নিউজ ডেস্ক: প্রিয় পাঠক দিনের শেষে বঙ্গ-ভারতী নিউজের তরফ থেকে আপনাদের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে দিনের গুরুত্বপূর্ণ সব খবর। রাজ্য থেকে দেশ, কি ঘটলো ‘আজ সারাদিন’? দেখে নিন একনজরে এবং জেনে নিন বিস্তারিতভাবে।
“বাংলায় শীর্ষে থাকবে বিজেপি”: নির্বাচন নিয়ে ভবিষ্যদানি ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের
সামনেই লোকসভা নির্বাচন আর তার আগে জোরদার প্রচার শুরু করে দিয়েছে সমস্ত রাজনৈতিক দল। জয়কে পাখির চোখ করে সকলেই নেমে পড়েছে ময়দানে। নিজেদের প্রকল্পের পাশাপাশি বিরোধীদের দুর্নীতিকেও হাতিয়ার করছে সকলে। এছাড়াও মাঝেমধ্যেই রাজ্যগুলিতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজের দলের প্রার্থীর প্রচারের সঙ্গে কর্মী ও সমর্থকদের মনবল চাঙ্গা করতে। সবমিলিয়ে, দিন যত এগিয়ে আসছে ততই গোটা ভারতবর্ষের উন্মাদনা পৌঁছে যাচ্ছে তুঙ্গে।
কিন্তু এই সবকিছুর মাঝে একটি বিস্ফোরক ভবিষ্যদানি করে বসলেন বিশিষ্ট ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর। কি বললেন তিনি? বাংলায় নির্বাচনের ফলাফল কি হতে পারে তা আগামী জানিয়ে দিলেন পিকে। এখানেই শেষ নয়, তিনি আরো জানিয়ে দিলেন যে কোন দল শীর্ষে থাকবে। তাঁর বক্তব্য যে এবারের নির্বাচনে রাজ্যে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ে ভালো ফল করবে প্রধান বিরোধীদল ভারতীয় জনতা পার্টি। পাশাপাশি এটাও স্পষ্ট করে দিলেন যে সর্বোচ্চ ভোট এবার যাবে গেরুয়া শিবিরের ঝুলিতেই।
এক সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থার সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর বলেন, “দেখুন পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে আমি তেমন কিছু ভবিষ্যদানি করতে চাইনা। তবে একটা কথা বলতে পারি যে এবারের নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ে ভালো ফল করবে বিজেপি।” এরপরই তিনি বলেন, “এটা বলতে পারি যে এবারের ফলে একটি বিশেষ চমক দেখতে পারেন। পরিস্থিতি এই মুহূর্তে যেখানে এসে দাঁড়িয়েছে তাতে আমার মনে হচ্ছে যে বাংলায় শীর্ষস্থানে থাকবে বিজেপিই। সবচেয়ে বেশি ভোট যাবে ওদের কাছেই। অন্যদিকে, ওড়িশার ক্ষেত্রেও সবার উপরে থাকার একটা বড় সুযোগ রয়েছে বিজেপির। এছাড়া তেলেঙ্গানায় ঠিক কি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তাতে আমি এটা বলতে পারি যে শীর্ষস্থানে না হোক অন্তত দ্বিতীয় হবে বিজেপি।”
প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে ৪২জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়ে গেছে। অন্যদিকে, অল্প সংখ্যক প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা বাকি রয়েছে গেরুয়া শিবিরের তরফ থেকে। শাসকদলের দাবি যে এবারের লোকসভা নির্বাচনে ঘাসফুল শিবিরের ৩০ থেকে ৩৫টি আসনে জয় নিশ্চিত। অন্যদিকে, একই কথা শোনা গেছে বঙ্গ বিজেপির মুখেও। পদ্ম শিবিরের তরফ থেকেও দাবি করা হয়েছে যে এবার অধিকাংশ আসন যাবে তাদের ঝুলিতেই। এবার দেখার বিষয় যে শেষ পর্যন্ত কে জেতে।
