নিউজ ডেস্ক: প্রিয় পাঠক দিনের শেষে বঙ্গ-ভারতী নিউজের তরফ থেকে আপনাদের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে দিনের গুরুত্বপূর্ণ সব খবর। রাজ্য থেকে দেশ, কি ঘটলো ‘আজ সারাদিন’? দেখে নিন একনজরে এবং জেনে নিন বিস্তারিতভাবে।
কুলটির সভা থেকে একাধিক ইস্যু নিয়ে বিজেপিকে আক্রমণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের
শনিবার কুলটিতে আসানসোলের তৃণমূল প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহার হয়ে লোকসভা ভোটের প্রচারে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিক ইস্যু নিয়ে কটাক্ষ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সহ গোটা ভারতীয় জনতা পার্টিকে। এদিন তিনি বলেন যে গতবারের মতো এবারও অর্থের জোরে ভোট জেতার চেষ্টা করবে বিজেপি। এখানেই শেষ নয়, উপস্থিত সকল দলীয় কর্মী ও সমর্থকদের তিনি আরো জানান যে টাকা দিতে এলেই ১৫ লক্ষ টাকা চাইবেন।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “শুনলাম নাকি আগেরবার বিজেপি প্রার্থী ভোট জিতেছিলেন টাকার জোরে। যদি ভুল না হই, তাহলে এবারও ওরা টাকা দেওয়ার চেষ্টা করবে। তবে যদি ওরা এই একই কাজ আবার করে তাহলে আপনারা সোজাসুজি ওদের থেকে ১৫ লক্ষ টাকা চাইবেন। ইতিমধ্যেই, আমরা অনেক বাড়ি বানিয়ে ফেলেছি এবং আগামীদিনে আরো বানাবো। ডিসেম্বর মাসের ৬০ হাজার টাকা দেব এবং এরপর আরো ৬০ হাজার টাকা পাবেন।”
এরপরই মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে মুখ খোলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিজেপি সরকার ওষুধের দাম বাড়িয়েছে। প্রেসারের ওষুধ থেকে শুরু করে সুগারের ওষুধ, সবকিছুরই দাম বাড়িয়েছে ওরা। কিন্তু একদিকে যেমন ওষুধের দাম বেড়েছে, তেমনি অন্যদিকে মোদির দাম কমেছে। আমি এখন থেকেই বলে দিচ্ছি এটা। মিলিয়ে নেবেন আপনারা। একবার শুধু ভোটটা শেষ হতে দিন, দেখবেন গ্যাসের দাম বেড়ে যাবে। আমরা যেটা বলেছি, সেটাই করেছি। আজ উন্নয়ন হয়েছে গোটা বাংলায়। কিন্তু বিজেপির যে প্রতিশ্রুতি দেয়, সেটা তারা পূরণ করেনা।”
এদিন মঞ্চ থেকে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদীর পদত্যাগের দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উন্নয়নের হিসাব তুলে ধরে তিনি বলেন, “গতকাল প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে তৃণমূল কংগ্রেসের জন্য উন্নয়ন আটকে গেছে বাংলায়। কিন্তু একবার ভারতের জিডিপি এবং এখানকার দেখুন। সারা ভারতবর্ষে যেটা ৮.৮৭ শতাংশ, পশ্চিমবঙ্গে সেটা ১১.৮৪ শতাংশ। এসব বলার আগে আপনি পদত্যাগ করুন। তারপর এগুলি বলবেন।”
এছাড়াও ফের চাকরিহারাদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন তৃণমূল সুপ্রিমো। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “চাকরি তো দেওয়ার ক্ষমতা ওদের একটুও নেই, কিন্তু ওরা চাকরি কেড়ে নেয়। কিন্তু আমি কথা দিলাম যে যাদের চাকরি চলে গিয়েছে, তাদের পাশে আমি দাঁড়াবো। আমাদের সরকার তাদের পাশে সর্বদা রয়েছে।”
