নিউজ ডেস্ক: প্রিয় পাঠক দিনের শেষে বঙ্গ-ভারতী নিউজের তরফ থেকে আপনাদের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে দিনের গুরুত্বপূর্ণ সব খবর। আজকের থিম সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ। কি ঘটলো ‘আজ সারাদিন’? দেখে নিন একনজরে এবং জেনে নিন বিস্তারিতভাবে।
চলতি আইপিএলে দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ। ব্যাটিং হোক কি বোলিং হোক কি ফিল্ডিং, সব বিভাগই কাজ করছে দারুন ছন্দে। প্রায় অধিকাংশ ম্যাচেই ব্যাটারদের ব্যাট থেকে উঠে এসেছে মারকুটে ইনিংস। অন্যদিকে, বোলাররাও রান আটকাতে সফল হয়েছে। সবমিলিয়ে, এই মুহূর্তে টুর্নামেন্টে নিজেদের দাপট বজায় রেখেছে প্যাট কামিন্স সহ গোটা কমলা বাহিনীর।
একইভাবে বুধবার, অর্থাৎ ৮ই মে, সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ চলতি আইপিএলে নিজেদের দাপট দেখিয়েছে কেএল রাহুলের লখনৌ সুপার জায়েন্টসের বিরুদ্ধে। একেবারে চোখের নিমেষে তারা গুঁড়িয়ে দিয়েছে লখনৌকে। প্রথমে ব্যাট করে লখনৌর দেওয়া ১৬৬ রানের লক্ষ্যমাত্রা, তারা তুলে দিয়েছে ১০ ওভারের মধ্যে। পুরো ১০ ওভারও খেলতে হয়নি। দুই বল বাকি থাকতেই শেষ করে দিয়েছে গোটা ম্যাচ। তাও আবার ১০ উইকেটে। ট্রাভিস হেড অপরাজিত ছিলেন ৮৯ রানে এবং অভিষেক শর্মা ৭৫ রানে। ম্যাচের সেরা ঘোষণা করা হয় ট্রাভিস হেডকে।
ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ট্রাভিস হেড বলেন, “আজকের ম্যাচে আমরা প্রচুর আনন্দ করেছি। ১০ ওভারের মধ্যে টার্গেট পূরণ করতে পারার অনুভূতিটাই আলাদা। বেশ ভালই লাগছে বলতে গেলে। যদিও এটা প্রথমবার নয়, এর আগে আমি আর অভি বহুবার এমন ইনিংস একসাথে খেলেছি। আমাদের মনোযোগ ছিল ঠিক জায়গায় দাঁড়ানোর উপর এবং বলটিকে আমরা ভালো করে লক্ষ্য করছিলাম। আমাদের প্রধান লক্ষ্য ছিল পাওয়ারপ্লের সদ্ব্যবহার করা এবং যতটা সম্ভব তাতে রান করা।”
এরপরই হেডকে প্রশ্ন করা হয় স্পিনের বিরুদ্ধে আক্রমণ সম্পর্কে। সেই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “এটা এমন একটি বিভাগ যেটার উপর আমি এখনো কাজ করে চলেছি। আমি মনে করি যে যখন আমরা ক্যারিবিয়ান মাঠগুলিতে খেলতে নামবো, তখন স্পিন একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আমি এটাও মনে করি যে বর্তমান প্রজন্মের ক্রিকেটে ৩৬০ ডিগ্রী খেলা উচিত। গত ১ বছর ধরে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল আমার থেকে আগ্রাসি ক্রিকেট দেখতে চেয়েছিল এবং ওরা এটাও চেয়েছিল যে আইপিএলেও আমি একই জিনিস করে দেখাই এবং সেটাই আমি করে চলেছি। এছাড়া কোন কিছু পাল্টায়নি।”
