২শে এপ্রিল, মোট ১১টি বুথে পুনর্নির্বাচন হবে। তবে বলে রাখা ভালো যে সেই ১১টি বুথই কিন্তু পড়ে ইনার মণিপুর লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে।
শুক্রবার, অর্থাৎ ১৯শে এপ্রিল, শুরু হয় প্রথম দফার লোকসভা নির্বাচন। প্রতিটি রাজ্যের নাগরিক বুথে বুথে ভিড় জমায় নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে। কয়েকটি জায়গায় অশান্তি হয় ঠিকই, কিন্তু সবমিলিয়ে প্রথম দফার লোকসভা নির্বাচন হয় শান্তিপূর্ণভাবেই। এমনকি দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও নিজের এক্স হ্যান্ডেল থেকে একটি টুইটের মাধ্যমে তা দাবি করেন।
কিন্তু এদিন সকলের নজর কেড়েছে গেরুয়া শিবির শাসিত মনিপুর। দাঙ্গায় জর্জরিত এই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উঠে আসে হিংসার খবর। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার যে অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনীর সত্ত্বেও হিংসা রোখা সম্ভব হয়নি। বেশ কয়েকটি বুথে হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। এমনকি ভয় ও অশান্তি এড়াতে বেশ কয়েকটি জায়গায় ভোট বয়কট করার সিদ্ধান্ত অবধি নেওয়া হয়েছে স্থানীয়দের তরফ থেকে। এছাড়া কয়েকটি বুথে ভোটগ্রহণ স্থগিত করে দেওয়া হয় কমিশনের পক্ষ থেকে।
কিন্তু গণতন্ত্র রক্ষার স্বার্থে সেই বুথগুলিতে পুননির্বাচনের নির্দেশ দিল কমিশন। এই প্রসঙ্গে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক বলেন, “কমিশনের তরফ থেকে পুননির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সোমবার ২২সে এপ্রিল, পুননির্বাচনের তারিখ হিসেবে ঠিক করা হয়েছে। ভোটগ্রহণ করা হবে মোট ১১টি বুথে।” বলে রাখা ভালো যে এর মধ্যে রয়েছে পূর্ব ইম্ফলের ২টি এবং পশ্চিম ইম্ফলের ৩টি বুথ। এবার দেখার বিষয় যে শেষ পর্যন্ত সোমবার শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন করানো সম্ভব হয় কিনা। সব উত্তর পাওয়া যাবে রাত পোহালেই।
“জবাব দিতে হবে মোদি বাবুকে”: বালুরঘাটের সভা থেকে আক্রমণ মমতার
চলতি লোকসভা নির্বাচনের প্রচার পর্বে এবার বালুরঘাটে পা রাখলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এপ্রিল মাসের ২৬ তারিখে রয়েছে দ্বিতীয় দফার নির্বাচন এবং তার আগেই সেখানে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী বিপ্লব মিত্রের হয়ে প্রচারে যান তিনি। এদিন দলীয় কর্মী-সমর্থকদের সামনে একের পর এক ইস্যুকে হাতিয়ার করে বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দাগেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এটা কিন্তু আমাদের রাজ্যের নির্বাচন নয়। এটা গোটা দেশের নির্বাচন। তাই মোদি বাবুকে সব প্রশ্নের জবাব দিতে হবে। জবাব চাই, জবাব দাও। যদি ব্যাপারটা পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনের হতো, তাহলে আমি হাজারবার কৈফিয়ত দিতাম। কিন্তু এবার তোমরা জবাব দাও গদ্দাররা। আজ অবধি কোন কাজটা করেছ তোমরা? ১০০ দিনের কাজের টাকা, আবাস যোজনা সবকিছুই বন্ধ করেছ তোমরা। আজ সারা দেশ বিক্রি করে দিয়েছো। ওরা বলেছিল যে সকলকে ১৫ লক্ষ টাকা করে দেবে। কিন্তু আজ অবধি কি আপনারা কেউ সেই টাকা পেয়েছেন?
এরপর দূরদর্শনের গৈরিকীকরণ ও এনআরসি-সিএএ নিয়ে মুখ খোলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “দূরদর্শন দেখেছেন? উনি নিজেই মন কি বাত বলেন আর নিজেই শোনেন। কাউকে কিছু বলতে দেন না। আজ পর্যন্ত ওনাকে কোন প্রেস মিট করতে দেখিনি। ওরা যা পারে সাজিয়ে সমাজ মাধ্যমে দিয়ে দেয়। দূরদর্শন, রেল স্টেশন, এমনকি আমাদের সকলের প্রিয় সেনাবাহিনীদের বাড়ির রং গেরুয়া হচ্ছে কি করে? আমি সাধুদের অপমান করছিনা। এমনকি কাশিতেও পুলিশকে গেরুয়া পরিয়ে দিয়েছে। ওরা নাকি বলে আমি কে এনআরসি না করতে দেওয়ার। আমি বলেছি করতে দেবোনা। অসমে ওরা করেছিল, কিন্তু সেখানে একমাত্র প্রতিবাদ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।”
প্রসঙ্গত, চলতি লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে এসে বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে একাধিক ইসুকে হাতিয়ার করে সুর চরিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সহ একাধিক বিজেপি নেতারা। যদিও কটাক্ষ করতে বাদ যায়নি তৃণমূলও। একদিকে গেরুয়া শিবির দাবি করেছে যে এবারে তারা রেকর্ড আসনে জিতবে। আবার অন্যদিকে তৃণমূল সহ বাকি বিরোধীরা দাবি করেছে যে এবারে ২০০ আসনের গণ্ডিও ছুঁতে পারবেনা বিজেপি। এবার দেখার বিষয় যে শেষ পর্যন্ত বাজি কে জেতে। তৃণমূল নাকি বিজেপি? সব উত্তর পাওয়া যাবে আর কিছুদিনের মধ্যে।
‘আজ সারাদিন’ আজ এই পর্যন্তই। আগামীকাল আমরা ফের আপনাদের কাছে ফিরে আসবো দিনের সব নজরকাড়া খবর নিয়ে। ধন্যবাদ। শুভরাত্রি।