“আপনারা কি পুরো সিনেমাটা দেখতে চান?” দুবরাজপুর থেকে রাজ্যবাসীকে প্রশ্ন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের
শনিবার দুবরাজপুরে বীরভূমের তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দি রায়ের হয়ে লোকসভা ভোটের প্রচারে এসে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিক ইস্যু নিয়ে কটাক্ষ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সহ গোটা ভারতীয় জনতা পার্টিকে। এদিন তিনি উপস্থিত সকল দলীয় কর্মী ও সমর্থকদের প্রশ্ন করেন যে গত ১০ বছরে উন্নতি সরকার যে ট্রেলার দেখিয়েছেন, এরপরেও কি সাধারণ মানুষ পুরো সিনেমাটি দেখতে চান। এখানেই শেষ নয়, তিনি প্রতিটি দ্রব্যের মূল্য কিভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে সেটিও বোঝান।
এদিন মঞ্চ থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলে গেছেন যে গত দশ বছরের বিজেপি শুধুমাত্র ট্রেলার দেখিয়েছে এবং আগামীদিনে নাকি পুরো সিনেমাটাই দেখাবে। তা গত ১০ বছরের ট্রেলারে কি দেখেছেন? রান্নার গ্যাস হাজার টাকা, ডিজেল ৯২ টাকা, পেট্রল ১০০ টাকা, ১৭ টাকার কেরোসিন ৭৫ টাকা, ডাল ১৬০ টাকা, তেল ২০০ টাকা। এবার আপনারাই বলুন যে এই সবকিছুর পরও কি আপনারা পুরো সিনেমাটা দেখতে চান?”
এরপর ঘাসফুল শিবিরের সেনাপতি বোঝান যে কি করে কোন মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেওয়া টাকা ও চাকরি কেড়ে নিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “লক্ষীর ভান্ডারে হাজার টাকা করে দিচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু নরেন্দ্র মোদি সেই টাকা আপনাদের থেকে নিয়ে নিচ্ছেন আধার কার্ড ও প্যান কার্ড লিঙ্ক করার নামে। ২৬ হাজার ছেলেমেয়ের চাকরি বাতিল করে দিয়েছে ওরা। মেনে নিচ্ছি তর্কের খাতিরে যে কিছু লোক দুর্নীতি করেছে। কিন্তু এটাও তো ঠিক যে ওই ২৬ হাজারের মধ্যে ৮০-৯০ শতাংশ মেধাবী ছিল। তাহলে আপনারা সকলে দেখুন যে কিভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেওয়া চাকরি নরেন্দ্র মোদী কেড়ে নিচ্ছে।”
এছাড়াও এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ির টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পাশাপাশি কটাক্ষ করেন গেরুয়া শিবিরের ইস্তেহারকেও। তিনি বলেন, “কেন্দ্র সরকার টাকা না দিলেও তৃণমূল কংগ্রেস আপনাদের সকলকে বাড়ির টাকা এই বছরের মধ্যেই দিয়ে দেবে। ৩১শে ডিসেম্বরের মধ্যে আপনারা টাকা পেয়ে যাবেন। বিজেপি নিজেদের ইস্তেহারে বলছে যে পাঁচ বছরে একবার ভোট দেওয়ার কথা। কিন্তু এরপর ওরা সংবিধান পাল্টে দিলে এটাই আপনাদের জীবনের শেষ ভোট হয়ে যাবে। তাই এতো জোরে এখানে বোতাম টিপুন, যাতে ভূমিকম্প দিল্লিতে হয়। ভোটটা এমন ভাবে দিন যাতে পদ্মফুল চোখে সর্ষেফুল দেখে। ১৩ই মে বিজেপিকে উৎপাত করতে হবে।”
‘আজ সারাদিন’ আজ এই পর্যন্তই। আগামীকাল আমরা ফের আপনাদের কাছে ফিরে আসবো দিনের সব নজরকাড়া খবর নিয়ে। ধন্যবাদ। শুভরাত্রি।