নিউজ ডেস্ক: প্রিয় পাঠক দিনের শেষে বঙ্গ-ভারতী নিউজের তরফ থেকে আপনাদের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে দিনের গুরুত্বপূর্ণ সব খবর। রাজ্য থেকে দেশ, কি ঘটলো ‘আজ সারাদিন’? দেখে নিন একনজরে এবং জেনে নিন বিস্তারিতভাবে।
“বাংলা সন্ত্রাসবাদীদের ডেরায় পরিণত হয়েছে” বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন অনুরাগ ঠাকুর
আর মাত্র তিনটে দিন! আর তারপরেই শুরু হবে দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন, তথা লোকসভা নির্বাচন। তারিখ ও দিনক্ষণ ঘোষণা হওয়ার সঙ্গেই গোটা ভারতবর্ষ থেকে উঠে আসছে ব্যস্ততার চিত্র। জনসভা থেকে পদযাত্রার জোয়ার চলছে প্রতিটি রাজ্যে। এছাড়া রয়েছে বিভিন্ন প্রকল্পের প্রতিশ্রুতি। সবমিলিয়ে, লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে সমগ্র ভারতবর্ষ পরিণত হয়েছে একটি রণক্ষেত্রে।
কিন্তু এমন আবহাওয়ায় বাংলার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের উপর আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে বঙ্গ বিজেপি। এদিন কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর দুর্নীতির অভিযোগ তুলে কটাক্ষ করেন ঘাসফুল শিবিরকে। তিনি দাবি করেন যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অধীনে গোটা রাজ্য একটি সুরক্ষিত ডেরা হয়ে গেছে সন্ত্রাসবাদীদের জন্য। এখানেই শেষ নয়, তিনি আরো জানান যে দুর্নীতির ক্ষেত্রে একটি আলাদা রেকর্ড গড়েছে বাংলা।
সোমবার, অর্থাৎ ১৫ই এপ্রিল, দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী রাজু বিস্তার হয়ে প্রচারে আসেন কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। বাগডোগরা বিমানবন্দরে পা রাখতেই তাঁকে ঘিরে ধরে সাংবাদিকরা। এরপর রাজ্য সরকার প্রসঙ্গে একাধিক প্রশ্ন করা হয় তাঁকে। সেই প্রশ্নের উত্তরে তিনি একাধিক দুর্নীতির উদাহরণ তুলে ধরেন। তবে শুধু তৃণমূল কংগ্রেসই নয়, এদিন তিনি হাত শিবিরকেও কটাক্ষ করেন।
কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর বলেন, “দেখুন অনেক উদাহরণ রয়েছে যে কিভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার তৃণমূল কংগ্রেসের আমলে গোটা রাজ্য সন্ত্রাসবাদীদের একটা ডেরায় পরিণত হয়েছে। তাছাড়া আপনারা তো সকলেই দেখেছেন যে তৃণমূল কংগ্রেসের অধীনে নারীরা একেবারেই সুরক্ষিত নয়। দুর্নীতির মামলায় একটা বড় রেকর্ড তৈরি করে ফেলেছে পশ্চিমবঙ্গ। ভারতবর্ষের যে কোন প্রান্তে সন্ত্রাসবাদীরা নাশকতা চালিয়ে আসলেও, পশ্চিমবঙ্গে ওরা ঠিক আশ্রয় পায়। ঠিক এমনই অবস্থা হয়েছে এখন বাংলার।”
এরপর কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর মুখে শোনা যায় বেঙ্গালুরু বিস্ফোরণ কান্ডের কথা। অনুরাগ ঠাকুর বলেন, “বিস্ফোরণ ঘটেছে বেঙ্গালুরুতে, কিন্তু তারা ঘাটি বানিয়ে ফেলেছে এই বাংলাতে। শুধু তাই নয়, সবচেয়ে বড় ব্যাপার যে তৃণমূল কংগ্রেস অপরাধীদের আড়াল করে। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার। ওরা তাদেরকেই সুরক্ষা দেয় যারা রাষ্ট্রদ্রোহী, অত্যাচারী ও দুর্নীতিবাজ। ওরাই একমাত্র সুরক্ষিত এই রাজ্যে। তৃণমূল নেতাদের ঘরে টাকার পাহাড় দেখা গেছে। অজস্র টাকা উদ্ধার হয়েছে। তবে এই রাজ্যের মানুষ আর এরকম অন্যায় মেনে নেবেনা। এবারে নির্বাচনে আপনারা দেখতে পাবেন যে বাংলার মানুষ উচিত শিক্ষা দেবে তৃণমূল কংগ্রেসকে। যা জবাব সব ব্যালটে পেয়ে যাবেন।”