অরবিন্দ কেজরিওয়ালের অনুপস্থিতিতে নির্বাচনী স্লোগান প্রকাশ করা হয় আপের তরফে
দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন, তথা লোকসভা নির্বাচনের দামামা বাজতেই আবগারি দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার হয় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী, তথা আম আদমি পার্টি সুপ্রিমো, অরবিন্দ কেজরিওয়াল। এরপরই পাল্টে যায় গোটা দিল্লির হাওয়া। রাজ্য পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়ে দলের নেতা সহ কর্মী ও সমর্থকেরা। অন্যদিকে, বিভিন্ন বিজেপি বিরোধী দলগুলিও এই গ্রেপ্তারের নিন্দা করে। এমনকি ইন্ডিয়া জোটের তরফ থেকেও রাজধানীর রামলীলা ময়দানে একটি সবার আয়োজন করা হয় এবং সেখানে আওয়াজ ওঠানো হয় এজেন্সিরাজের বিরুদ্ধে।
কিন্তু অবশেষে এবার একটি বড় পদক্ষেপ নিলো আপ। কি সেই পদক্ষেপ? একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই প্রথমবার অরবিন্দ কেজরিওয়ালের অনুপস্থিতিতে নির্বাচনী স্লোগান প্রকাশ করা হয় দলের তরফ থেকে। নাম দেওয়া হয়েছে ‘জেলের জবাব ভোটবাক্সে’। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সদ্য জামিন পাওয়া সাংসদ সঞ্জয় সিং সহ অন্যান্য নেতা ও মন্ত্রীরা। যদিও দলের তরফ থেকে এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানানো হয়েছে যে ঠিক কি কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিন সঞ্জয় সিং বলেন, “বিজেপিকে ৪৫০ কোটি টাকা চাঁদা দিয়েছে এমন ৩৩টি কোম্পানি যাদের গত ৭ বছরে ১ লক্ষ কোটির লোকসান হয়েছে। এদের মধ্যে সরকারকে আয়কর দেয়নি অথবা কর মুকুব করা হয়েছে ১৭টি কোম্পানির। এছাড়া ৬টি সংস্থা ৬০০ কোটি টাকা চাঁদা দিয়েছে বিজেপিকে। এদের মধ্যে এমন একজন রয়েছে যে মোট লাভেরও ৯৩ গুন বেশি চাঁদা বিজেপিকে দিয়েছে। তাছাড়া বিজেপিকে ২৮ কোটি টাকা চাঁদা দিয়েছে এমন তিনটি কোম্পানি যারা আয়করই দেয়নি।”
প্রসঙ্গত, সোমবার, অর্থাৎ ৮ই মার্চ, হেমন্ত সোরেন, অরবিন্দ কেজরিওয়ালদের গ্রেপ্তারির নিন্দা করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, “কেন গ্রেফতার করা হলো হেমন্ত সোরেনকে? ও তো একমাত্র আদিবাসী মুখ্যমন্ত্রী। এরপর গ্রেফতার করা হলো দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে। ওকেই বা কেন গ্রেফতার করা হলো? কিন্তু আমি আপনাদের বলে রাখি ওকে গ্রেফতার করা হলেও ওর কিছু যায় আসেনা। ও এমনিতেই শক্তিশালী ছিল, কিন্তু জেলে গিয়ে ও আরো আগের চেয়ে বেশি শক্তিশালী হয়েছে। তবে আপনারা এটা মনে রাখবেন কিন্তু যে এসব নেতাদের গ্রেফতার করা হলে, এদের স্ত্রীরা কিন্তু বিরোধিতা করবেই। কেউ কিন্তু কাউকে এই ব্যাপারে ছেড়ে কথা বলবেনা।”
‘আজ সারাদিন’ আজ এই পর্যন্তই। আগামীকাল আমরা ফের আপনাদের কাছে ফিরে আসবো দিনের সব নজরকাড়া খবর নিয়ে। ধন্যবাদ। শুভরাত্রি।