রামনবমী উপলক্ষে মোদি ও মমতা
নিউজ ডেস্ক: প্রিয় পাঠক দিনের শেষে বঙ্গ-ভারতী নিউজের তরফ থেকে আপনাদের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে দিনের গুরুত্বপূর্ণ সব খবর। রাজ্য থেকে দেশ, কি ঘটলো ‘আজ সারাদিন’? দেখে নিন একনজরে এবং জেনে নিন বিস্তারিতভাবে।
রামনবমী উপলক্ষে সকলকে শুভেচ্ছাবার্তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির
সম্প্রতি, রামনবমী নিয়ে বাকযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দেশের প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি। একদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন যে রামনবমীর দিন বিজেপি ছক কষে যে কি করে দাঙ্গা লাগানো যায়। আবার অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বল ঠেলে দেন তৃণমূলের কোর্টে। তিনি দাবি করেন যে তৃণমূলের তরফ থেকে সবরকম চেষ্টা করা হয়েছিল রামনবমী উদযাপন রোখার, কিন্তু শেষ অবধি তারা সফল হয়নি। সবমিলিয়ে, দুই প্রভাবশালী নেতার বাকযুদ্ধ হইচই ফেলে দেয় বাংলা সহ গোটা ভারতবর্ষে।
কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে অবশেষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নরেন্দ্র মোদি দুজনেই রাজ্য ও দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানালেন রামনবমী উপলক্ষে। রাজ্যবাসীর উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইটের মাধ্যমে শুভেচ্ছা ও প্রীতি জানান এবং আবেদন করেন যেন সকলে শান্তি বজায় রাখে। অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজের এক্স হ্যান্ডেল থেকে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বার্তা দেন উৎসব উপলক্ষে। তিনি জানান যে এই দিনটির জন্য অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা করেছিল। এখানেই শেষ নয়, তিনি আরো দাবি করেন যে বহু রামভক্ত নিজেদের জীবন অবধি দিয়ে দিয়েছে যাতে গোটা ভারতবর্ষ আজকের দিনটা দেখতে পারে বলে।
এদিন নিজের এক্স হ্যান্ডেল থেকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী, তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আজ রামনবমী। আজকের এই পবিত্র দিনে আমি আমার সকল রাজ্যবাসীকে জানাই প্রীতি, শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আমি আজ সকলের কাছে আবেদন করবো যেন আপনারা সকলেই আনন্দের সঙ্গে উৎসবটি পালন করুন এবং শান্তি বজায় রাখুন। আমি প্রার্থনা করি যেনো সকলের উন্নতি হয়।”
অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি লেখেন,”এই রামনবমী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ অযোধ্যায় প্রাণপ্রতিষ্ঠার পর এটা প্রথম রামনবমী। আজকের দিনটা গোটা ভারতবর্ষ চিরকাল মনে রাখবে। আজকের এই দিনটার জন্য সকলেই বছরের পর বছর অপেক্ষা করেছিল। বহু মানুষ নিজের জীবন অবধি দিয়ে দিয়েছে এই দিনটার জন্য। আশা করছি যে প্রভু শ্রীরামচন্দ্রের আশীর্বাদ আমাদের সকলের উপর পড়বে এবং আমাদের সকলকে রাস্তা দেখাবে এবং আমাদের মনে আশার আলো ও সাহস যোগাবে।”
“ভবিষ্যতে আমরাই ভারতকে পথ দেখাবো” শিলচর থেকে সাফ জানিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে বড় দাবি করে বসলেন তৃণমূল সুপ্রিমো, তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার অসমে গিয়ে তৃণমূল নেত্রী দাবি করেন যে গোটা ভারতবর্ষকে পথ দেখাবে একমাত্র ঘাসফুল শিবির। এখানেই শেষ নয় বাংলা প্রসঙ্গেও বড় মন্তব্য করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি দাবি করেন যে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির বিরুদ্ধে একমাত্র লড়াই করছে তাঁর দলই। পাশাপাশি, তিনি এটাও বলেন যে বাংলায় আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে সাহায্য করবে কংগ্রেস ও সিপিএম।
বুধবার, অর্থাৎ রামনবমীর দিন, অসমের শিলচরে একটি জনসভার আয়োজন করা হয় তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে। এদিন সেখানে প্রচারে উপস্থিত হন দলের প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঞ্চ থেকেই তিনি একাধিক ইস্যু নিয়ে বিজেপিকে আক্রমণ করেন। মুখ্যমন্ত্রী সাফ জানালেন যে ভবিষ্যতে গোটা ভারতবর্ষকে পথ দেখাবে তৃণমূল কংগ্রেস। এখানেই শেষ নয়, তিনি আরো বলেন যে ঘাসফুল শিবির ক্ষমতায় এলে এনআরসি-সিএএ ও অভিন্ন দেওয়ানি বিধি হতে দেবেন না।
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আপনাদের সকলের কাছে আমার অনুরোধ যে আপনারা এক হোন এবং জোট বাঁধুন। মনে রাখবেন যে জোট মানেই তৃণমূল কংগ্রেস। আমরাই আগামীদিনে ভারতবর্ষকে পথ দেখাবো। বাংলায় কিন্তু আমরা একাই লড়ছি বিজেপির বিরুদ্ধে। ওখানে না আছে সিপিএম না আছে কংগ্রেস। ওরা এবারে নির্বাচনে বিজেপিকে সাহায্য করবে। এই কথাটা মাথায় রাখবেন যে গোটা দেশে আমরাই ইন্ডিয়াকে নেতৃত্ব দেবো, যদি আপনাদের সমর্থন থাকে। আজ এই কথাটা আপনাদের আমি এখানে বলে গেলাম।”
এরপরই তৃণমূল সুপ্রিমোর মুখে শোনা যায় এনআরসি-সিএএর প্রসঙ্গ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বাঙালি হিন্দু হোক কি বাঙালি মুসলমান, এই দুই গোষ্ঠী এক হয়ে গেলেই ৭০ শতাংশ হয়ে যাবে। আমি চাই যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব আপনারা এক হোন। এবার আমাদের চারটি আসনে জেতান। আমি আপনাদের কথা দিলাম যে অসমের আগামী বিধানসভা নির্বাচনে আমরা সবকটি আসন থেকেই লড়বো এবং জিতে দেখাবো। আমরা জিতলে এনআরসি-সিএএ এগুলো কিছুই হবেনা। অভিন্ন দেওয়ানি বিধিও হবেনা। এগুলো সব তুলে দেবো আমরা। এখনো অনেক আছে যারা ডি ভোটার লিস্টে পড়ে। আমি সেই সকল ব্যক্তির ভবিষ্যৎ ঠিক করে দেবো, যারা নিজেদের ভবিষ্যৎ জানেন না। বিজেপি গোটা ভারতবর্ষকে একটা ডিটেনশন ক্যাম্পে পরিণত করেছে। দেশটাকে একটা আস্ত জেলখানা বানিয়ে দিয়েছে ওরা। এই সরকার দাঙ্গাবাজ, ভাঁওতাবাজ, লুটেরা ছাড়া আর কিছুইনা। তবে আমি আপনাদের বলে রাখছি যে এদের আর ভয় পেতে হবেনা। এদেরকে যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব দূর করুন।”
‘আজ সারাদিন’ আজ এই পর্যন্তই। আগামীকাল আমরা ফের আপনাদের কাছে ফিরে আসবো দিনের সব নজরকাড়া খবর নিয়ে। ধন্যবাদ। শুভরাত্রি।