“ওদের প্ররোচনায় পা দেবেন না” রামনবমী নিয়ে সকলকে সতর্ক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
লোকসভা নির্বাচনের দিন যতো এগিয়ে আসছে, ততোই একে অপরের উপর আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়াচ্ছে বাংলার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস ও প্রধান বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টি। প্রতিটি জনসভা থেকেই একে অপরের দুর্নীতির কথা তুলে ধরছে তারা। এখানেই শেষ নয়, এমনকি দুই দল এটাও দাবি করেছে যে এবার নির্বাচনে শীর্ষে থাকবে তাদের দলই।
কিন্তু এই সবকিছুর মাঝে এদিন রামনবমী নিয়ে বড় মন্তব্য করে বসলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী, তথা তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি স্পষ্ট জানান যে চলতি মাসের ১৭ তারিখ, অর্থাৎ রামনবমীর দিন বিজেপি দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করবে। এরপরই মুখ্যমন্ত্রী সকলকে অনুরোধ করেন যে গেরুয়া শিবিরের পাতা ফাঁদে কেউ যেন পা না দেন।
সোমবার, অর্থাৎ ১৫ই এপ্রিল, কোচবিহারের রাসমেলার মাঠে একটি জনসভা আয়োজন করা হয় তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে। সেখানে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের জন্য নির্বাচিত প্রার্থী জগদীশচন্দ্র বসুনিয়ার সমর্থনে প্রচারে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন দলীয় কর্মী ও সমর্থকদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। সভায় তৃণমূল সুপ্রিমো একাধিক ইস্যু নিয়ে আক্রমণ করে বিজেপিকে।
রামনবমীর উদ্দেশ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এখানকার যে বিজেপি প্রার্থী সে আসলে গুন্ডাদের মাফিয়া। ওরা কিন্তু আগেরবারের শীতলকুচির মতো আবার গুলি চালিয়ে দেবে। আপনাদের বলে রাখি ১৭ তারিখ ওদের অশান্তি করার দিন। ওদিন ওরা হিংসা ছড়াবে ও দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করবে। তাই আমি সকলকে অনুরোধ করবো যে ওরা যদি গালিগালাজ করে তবু আপনারা মাথা ঠান্ডা রাখবেন এবং আল্লাহকে প্রার্থনা করবেন। কোনরকমের কোন প্ররোচনায় আপনারা ভুলেও পা দেবেন না। মনে রাখবেন যে ওদের উদ্দেশ্য কিন্তু ভোট নয়। ওরা ভোট চায়না। ওরা চায় দাঙ্গা হোক।”
এছাড়াও এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে শোনা যায় এনআইএর কথাও। তৃণমূল সুপ্রিমো আরো বলেন, “নির্বাচন এলে ওরা যুদ্ধ লাগানোর চেষ্টা করবে কারণ ওরা চায় আপনাদের মনটা নির্বাচনের থেকে অন্যদিকে ঘুরে যাক। দাঙ্গা করানোর জন্য ওরা সবরকমের প্রস্তুতি নিয়ে নিয়েছে। ওরা চায় রামনবমীর দিন বড়ো দাঙ্গা লাগুক আর সেটা করতে পারলে ওরা এনআইএ ঢুকিয়ে দেবে যাতে ভোটটা না হয় আর এই ফাঁকে ছাপ্পাটাও মেরে দেবে ওরা। এটাই হলো ওদের আসল উদ্দেশ্য।”
‘আজ সারাদিন’ আজ এই পর্যন্তই। আগামীকাল আমরা ফের আপনাদের কাছে ফিরে আসবো দিনের সব নজরকাড়া খবর নিয়ে। ধন্যবাদ। শুভরাত্রি।