এরপরই তাঁকে প্রশ্ন করা হয় অভিষেক শর্মা প্রসঙ্গে। সেই প্রশ্নের উত্তরে হেড বলেন, “অভিষেক একজন দুর্দান্ত ক্রিকেটার। আমি খুব ভালো করেই জানি যে ও কতটা পরিশ্রম করে। এছাড়া ওর একটা ভালো গুন যে ও খুব গভীর চিন্তা করতে পারে। স্পিনের বিরুদ্ধে ও দারুন ব্যাটিং করে। আমরা একে অপরকে সবসময় সাহায্য করি যখন আমাদের দলের ব্যাটিং চলে। শেষ দুটো ম্যাচে ও কিছু করে দেখানোর সুযোগ পায়নি। তবে ওকে আজ ছন্দে ফিরতে দেখে এবং খোলা মনে ব্যাট করতে দেখে দারুণ লাগছিল।”
শেষে অজি তারকাকে প্রশ্ন করা হয় ‘নেট রান রেট’ প্রসঙ্গে। সেই প্রশ্নের উত্তরে হেড বলেন, “আমরা টাইমআউটের আগে পর্যন্ত ওটা নিয়ে কিছু ভাবিনি। কিন্তু তারপর হঠাৎ ছেলেরা আসে এবং আমাদের বলে যে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ম্যাচটা যেন আমরা শেষ করে ফেলি। এছাড়া এখানকার দর্শকও দুর্দান্ত। পরপর দুটি ম্যাচ হারার পর আমরা যা চেয়েছিলাম, তা পেয়েছি। নিজের প্রথম মরশুমে হায়দ্রাবাদের হয়ে ডেভিড ওয়ার্নার যতো রান করেছিল, তার চেয়ে আমি বেশি করেছি এটা ভেবেই আমার খুব ভালো লাগছে। আগামী ম্যাচের জন্য আমরা প্রস্তুত এবং আমরা যখন নামবো, ঠিক প্রথম থেকেই শুরু করবো।”
অন্যদিকে, ম্যাচ শেষে সাক্ষাৎকার দেন অভিষেক শর্মাও এবং মুখ খোলেন নিজের ইনিংস প্রসঙ্গে। তিনি বলেন, “আমি জীবনে কোনদিনও ভাবতে পারিনি যে এতো বড় একটা টুর্নামেন্ট খেলার সুযোগ পাবো আর তাও আবার আমার স্ট্রাইক রেট এমন থাকবে। এর জন্য আমি পুরোপুরি ধন্যবাদ জানাতে চাই টিম ম্যানেজমেন্টকে। আমাকে ওরা একটাই বার্তা দিয়েছিল যে আমি যেন নিজের খেলাটা খেলি আর আমি সেটাই করেছি।”
এরপরই অভিষেক প্রশংসা করেন ট্রাভিস হেডের। সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি মনে করি পুরো ক্রেডিটটা ওকে দেওয়া উচিত। যেভাবেও শুরু থেকে বোলারদের আক্রমণ করতে থাকে, সেটা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। ওর এটা করার জন্য একটা বড় সুবিধা হয় যে আমার উপর চাপটা অনেকটাই কমে যায়। ইনিংস ব্রেকের সময় বোলাররা বলে যে এটা ধীরে ধীরে ভালো হচ্ছে। কিন্তু আমার আর ট্রাভিসের মনে হচ্ছিল যেন এটা বেশি করছিলোনা।”
শেষে তরুণ ক্রিকেটার ধন্যবাদ জানান যুবরাজ সিং, ব্রায়ান লারা ও নিজের পিতাকে। অভিষেক শর্মা বলেন, “আমার মনে হয় যে টুর্নামেন্ট শুরুর আগে যে কঠিন পরিশ্রম আমি করেছি, তার ফল আমি পাচ্ছি আজকে এবং এর জন্য আমি যূবি পাজি, ব্রায়েন ও নিজে প্রথম কোচ, অর্থাৎ আমার বাবাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।”
‘আজ সারাদিন’ আজ এই পর্যন্তই। আগামীকাল আমরা ফের আপনাদের কাছে ফিরে আসবো দিনের সব নজরকাড়া খবর নিয়ে। ধন্যবাদ। শুভরাত্রি।